সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবকে জয়ের আনন্দে ভাসালেন মুক্তার

প্রকাশিত: ১০:৩৪ এএম, এপ্রিল ২৭, ২০১৬
একুশে সংবাদ: ফতুল্লা-মিরপুর-বিকেএসপি। ৪৫ কিলোমিটার লম্বা এক রেখার তিন বিন্দুতে তিনটি মাঠ। বল হাতে জাতীয় দলের তিন পেসার। ম্যাচের বাকি একটি বল। পেন্ডুলামের মতো দুলতে থাকা ম্যাচ তিনটির ভাগ্য নির্ধারিত হবে ওই বলে। তিন ম্যাচেই একই সমীকরণ, জয় পেতে হলে ছক্কা হাঁকাতে হবে ব্যাটসম্যানকে। দৌড় শুরুর আগে তিন পেসারের লক্ষ্যও তাই এক—কোনোভাবেই ছক্কা না খাওয়া। সময় থামিয়ে দেওয়া মুহূর্তকে পাশ কাটিয়ে ছুটে এলেন তিনজন। বোলার-ত্রয়ী পেলেন তিন ধরনের অনুভূতি। ডট, রান আউট, ছক্কা! ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে কাল ছিল রোমাঞ্চের দিন। শেষ বলে মুক্তার আলীর এই ছক্কাতেই (বাঁয়ের ছবি) নাটকীয় জয় পেয়েছে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। উৎসবে মেতে ওঠার উপলক্ষ পেয়েছেন তাঁর সতীর্থরা (ডানে)। কাল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে l শামসুল হকমুখ নড়লেও কথা বের হচ্ছে না। তবু ভাঙা গলার ফ্যাসফ্যাসে স্বরেই যুদ্ধজয়ের রোমাঞ্চটা স্পষ্ট। চোখে-মুখে খেলে যাওয়া আলোর ঝিলিককে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে নেমে আসা সন্ধ্যায় মনে হচ্ছিল নিয়ন বাতির মতো। মাহবুবুল করিমের সেঞ্চুরি আর তামিম ইকবালের ৯০ রানের ইনিংসের চেয়েও উজ্জ্বল মুক্তার আলীর ২ বলে ৭ রান। আবাহনীর বিপক্ষে বড় ম্যাচ, লক্ষ্যটাও ছিল সে রকম—২৮৮। রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনা পেরিয়ে শেষ বলের ছক্কায়। সতীর্থদের উল্লাসে মিশে গিয়ে এমন তারস্বরে চিৎকার করেছেন যে, গলার বারোটা বাজা সারা। মুক্তার তবু থামেন না। ভাঙা গলায়ই বলে চলেন, ‘আমি কাল (পরশু) স্বপ্নে দেখেছি, শেষ বলে ছক্কা মারছি। আজও (গতকাল) খেলার আগে বলছিলাম, শেষ দিকে আমাকে একটা ছক্কা মারতে হবে।’ শেষ দুই ওভারে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের দরকার ছিল ২১। প্রথম বলে ছক্কা আর শেষ বলে চার মেরে আবুল হাসানের ৪৯তম ওভারে নাজমুস সাদাত একাই নিলেন ১৩। শেষ ওভারে লাগে ৭। বোলিং অ্যাকশনে ত্রুটি ধরা পড়াটা যে একেবারেই অকারণে নয়, ইনিংসের প্রথম বলটিসহ কাল তাসকিনের বেশ কয়েকটি ডেলিভারিতেই স্পষ্ট হয়েছে সেটা। ৪৮তম ওভারে মাত্র ৪ রান দেওয়া সেই তাসকিনের হাতেই শেষ ওভারে বল তুলে দেন