সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

সৈয়দপুর কামারপুকুর উচ্চ বিদ্যালয়ে দুই পক্ষের দ্বন্দে-শিক্ষা ব্যবস্হা ব্যাহত

প্রকাশিত: ০৭:১৭ পিএম, মে ২, ২০১৬
মহিনুল ইসলাম সুজন,নীলফামারী প্রতিনিধি: নীলফামারীর সৈয়দপুরের অদুরে ১নং কামারপুকুর ইউনিয়নের একমাত্র উচ্চ বিদ্যালয় কামারপুকুর উচ্চ বিদ্যালয়। এই বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণী হতে দশম শ্রেণী পর্যন্ত মোট ১২০০ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে । মোটকথা প্রত্যন্ত এলাকায় শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে খুবই কার্যকর ভূমিকা রাখছে স্কুলটি। বিদ্যালয়টিতে ২বছর থেকে দায়িত্বে থাকা ম্যানেজিং কমিটির সাথে একই কমিটির একজন অভিভাবক সদস্যের কিছু বিষয়ে বনিবনা না হওয়াতে দুইপক্ষের মাঝে শুরু হয়েছে রশি টানাটানি। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, অন্য সদস্য, প্রধান শিক্ষকসহ ১মপক্ষ আর অন্য এক সদস্য সহ সাবেক অভিভাবক সদস্যরা ২য়পক্ষ। গত একমাস ধরে তাদের মধ্যকার কিছু বিষয়ে বনিবনা না হওয়াতে ২য় পক্ষ অত্র বিদ্যালয়ের নির্বাচিত ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের অপসারণ দাবি করছে। তাদের ওই দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তারা কামারপুকুর বাজারে ৬টি প্রতিবাদ সভা করা সহ প্রধান শিক্ষক এ ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে না দেয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২য় পক্ষ বেশ কয়েকবার বিদ্যালয়ের প্রবেশমুখে অবস্থান নেয় । একপর্যায়ে গত ৩০ এপ্রিল ২য় পক্ষের লোকজন বিদ্যালয়ে গিয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের স্থানে বিদ্যালয়েরই এক শিক্ষককে প্রধান শিক্ষকের চেয়ারে বসিয়ে দেয়াসহ একজনকে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ঘোষণা করে। উল্লেখিত পরিস্থিতির পাশাপাশি প্রধান শিক্ষক প্রতিষ্ঠানে ঢুকতে না পারার কারণে বিদ্যালয়ে সৃষ্টি হয় অস্থিতিশীলতা । সেই অস্থিতিশীলতায় গত এক সপ্তাহ ধরে বিদ্যালয়ে ৭টি বিষয়ের ক্লাশের পরিবর্তে মাত্র ১টি করে ক্লাশ হয়েছে। এবং গত ৩০ এপ্রিল বিদ্যালয়ের অবস্থা ছিল পুরো থমথমে। দুই পক্ষের রশি টানাটানিতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ ব্যাহত করার পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা আজ আতঙ্কিত। গত ১সপ্তাহ থেকে ক্লাশ না পেয়ে তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে তারা শঙ্কিত। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে শিক্ষার্থীদের অধিকার বাস্তবায়িত করার লক্ষ্যে নিয়মিত ক্লাশ নিশ্চিত করার পাশাপাশি বিদ্যালয়ের আশপাশে কোন বিশৃঙ্খলা না করার দাবীতে সাবেক শিক্ষার্থী, অভিভাবক সহ সর্বস্তরের জনগণের অংশগ্রহণে মানববন্ধন করেছে ছাত্রদের নিয়ে গঠিত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ইয়োথ ইকুয়াল অক্সিজেন (ইয়ো) ফাউন্ডেশন। গত ২ এপ্রিল দুপুর ১২ টা থেকে ঘন্টাব্যপী ওই মানববন্ধনটি কামারপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত মানবন্ধনে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের