সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

পিতা-মাতা হলেন সন্তানের প্রথম অভিভাবক, সন্তান লালন-পালনে অবহেলা নয়

প্রকাশিত: ১২:০৭ পিএম, জুলাই ২৭, ২০১৬
একুশে সংবাদ :মানবজীবনের প্রতিটি বিষয়ে ইসলামের দিকনির্দেশনা রয়েছে। সন্তানের প্রতি পিতা-মাতার কর্তব্যের ব্যাপারেও ইসলামের রয়েছে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা। পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের যেমন কর্তব্য আছে; তেমনি সন্তানের প্রতিও পিতা-মাতার কর্তব্য রয়েছে। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে আল্লাহর ইবাদত, তার সঙ্গে কাউকে অংশীদার না করার পাশাপাশি পিতা-মাতার প্রতি আনুগত্যের হুকুম করা হয়েছে। এতে বুঝা যায়, পিতা-মাতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করা, তাদের সেবা করা, আনুগত্য প্রদর্শন করা, তাদের বিপদে সাহায্য করা সন্তানের ওপর ওয়াজিব। মানুষ স্বাভাবিক অভ্যাস হিসেবে সন্তানের আনুগত্য কামনা করেন। তারা চান, সন্তান যেন তাদেরকে সম্মান করে, সুন্দর আচরণ করে। এই চাওয়াটা খুবই স্বাভাবিক। তবে সন্তান প্রতিপালনের ক্ষেত্রে পিতা-মাতার ভাবা উচিত, তারা সন্তানের অধিকার কতটুকু আদায় করেছেন। সন্তানের যাবতীয় অধিকার যথাযথভাবে আদায় না করে সন্তানের কাছ থেকে ভালো কিছু চাওয়া বোকামি। ‍সন্তান প্রতিপালনে বর্তমানে অধিকাংশ বাবা-মায়ের ক্ষেত্রে চরম উদাসীনতা লক্ষ্য করা যায়- যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। পিতা-মাতা যদি সন্তানকে ভদ্রতা দেখান, তার সঙ্গে সুন্দর আচরণ করেন, তাদের যথাযথ দেখাশোনা করেন, তবে সন্তানের কাছ থেকে পরবর্তীতে এসব আশা করতে পারেন; অন্যথায় নয়। পিতা-মাতা হলেন সন্তানের প্রথম অভিভাবক, প্রথম শিক্ষক। আর পরিবার তার প্রথম বিদ্যালয়। এ বিদ্যালয় থেকে সে যা শিখবে, সেটার ওপর নির্ভর করবে তার ভবিষ্যত সুন্দর হওয়া না হওয়া। তাই এক্ষেত্রে পিতা-মাতাকে সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখতে হবে। পিতা-মাতার অবহেলায় অধিকাংশ সন্তান অকালে ঝরে পড়ে। অংকুরেই বিনষ্ট হয়ে যায় তাদের জীবনবৃক্ষ। সন্তানের সুন্দর জীবন গঠনে তাই মা-বাবার সচেতনতা ও আন্তরিকতার বিকল্প নেই। সন্তানের প্রতি পিতা-মাতার কর্তব্য ও দায়িত্বের ব্যাপারে কোরআন-হাদিসে অনেক নির্দেশনা এসেছে। সন্তানের প্রতি পিতার কয়েকটি মৌলিক দায়িত্ব রয়েছে। সেগুলো হলো- ১. সন্তানকে একজন দ্বীনদার, আদর্শ মা উপহার দেওয়া। ২. জন্মের সপ্তম দিনে তার মাথার চুল মুণ্ডিয়ে ফেলা। ৩. সপ্তম দিনে সন্তানের সুন্দর, অর্থবহ ইসলামি নাম রাখা। ৪. সন্তানকে ইসলাম ধর্মের মৌলিক জ্ঞান প্রদান করা। ৫. বিয়ের বয়স হলে উপযুক্ত তার বিয়ের ব্যবস্থা করা। এক্ষেত্রে অনেক পিতা-মাতার অসতর্কতা ও অবহেলা লক্ষ করা যায়। অনেকে সম্পত্তির লোভে নিজের সন্তানে অযোগ্য পাত্রে বিয়ে দেন। এতে করে সারাজীবন ওই সন্তানকে দুঃখের সাগরে ভাসতে হয়। সুখের সংসার জাহান্নামে পরিণত হয়। আবার অনেকে পরিণত বয়স হওয়ার পরেও সন্তানের বিয়ের প্রতি মনোযোগী হন না। যার কারণে সমাজে ইভটিজিং, ধর্ষণ, নারী নির্যাতন ব্যাপক হারে বাড়ছে। এক্ষেত্রে সবার সতর্কতা কাম্য। এ ছাড়া সন্তানের আকিকার কথাও বলা হয়েছে। তবে সেটা মৌলিক দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না। পিতার সামর্থ্য থাকলে সন্তানের আকিকা দেওয়া উত্তম। এতে সন্তান সুস্থ, নিরাপদ ও রোগবালাই থেকে মুক্ত থাকে। সন্তানের বয়স সাত বছর হলে তাকে নামাজের আদেশ করতে হবে। দশ বছর হওয়ার পরও নামাজ না পড়লে তাকে শাস্তি দেওয়া যাবে। এটা আল্লাহ-রাসূলের নির্দেশ। সন্তানের উত্তম চরিত্র গঠনে নামাজের ভূমিকা অপরিসীম। সন্তানকে সুশিক্ষিত করে গড়ে তোলা পিতা-মাতার অন্যতম কর্তব্য। তাকে আদর্শ নাগরিক গঠনে পিতা-মাতার সর্বাগ্রে এগিয়ে আসা উচিত। ইসলামের মৌলিক জ্ঞানটুকু সন্তানকে অবশ্যই শিক্ষা দিতে হবে। নিজেরা না পারলে অন্যের মাধ্যমে সন্তানের প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, পিতা-মাতার অসচেতনতা ও দায়িত্বহীনতা সন্তানের জীবন ধ্বংস হয়। ইসলামি স্কলাররা বলেন, যে সন্তান পরিবার থেকে সুশিক্ষা পাবে, সে কখনও ধর্মবিরোধী ও দেশদ্রোহী হতে পারে না। সে মা-বাবাকে অবশ্যই সম্মান করবে। মা-বাবার অধিকার আদায়ে আগ্রহী হবে। কিন্তু সন্তানকে যথাযথ শিক্ষা না দিয়ে, তার অধিকার যথার্থভাবে আদায় করে তার কাছ থেকে ভালো কিছু আশা করা ভুল। লেখক: শিক্ষক, দারুত তাকওয়া ক্যাডেট মাদরাসা, কাঁচপুর, নারায়ণগঞ্জ     একুষে সংবাদ ডটকম//এম এ//২৭-০৭-২০১৬

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1