তামিম। অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান এই পেসার প্রতি বলেই দিচ্ছিলেন। প্রথম বলে অ্যাঞ্জেলো পেরেরা রানআউট কাজটা সহজ করে দেন। পরের বলে উপড়ে ফেললেন নাজমুস সাদাতের স্টাম্প। এরপর মুক্তারের সিঙ্গেল, চতুর্থ বল ডট। শেষ ওভারের প্রায় পুরো চাপই এসে পড়ল শেষ দুই বলে। সেঞ্চুরির পর উড়ছেন মাহবুবুল করিম l প্রথম আলোপঞ্চম বলে ১ রান নিয়ে মুক্তারকে প্রান্ত দিলেন সোহাগ গাজী। শেষ বলে ৫ হলে জিতবে শেখ জামাল। তার মানে ছক্কাই লাগবে। মুক্তার কি পারবেন? বছর দুয়েক আগে গাজী ট্যাংকের হয়ে এই আবাহনীর বিপক্ষেই আবুল হাসানের শেষ বলে ছক্কা মেরে ম্যাচ জিতিয়েছেন। সেই স্মৃতি আত্মবিশ্বাস আনল মনে। পা দুটো একটু ছড়িয়ে স্টান্স নিলেন, যেন তাসকিন ইয়র্কার দিলেও হাফ ভলি বানিয়ে নেওয়া যায়। কী সৌভাগ্য, তাসকিন দিলেনই হাফ ভলি! স্টান্সের কারণে মুক্তারের জন্য সেটাই ফুলটস। লং অনের ওপর দিয়ে বাতাসে ভাসিয়ে মাঠের বাইরে আছড়ে ফেললেন বলটাকে। এরপরই সেই উল্লাস, চিৎকার এবং মুক্তারের গলার অমন দুর্দশা। ওপেনার মাহবুবুল ১৩০ রানের ইনিংস না খেললে অবশ্য মুক্তারের বীরত্ব দেখানোর সুযোগই হতো না। মাহবুবুল যতই বলুন, ‘আমার সেঞ্চুরি যেমন, মুক্তারের ছয়ও তেমন’, ২৮৭ রান তাড়া করেও যে জয় সম্ভব, সেই স্বপ্ন জাগিয়ে তুলেছিল তাঁর ব্যাটই। আইসিএলে চলে গিয়ে প্রথম আলোচনায় আসা মাহবুবুল ৫০ ওভারের ক্রিকেটে সর্বশেষ সেঞ্চুরি করেছিলেন ২০০৪-০৫ মৌসুমে কলাবাগানের হয়ে। বিজয়ের মঞ্চ মাহবুবুল-মুক্তারদের হাসিতে ঝলমল করলেও দিনের শুরুটা ছিল তামিমের। ৯১ বলে ৯০ করেছেন, তবে মিরপুরের ব্যাটিং স্বর্গে আরও বড় ইনিংসই খেলা উচিত ছিল। মাহমুদউল্লাহকে ছক্কা মারতে গিয়ে সেটা হলো না। রান দেড় শ হওয়ার আগে তামিমের বিদায়ের পরও আবাহনীর তিন শ’র কাছাকাছি যাওয়ার কৃতিত্ব মূলত উদয় কৌল (৬৩), নাজমুল হোসেন শান্ত (৫২*) আর মোসাদ্দেকের (৪৬*)। সুইচহিটে থার্ডম্যান দিয়ে মোসাদ্দেকের মারা ছক্কাটা তো ছিল অবিশ্বাস্য। ম্যাচের সবচেয়ে অবিশ্বাস্য কাণ্ড তবু শেষ বলেই। মুক্তার তাতে নায়ক, তাসকিন লড়তে লড়তে হঠাৎ তীরবিদ্ধ সৈনিক। তাঁর জন্য অধিনায়ক তামিমের কেবল সান্ত্বনাই আছে, ‘শেষ বলে হয়তো সে ছয় খেয়ে গেছে, কিন্তু অবিশ্বাস্য বল করছে। তাঁর শেষ দুই ওভারের ১১টি বলই ঠিক জায়গায় পড়েছে। একটি পড়েনি, সেটাই ছয় হয়ে গেছে।’ শেষ কথাটাও বলে দিল ওই ছয়ই! একুশে সংবাদ ডটকম //এ// ২৭-০৪-১৬

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1