পক্ষে প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মহিবুল্লাহ্ আকাশ সহ বকুল ইসলাম, শাহাবুদ্দিন শাহ, জুনায়েদ হাসান, আদর আলী, খলিলুর রহমান প্রমুখ। অত্র বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পক্ষে বক্তব্য দেন স্টুডেন্ট ক্যাবিনেট সভাপতি মেহেদী হাসান জয়। বক্তারা বলেন, কারও হীনস্বার্থ বাস্তবায়ন করতে গিয়ে হাজার হাজার কোমলমতি শিক্ষার্থীর সোনালী ভবিষ্যৎ ধ্বংশ হতে পারে না। তারা বলেন, কার কি অভিযোগ রয়েছে সেটা দেখার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন যথাযথ কর্তৃপক্ষ আছে। এখানে বিদ্যালয়ে ঢুকে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করার অধিকার কারও নেই । তারা বলেন, বিদ্যালয়কে ধ্বংশের মুখ থেকে ফিরিয়ে আনার বৃহৎ স্বার্থে শান্তিপূর্ণ সমাধানের কোন বিকল্প নেই । শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে দিয়ে নিয়মিত ক্লাশ চালু করতে দুই পক্ষের প্রতি আহ্বান জানান বক্তারা। অন্যথায় বিদ্যালয়ের স্বার্থে, শত শত শিক্ষার্থীর সোনালী ভবিষ্যৎ রক্ষার স্বার্থে কামারপুকুরের সচেতন এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে যে কোন ধরনের প্রতিবাদ কর্মসূচী গ্রহণ করা হবে বলে হুশিয়ারী প্রদান করেন তারা। উল্লেখ্য যে, উক্ত বিদ্যালয়ের সৃষ্ট দ্বন্দের ১ম পক্ষ বর্তমান প্রধান শিক্ষক জয়নাল আবেদীন ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আলহ্বাজ আঃ গফুর সরকার। আর ২য় পক্ষে রয়েছেন সদস্য আতাউর রহমান সহ অন্যরা। বিদ্যালয়ে সৃষ্ট সমস্যা নিয়ে জানতে চাইলে সভাপতি আঃ গফুর সরকার জানান, সরকারী সকল বিধি মেনে বছর দুয়েক আগে প্রধান শিক্ষককে নিয়োগ কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী নিয়োগ প্রদান করে। তিনি এখন পর্যন্ত বিদ্যালয় সুষ্ঠ ভাবে পরিচালনা করছেন। বিদ্যালয়ের এক অভিভাবক সদস্য বিভিন্ন বিষয়ে স্বার্থসংশ্লিষ্ট সুযোগ-সুবিধা না পেয়ে তার সঙ্গীয় লোকজন নিয়ে বিদ্যালয় সম্পর্কে নানা কুৎসা রটনা করে আসছে। তিনি বলেন, তারা গত ৩০ এপ্রিল নিয়ম বহির্ভূত ভাবে প্রতিষ্ঠানে ঢুকে একজনকে প্রধান শিক্ষক ঘোষণা করে । অন্যথায় ওই স্কুলে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সহ সভাপতিকে ঢুকতে দেবে না বলে হুমকি দেয়। তিনি দাবী করেন, ওদের এই সমস্ত হুমকির কারণে বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক ঢুকতে না পারার কারণে স্কুলে সঠিক ভাবে লেখাপড়া হচ্ছে না। বহিরাগতদের বিশৃঙ্খলা প্রতিহত করে স্কুলের স্বাভাবিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারলেই নিয়মিত ভাবে সকল ক্লাশ নেয়া সম্ভব হবে বলে জানান তিনি। এদিকে ম্যানেজিং কমিটির অপর অভিভাবক সদস্য আতাউর রহমানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার ফোন টি বন্ধ পাওয়া যায়। তাদের পক্ষে চেয়ারম্যান জিকো আহমেদ জানান, বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কেন ক্লাশ নিচ্ছেন না তার সঠিক কারণ আমরা জানি না। আমরা শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সকল শিক্ষকদের নিয়মিত ক্লাশ নেয়ার অনুরোধ জানাব।

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1