সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

পানি ব্যবস্থাপনায় বাফার স্টোন আবিস্কার করলেন তালা উপজেলা মৎস্য অফিসার

প্রকাশিত: ১২:২৭ পিএম, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৬
তালা (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি : মৎস্য চাষিরা মাছ চাষের ক্ষেত্রে নানা ধরণের সমস্যার মুখোমুখি হন। পানির পিএইচ নিয়ন্ত্রণে রাখা তার মধ্যে অন্যতম। যখন একটা জলাশয়ে মাছ চাষ হতে থাকে তখন বিভিন্ন কারণে পানির পিএইচ মাত্রা উঠানামা করে, নিরপেক্ষ থাকেনা। বিভিন্ন গবেষণার তথ্য থেকে জানা গেছে, পানি এসিডিক (পিএইচ মান ৬.০ মাত্রার নিচে) থাকলে সেই জলাশয়ের প্রাথমিক উৎপাদনশীলতা (উদ্ভিদ প্লাঙ্কটনের বৃদ্ধি) ব্যহত হয় এবং পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণও হ্রাস পায়। এই সমস্যা সমাধানের জন্য মৎস্য চাষি তার খামারে চুন বা জিওলাইট ব্যবহার করে থাকেন। কারণ চুন বা জিওলাইট তাৎক্ষণিকভাবে পিএইচের মান বাড়িয়ে দেয়, পানিকে ক্ষারীয় করে। কিন্তু সারা বছর কয়েকবার চুন বা জিওলাইট ব্যবহার করার প্রয়োজন পড়ে বিধায় চাষিকে বাড়তি খরচের সম্মুখিন হতে হয়। এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানকল্পে বাফার স্টোন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন, সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলা সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা, মো. হাদিউজ্জামান। বাফার স্টোনের উদ্ভাবক সিনিয়র মৎস্য অফিসার মো. হাদিউজ্জামান জানান, বাফার স্টোন প্রযুক্তির মাধ্যমে পানির পিএইচ নিরপেক্ষ (পিএইচ ৭.০) রাখা সম্ভব। সিমেন্ট বালি এবং কতিপয় রাসায়নিকের সংমিশ্রণে স্টোনটি তৈরী করা হয়। মিশ্রণগুলো বাফার স্টোন হিসেবে স্থায়ীরূপ লাভ করতে কমপক্ষে ৭ দিন সময় লাগে। সুসমভাবে তৈরী একটি বাফার স্টোন পানিতে ডুবিয়ে রাখলে তা পানিকে নিরপেক্ষ করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখে। পানি নিরপেক্ষ থাকলে তা পানিকে মধ্যম মাত্রার ক্ষারীয় (পিএইচ ৭.৫-৮.৫) করে তুলতে পারে। উদ্ভাবক বলেন, মধ্যম মাত্রার পিএইচ বজায় থাকলে পানির প্রাথমিক উৎপাদনশীলতা বাড়ে এবং পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেন কাঙ্খিত মাত্রায় (৫-৮ পিপিএম) বজায় থাকে। এমনকি সারের কার্যকারিতাও বৃদ্ধি পায়। তিনি বলেন, উদ্ভিদ প্লাঙ্কটনের বৃদ্ধি হলে মাছচাষীরা অধিক লাভবান হবে এজন্য পানির পিএইচ নিরপেক্ষ বা মধ্যম মাত্রার ক্ষারীয় রাখা প্রয়োজন। বাফার স্টোন প্রযুক্তি বিষয়ে মৎস্য অফিসার মো. হাদিউজ্জামান জানান, বাফার স্টোন একবার সুসমভাবে তৈরী করা গেলে তা বারবার এমনকি বছরের পর বছর ব্যবহার করা সম্ভব। এটা পানিকে নিরপেক্ষ বা মধ্যম মাত্রার ক্ষারীয় করে। এর কার্যকারিতা দীর্ঘদিন পর্যন্ত বজায় রাখা সম্ভব। পানির বাইরেও এর রাসায়নিক বৈশিষ্ট্যের হেরফের হয় না। ফলে এটা ইচ্ছামতো পানিতে ডুবিয়ে রাখা যায় আবার পানি থেকে উঠিয়ে রাখা যায়। বাফার স্টোন পানিতে থাকলে চাষির সেসময় চুন বা জিওলাইট ব্যবহারের প্রয়োজন পড়ে না। এক শতাংশ জলায়তন (যার পানির গভীরতা ৩ ফুট) এর পানির পিএইচ নিরপেক্ষ বা ক্ষারীয় রাখতে হলে চাষিকে বর্তমানে ৫০-৬০ টাকা বা ক্ষেত্র বিশেষে আরও বেশি খরচ করতে হয়। অন্যদিকে, একই কাজের জন্য তিন কেজি ওজনের একটি বাফার স্টোনই যথেষ্ট। যার খরচ পড়বে ৩৫-৪০ টাকা। আবার বাফার স্টোনের স্থায়ী গঠন প্রদান করা গেলে বারবার খরচের বিষয়টিও থাকবে না। তখন চুন বাবদ মৎস্য চাষির ব্যয়টা সাশ্রয় হবে। খামার পর্যায়ে এর প্রযুক্তির উপযোগীতা যাচাইয়ের জন্য অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়েছে এবং তা এখও অব্যাহত আছে- জানিয়ে উদ্ভাবক মো. হাদিউজ্জামান আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, অল্প পরিমাণ (৩০০ লিটার) পানিতে বাফর স্টোনের সফলতা পাওয়া গেছে। হয়তো সেদিন বেশি দূরে নয় যেদিন সকল মৎস্য চাষিরা এর সুফল পাবে। একুশে সংবাদ ডটকম//এমএ//২৬-০৯-২০১৬

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1