সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

মধুপুরের আনারসে সয়লাব পলাশবাড়ী ।

প্রকাশিত: ০১:৪৩ পিএম, আগস্ট ২১, ২০১৬
গাইবান্ধা প্রতিনিধি ঃ মধুপুরের আনারসে ছয়লাব গাইবান্ধার পলাশবড়ী উপজেলার হাট-বাজার। নৌপথ দিয়ে এসব আনারস আসছে গাইবান্ধার বালাসি ও ফুলছড়ির নৌঘাটে। এখান থেকে রিক্সাভ্যানে যাচ্ছে জেলা সদরসহ বিভিন্ন হাট বাজারে। ফলে হাত বাড়ালেই পাওয়া যাচ্ছে মধুপুরের আকর্ষণীয় আনারস। আনারস ব্যবসায়ী পলাশবাড়ী উপজেলার শিমুলতলা গ্রামের শাহাজান মিয়া জানান, টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার জলছত্রে প্রতি সপ্তাহে শক্রবার ও মঙ্গলবার আনারসের পাইকারী হাট বসে। এ হাটে ভোর থেকে বেচাকেনা শুরু হয় এবং দুপুর দেড়টার মধ্যে শেষ হয়। এ কারনে সেখানে একদিন আগে গিয়ে আবাসিকে থেকে পরের দিন সকালে বাজার থেকে আনারস কেনার পর তা নৌকায় করে যমুনা হয়ে ফুলছড়ি নৌঘাটে আনা হয়। উপজেলার নুনিয়াগাড়ী গ্রামের সুলতান আহম্মেদ ও তার পুত্র সজিব নামে আনারস ব্যবসায়ী জানান, অনেকেই আবার জেলা সদরের বালাসি ঘাটে নৌকা ভর্তি আনারস নামায়। নৌঘাট ও বালাসীতে প্রতি শনিবার ও বুধবার সকাল থেকে জেলার বিভিন্ন স্থানের খুচরা ব্যবসায়ীরা অপেক্ষায় থাকেন নৌকার আশায়। আর ওই একই দিনে পলাশবাড়ীতেও হাটের দিন হওয়ায় ব্যাবসায়ীদের অনেক সুবিধা হয়েছে। উপজেলার নুরপর গ্রামের খুচরা আনারস ব্যবসায়ী জাবেদ জানান, ঘাটে পৌঁছার পর হিসাব করে নৌকা থেকে তারা আনারস রিক্সা ভ্যানে তুলে গন্তব্য স্থানে নিয়ে আসে। তারা প্রতিটি আনারস ২৫ টাকা থেকে ৩০ টাকা পাইকারী দরে কিনছেন এবং ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করছেন ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। দ্বিগুন দামে বিক্রির কারন জানতে চাইলে তিনি বলেন, কেনার পর ২/৩ দিনের মধ্যে কাত্তি (বিক্রি) না হলে সেগুলে পচে যায়। তাছাড়া পরিবহন খরচ তো আছেই। সব মিলেই দাম একটু বেশি নিতে হচ্ছে। উপজেলার ভবনীপুর গ্রামের ফল ক্রেতা রিজেন্টু জানান,তার বাবা অসুস্থ্য, তাই পলাশবাড়ী উপজেলার কোমরপুর বাজার থেকে ১৩০ টাকা দিয়ে মধুপুরের একজোড়া আনারস কেনেন। বাড়িতে যাওয়ার পর একটি আনারস কেটে দেখতে পায়, তার মধ্যে সাদা । আনারসে স্বাদ পর্যন্ত নেই। অপর আনারসটিরও একই অবস্থা। গাজীপুরের এ্যাপেক্স গার্মেন্টসের সুপারভাইজার সদর উপজেলার খোলাহাটী ইউনিয়নের আনালেরতাড়ী গ্রামের মিজানুর রহমান একই মন্তব্য করেন। তিনি জানান, বুধবার গাজীপুর থেকে বাড়ীতে আসার সময় গাইবান্ধার পলাশবাড়ীর চৌমাথা থেকে ভাল দেখে দু’টি আনারস কিনে ছিলেন। কিন্তু বাড়ীতে এসে কেটে দেখেন এতে রস কম। খেয়ে দেখেন, স্বাদ নেই এবং পানসে পানসে (পানির মতো) লেগেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নব্বই দশকে কিছু বহুজাতিক কোম্পানি মধুপুর এলাকায় অমৌসুমে আনারসের ফলন আনার জন্য এক ধরণের হরমোন বাজারজাত করতে শুরু করে। হরমোন প্রয়োগ করে গাছের উপযুক্ত বয়স হওয়ার আগেই ফলন আনা সম্ভব হয়। হরমোন প্রয়োগ করে আগাম আসা আনারস আকারে ছোট হলেও অমৌসুমের হওয়ায় এবং সে আনারসের ভালো দাম পাওয়ায় অনেক কৃষক আনারস বাগানে হরমোন প্রয়োগ করতে শুরু করে।আবার, ইথিলিন নামে একটি হরমোন জাতীয় গ্যাসীয় পদার্থ কাঁচা অবস্থায় আনারসের উপর প্রয়োগের করলে চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে পেঁকে যায় এবং সুন্দর রঙ ধারণ করে। ফলে কৃষকরা রসালো হওয়ার আগেই হরমোন দিয়ে আনারস পাঁকিয়ে বাজারে বিক্রি করে ভালো দাম পেয়ে থাকে। একই সূত্রমতে, টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলা আনারসের জন্য বিখ্যাত। চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ৮ হাজার হেক্টর জমিতে আনারস চাষ করছেন কৃষকরা। কিন্তু আনারস সংরক্ষণের জন্য ওই এলাকায় কোন হিমাগার না থাকায় চাষিরা তাদের উৎপাদিত আনারসের জন্য সরাসরি ভোক্তাদের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু হরমোন দিয়ে পাঁকানো কাঁচা আনারস ভোক্তারা আকৃষ্ট হয়ে একবার কেনার পর দ্বিতীয়বার কিনতে আগ্রহী হয় না। কারণ হরমোন দিয়ে পাঁকানো আনারস বাইরে থেকে দেখতে খুব আর্কষণীয় হলেও কাটার পর দেখা যায় আনারসটি সাদা রসহীন। এভাবে হরমোন দিয়ে পাঁকানো আনারস কিনে প্রতারিত হয়ে ভোক্তারা মধুপুরের আনারসের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে।       একুশে সংবাদ ডটকম  //  এম  //  ২১.০৮.১৬

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1