সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

ঢাকায় ভয়াবহ বায়ুদূষণ

প্রকাশিত: ০৩:৪৩ পিএম, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৭
একুশে সংবাদ : বাংলাদেশে শুধু বায়ুদূষণের কারণে বছরে লাখ লাখ মানুষ শ্বাসকষ্ট, হৃদরোগসহ নানা ধরনের কঠিন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এ ছাড়া পানিদূষণ, মাটিদূষণ, খাদ্যদূষণসহ অন্যান্য দূষণ তো আছেই। এসবের অনিবার্য পরিণতি হিসেবে ক্রমেই বড় হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বছরে কয়েক লাখ মানুষ মারা যায় বিভিন্ন দূষণজনিত কারণে। তার পরও কি আমাদের কিংবা আমাদের নীতিনির্ধারকদের ঘুম ভেঙেছে? ঘুম যে ভাঙেনি তার প্রমাণ পাওয়া যায় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গবেষণায়। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক দুটি সংস্থার যৌথ গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে বেশি দূষিত বায়ুর শহরগুলোর মধ্যে ঢাকার অবস্থান দুই নম্বরে। এক নম্বরে রয়েছে ভারতের দিল্লি। প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুধু বায়ুদূষণের কারণে বাংলাদেশে বছরে এক লাখ ২২ হাজারের বেশি মানুষ মারা যায়। বায়ুদূষণজনিত কারণে শিশুমৃত্যুর হারের দিক থেকেও বাংলাদেশ দুই নম্বরে। এক নম্বরে পাকিস্তান। এর আগে বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনেও বলা হয়েছিল, বায়ুদূষণজনিত কারণে শুধু ঢাকা মহানগরীতেই বছরে মারা যায় প্রায় ১১ হাজার মানুষ, অসুস্থ হয় কয়েক লাখ। তার পরও বায়ুদূষণ রোধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না কেন? বায়ুদূষণের প্রধান দুটি উপাদান হচ্ছে ধুলা ও ধোঁয়া। বর্তমানে ঢাকার বাতাসে ধুলার পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক গুণ বেশি। এর অন্যতম কারণ অবকাঠামো নির্মাণে কোনো নিয়ম-কানুন না মানা। ব্যক্তিগত ভবনই হোক কিংবা ফ্লাইওভার নির্মাণই হোক—সবখানেই চলে যথেচ্ছাচার। গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানিসহ বিভিন্ন পরিষেবা স্থাপন বা মেরামত কাজের অবস্থা আরো খারাপ। ইট, বালু, সিমেন্টের মতো দূষণকারী নির্মাণসামগ্রী পরিবহন ও সংরক্ষণের নির্দিষ্ট নিয়ম থাকলেও প্রায় কেউই তা মানে না। শুকনো মৌসুমে সড়কে নিয়মিত পানি ছিটানোর কথা থাকলেও তা করা হয় না। দিনের পর দিন রাস্তা খুঁড়ে রাখা হয়, তার ওপর দিয়েই চলে গাড়ি। গাড়ির চাকায় লেগে ধুলা উড়ে বাতাসে মিশে যায়। একইভাবে ধোঁয়ার উৎসও কম নয়। রাজধানী ঘিরেই রয়েছে অসংখ্য ইটভাটা। ধোঁয়া ঢুকছে শহরে। ফিটনেসহীন পুরনো গাড়ি সমানে ধোঁয়া উদিগরণ করছে। ধোঁয়ায় থাকছে নানা বিষাক্ত পদার্থ। নগরের ভেতরে দূষণকারী কলকারখানার সংখ্যাও কম নয়। নিয়ন্ত্রণ না থাকায় প্রতিদিনই বাড়ছে এমন কারখানার সংখ্যা। আছে গৃহস্থালি বর্জ্যের স্তূপ থেকে ছড়ানো দুর্গন্ধ ও দূষণ। অথচ দূষণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে সরকারের নানা রকম সংস্থা। তাদের কাজ কি শুধু আন্তর্জাতিক গবেষণার ফলাফল অস্বীকার করা? বায়ুদূষণ রোধ ও পরিবেশ উন্নয়নে তাদের কর্মকাণ্ড কোথায়? কয়েক বছর আগেও চীনের রাজধানী পেইচিং ছিল বায়ুদূষণের দিক থেকে সবচেয়ে খারাপ শহর। তাদের অব্যাহত চেষ্টার ফলে পেইচিংয়ের অবস্থার অনেকটাই পরিবর্তন হয়েছে এবং এক নম্বর থেকে চার নম্বরে নেমে গেছে। পেইচিংকে টপকে ঢাকা উঠে এসেছে দুই নম্বর অবস্থানে। এমন সর্বনাশা টপকে যাওয়ার কারণ কী, তা আমাদের ভেবে দেখতে হবে এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। আমরা আশা করি, পরিবহন, নির্মাণ ও খোঁড়াখুঁড়িতে নিয়ম মেনে চলার বিষয়টি দ্রুত নিশ্চিত করা হবে। একুশে সংবাদ // পপি // কাক // ২০.০২.১৭

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1