সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

একটি বই ও একজন প্রকাশক

প্রকাশিত: ১২:৪৮ এএম, মে ১০, ২০১৭
একুশে সংবাদ : চৌধূরী শ্রীপূর্ণচন্দ্র দেববর্ম্মা তত্ত্বনিধি প্রণীত “চট্টগ্রামের ইতিহাস” বইটি প্রকাশের সুন্দর একটি গল্প রয়েছে। চৌধূরী শ্রীপূর্ণচন্দ্র দেববর্ম্মা তত্ত্বনিধি ১৯২০ সালে নিজ ব্যয়ে “চট্টগ্রামের ইতিহাস” বইটি প্রকাশ করেন। বইয়ের ভূমিকায় তিনি লিখেছিলেন, “আজকে হয়তো এই বইয়ের মূল্য কেউ তেমন অনুধাবন করতে পারবে না, তা আমি জানি। তবে আমি যে পরিশ্রম করে বইটি প্রকাশ করেছি, আমার পরিশ্রম বৃথা যাবে না। আজকে থেকে শত বছর পরে হলেও বইটি নিয়ে আলোচনা হবে। মানুষ পড়বে। আমার বই পাঠকনন্দিত হবে।” শ্রীপূর্ণচন্দ বাবুর সেই কথা বর্তমানের একজন প্রকাশকের হাত ধরে সফল হয়েছে। ১৯২০ সালে চট্টগ্রামের এক অজানা প্রকাশনাসংস্থা থেকে প্রকাশিত একটি বই ১০-২০ বছরেই হারিয়ে যাবে, সেটাই তো স্বাভাবিক। পূর্ণ বাবুর চতুর্থ প্রজন্মের কেউ এখন আর চট্টগ্রামে বসবাসও করে না। চট্টগ্রামের ইতিহাসের মূল্যবান গ্রন্থটি তাই হারিয়েই গিয়েছিল। দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যের অনুসন্ধানী এক প্রকাশক সেটিকে আবার বর্তমানের আলোয় নিয়ে এলেন। তাঁর নাম সিকদার আবুল বাশার। সিকদার আবুল বাশার এক লেখকের কাছে ২০০৬ সালে জানতে পান, চট্টগ্রামের একটি পুরানো ছেঁড়া পাণ্ডুলিপি লেখকের এক দুরসম্পর্কিত নাতির কাছে আছে, যিনি রাজশাহীতে অধ্যাপনা করেন। খবর পাওয়ার পর শ্রীপূর্ণচন্দর সেই নাতির খোঁজ নিতে নেমে গেলেন প্রকাশক বাশার। দীর্ঘ এক বছর চেষ্টার পর ২০০৭ সালে সফল হন তিনি। পাণ্ডুলিপি হাতে পাওয়ার এক মাসের মধ্যেই তা প্রকাশও করেন। এভাবে বিস্মৃতির অন্ধকারে হারিয়ে যাওয়া একটি ছেঁড়া পাণ্ডুলিপি চকচকে মলাটের নতুন বইয়ের রূপ পেল এক উদ্যমী সৃজনশীল প্রকাশকের চেষ্টায়। হারানো ইতিহাস ফিরে পেয়ে কিনতে কৃপণতা করেনি চট্টগ্রামবাসী। দুই বছরেই প্রথম মুদ্রণ শেষ। এখন তৃতীয় মুদ্রণ চলছে। প্রকাশক সিকদার আবুল বাশার এভাবেই আলীউর রহমান রচিত “ইতিহাস ঐতিহ্যে কর্ণফুলী” বইটিও প্রকাশ করেছেন। প্রকাশ করেছেন “রাঙ্গামাটির ইতিহাস ঐতিহ্য”, “রামুর ইতিহাস”, “চট্টগ্রামের ভাষা অভিধান”সহ ২০টির অধিক গ্রন্থ। প্রকাশনা একটি ব্যবসা। কিন্তু ব্যবসার বাইরেও যে একটি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যের ক্ষেত্রে অনিন্দ্য উদাহরণ সৃষ্টি করতে পারে, গতিধারা তার প্রমাণ। সিকদার আবুল বাশার প্রকাশনাজগতে নিজেকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। তাঁর প্রতিষ্ঠান থেকে প্রকাশিত ইতিহাস-ঐতিহ্যের বইয়ের ভাণ্ডার দেখলে যে কেউই বিমোহিত হবেন। তিনি দেশের ৬৪ জেলার ইতিহাস-ঐতিহ্যের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের জেলাভিত্তিক ইতিহাস প্রকাশ করে চলেছেন। চট্টগ্রাম আঞ্চলিক সাংস্কৃতিক একাডেমি ইতিহাসের হীরকসন্ধানী সিকদার আবুল বাশারকে ''চট্টগ্রাম আঞ্চলিক সাংস্কৃতিক একাডেমি পদক ১৪২৪'' প্রদান করছে। খুবই মহৎ উদ্যোগ। সিকদার আবুল বাশার ও চট্টগ্রাম আঞ্চলিক সাংস্কৃতিক একাডেমি - উভয়কেই অভিনন্দন। লেখক : প্রবন্ধকার ও নাট্যব্যক্তিত্ব একুশে সংবাদ // পপি // বিবা // ১০.০৫.১৭

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1