সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের স্মৃতি বিজড়িত পতিসর হতে পারে পর্যটন কেন্দ্র

প্রকাশিত: ০১:২১ পিএম, এপ্রিল ১৭, ২০১৬
নাজমুল হক নাহিদ,নওগাঁ প্রতিনিধি: নিভৃত পল্লী অবহেলিত জনপদ নওগাঁর আত্রাইয়ের পতিসর। এ জনপদে জমিদারী এস্টেট পরিচালনার জন্য বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পতিসরে এসেছিলেন ১৮৯১ইং সনে। আত্রাই উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১৯ কিলোমিটার পূর্বদিকে মনিয়ারী ইউনিয়নে অবস্থিত। সে সময় পায়ে হাটার বিকল্প কোন পথ না থাকায় কবি প্রায়ই আত্রাইঘাট রেল স্টেশন থেকে বোটযোগে নৌ পথে সেই নাগরনদ বেয়ে পতিসরে আসতেন। সে সময় তিনি এলাকার শত শত কৃষকের অবহেলিত জীবন ব্যবস্থায় হয়েছিলেন চরম ব্যথিত। তাই তিনি এলাকায় কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে গ্রহন করেছিলেন নানমুখী পদক্ষেপ। শুধু তাই নয় এ জনপদে ছিলনা শিক্ষার কোন আলো। শিক্ষিতের হার ছিল শূন্যের কোঠায়। শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত এ জনপদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে শিক্ষিত করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে তিনি পতিসরে প্রথম ১৯০৫ইং সনে জুনিয়র স্কুল হিসেবে একটি বিদ্যালয় স্থাপন করেন। পরবর্তীতে ১৯৩৭ইং সনে একাডেমিক স্বীকৃতির মধ্যদিয়ে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে উন্নিত করেন এ জুনিয়র স্কুলটিকে। সে সময় তিনি এলাকাবাসীকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন আমার নামে অনেক কিছু হয়েছে এবং আরো অনেক কিছু হয়তোবা হবে। তাই আমি এ বিদ্যালয়টি আমার পুত্রের নামানুসারে নাম করন করতে চাই। সে অনুযায়ী বিদ্যালয়টির নাম করন করা হয় “কালীগ্রাম রথীন্দ্রনাথ ইনিস্টিটিউশন” এবং বিদ্যালয়ের নামে দিয়ে যান তাঁর জমিদারী এস্টেটের অনেক জমি। যা যুগ যুগ থেকে অদ্যাবধি কালের স্বাক্ষী হিসেবে দাঁড়িয়ে কবির স্মৃতি বহন করে চলেছে। এ ছাড়াও কবি এখানে একটি চিকিৎসা কেন্দ্র একটি ব্যাংক স্থাপন করেন। কবি তার নোবেল পুরস্কারের সমুদয় টাকা এলাকার অবহেলিত কৃষকের উন্নয়নে ব্যয় করেন। কবি তার বর্ণাঢ্য জীবনের অনেক সময়ই এখানে কাটালেও কবির স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আশানুরুপ উন্নয়ন হয়নি এখনও। তার পরও যতটুকু উন্নয়ন হয়েছে তা একেবারে কম নয়। এখানে একটি দৃষ্টি নন্দন ডাকবাংলো, একটি কৃষি কলেজ স্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়াও কবির স্মৃতির সাক্ষবহনকারী ঘর দরজাও অনেকটা মেরামত করা হয়েছে। প্রতি বছর ২৫ বৈশাখ অত্যন্ত জাঁকজমক পূর্ণভাবে জাতীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে পালিত হয় বিশ্বকবির জন্ম জয়ন্তি। কবির কাছারিবাড়ি চত্বর অবৈধ দখলমুক্ত করা হয়েছে। কাছারিবাড়ি সংলগ্ন পূর্বদিকে নির্মাণ করা হয়েছে দেবেন্দ্র মঞ্চ। কবির ব্যবহৃত ও রেখে যাওয়া বিভিন্ন স্মৃতি সংগহ করে তা সংরক্ষণ করা হয়েছে এবং দর্শকদের জন্য এগুলো উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিশিষ্ট রবীন্দ্রভক্ত এসএম ফারুক বখ্ত বলেন, কবিগুরু এলাকার অবহেলিত কৃষকদের উন্নয়নে যে কাজ করেছেন তা শ্রদ্ধার সাথে আমরা স্বরণ করি। তিনি শুধু কবিই ছিলেন না। তিনি সত্যিকারের একজন জনদরদী ব্যক্তি ছিলেন। তিনি ছিলেন বাঙ্গালী জাতির প্রেরণার উৎস। তার আগমনে আমাদের পতিসর ধন্য হয়েছে। এখন শুধু তার জন্ম বার্ষিকী উদযাপন করেই পতিসরকে জিঁয়ে রাখা হয়েছে। এখানে অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও কবির কুঠিবাড়ি এলাকাকে আরও সংস্কার করা হলে এটি একটি পর্যটন কেন্দ্রে পরিনত হতে পারে। বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পতিসরের উন্নয়নে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আগের তুলনায় অনেক উন্নয় হয়েছে। আরও উন্নয়ন করা হবে। আত্রাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, পতিসরকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে এখানে যা করা প্রয়োজন তাই করা হবে। এ ব্যাপারে স্থানীয় সাংসদও খুবই আন্তরিক রয়েছেন। সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলম বলেন, কবির স্মৃতিধন্য পতিসর এখন আর নিভৃত পল্লী নেই। উন্নয়নের ছোঁয়ায় শহরে রুপান্তরিত হতে চলেছে। এখানে আধুনিক মডেলের ডাকবাংলো নির্মাণ, কবির ভাস্কর্য নির্মাণ, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে পাকা সড়কের প্রয়োজনীয় সংস্কার ও নাগরনদের উপর ব্রিজ নির্মাণ করে নাটোরের সিংড়ার সাথে আত্রাইয়ের সরাসরি যোগাযোগ ব্যবস্থা এই সরকারের আমলেই হয়েছে। ইতোমধ্যেই পতিসরের কাছারিবাড়ি প্রতœতত্ব অধিদপ্তরের কাছে হস্তান্তরিত হয়েছে। এটিকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে আরও উন্নয়ন করা হবে। একুশে সংবাদ ডটকম //এ// ১৭-০৪-১৬

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1