সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

কাঠফাটা রোদে হিটস্ট্রোক হয় যদি

প্রকাশিত: ০৩:৫৪ পিএম, এপ্রিল ১৩, ২০১৬
একুশে সংবাদ: বুকে বেরিয়েছি দুরু দুরু । কাঠফাটা রোদে যদি হিটস্ট্রোক হয়, কী করব। ড্রাইভার গ্রামে গেছেন। তাঁর নানি প্রায় শত বছর বয়সে মৃত্যুশয্যায়। শেষ ইচ্ছে, নাতি যেন তাঁকে কালো আঙুর এনে দেয়। তাহলে তাঁর আর আফসোস থাকবে না। সুতরাং, আজ আমাকে অফিসে যেতে হবে সিএনজিচালিত অটোরিকশায়। যাব। কিন্তু পথে নেমেই হোঁচট খেলাম। প্রথম পাঁচটা সিএনজিচালক ঠোঁট উল্টে বলল, কারওয়ান বাজার? ও তো মাত্র দুই-আড়াই কিলোমিটার, পোষাবে না। শুনে তো অবাক। অন্তত সাত কিলোমিটার পথ, আর বলে কিনা আড়াই কিলোমিটার। চালক বলে, ওই, একই কথা। ঝগড়া লাগিয়ে দিলাম। মিটার রেট তো অনেক বাড়ানো হয়েছে। তাহলে কেন যাবে না? ওরা কথা শুনতেই নারাজ। বলে, রাখেন ওসব কথা। ৩০০ টাকায় যাবেন? ভাবছিলাম বাসেই যাই। কিন্তু বছর দুয়েক আগে আমার বন্ধু জগ্‌লুল আহ্‌মেদ চৌধুরী কারওয়ান বাজারের কাছাকাছি সোনারগাঁও মোড়ে বাস থেকে নামতে চেয়েছিল বলে তাকে হেলপার জোর করে ঠেলে রাস্তায় ফেলে দিয়েছিল। সেখানেই তাকে নির্মম পরিণতি বরণ করতে হয়। নির্মম বাসচালকেরা একজন প্রতিভাবান সাংবাদিককে মেরে ফেলল। সেই খুনিদের বিচার হয়েছে কি না, জানতে পারিনি। তাই বাস এড়িয়ে চলি। আর সিএনজিচালিত অটোরিকশার কাহিনি তো বললাম। তাহলে মানুষ যাতায়াত করবে কীভাবে? এরই মধ্যে একজন সদাশয় চালক অটোরিকশার দরজা খুলে মিটার চালিয়ে বলল, আসুন আমার গাড়িতে। ভালো চালকও যে আছে, সেটা প্রথমে মাথায় আসেনি। অনেক কথা হলো তার সঙ্গে। দিন শেষে মালিকের জমা ও নিজের খাওয়াখরচ বাদ দিয়ে হাতে থাকে মাত্র শ পাঁচেক টাকা। গরিবি হালে সংসার চলে। অবশ্য মাসে ১৫ হাজার টাকায় আমার ড্রাইভারকেও সংসার চালাতে হয়। অবশ্য সামান্য আয়ের সংসারে টান পড়বেই। সরকার বলছে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে, কিন্তু আজই দোকানি বলল, সব আক্রা। পেঁয়াজ, আলু, সবকিছুর দাম একটু বাড়তির দিকে। বৈশাখ আসছে আর দাম বাড়ছে। কাঁচা আমের কেজি ৮০ টাকা! পাকা আমের চেয়েও বেশি। দোকানি বলল, কাঁচা আম ছাড়া নববর্ষ হয় নাকি! ইলিশের কথা না-ই বললাম। সিএনজি চলছে না। সামনে বিরাট জ্যাম। গুলিস্তান, প্রেসক্লাব, শাহবাগের মোড়, সবখানে জট লেগে আছে। গাড়ি থেমে আছে, মিটার উঠছে। সেই সঙ্গে দাবদাহ। ঘামছি, আর ভাবছি, যদি হিটস্ট্রোক হয়? 09e018f6b06c4aae1def02ada6e96345-1 প্রচণ্ড গরমে গা জুড়াতে অবগাহন। ছবিটি বগুড়ার কাহালু উপজেলা থেকে তোলা। ছবি: সোয়েল রানাঢাকায় তাপমাত্রা গতকাল ছিল ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজধানীতে বয়ে গেছে আগুনের হলকা। আজও একই অবস্থা। দেশে গত কয়েক দিনে সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা উঠেছে প্রায় ৪০ ডিগ্রি। আমাদের দেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা প্রায় ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাইরের তাপমাত্রা যদি ৪০ থেকে ৪৫ ডিগ্রি বা তারও বেশি উঠে যায়, আর সে কারণে যদি দেহের ভেতরের (কোর) তাপমাত্রা ৪০ দশমিক ৫৬ ডিগ্রি বা তার চেয়েও বেশি হয়, তাহলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। সাধারণত এ রকম হয় না। কারণ, শরীর তার নিজস্ব ব্যবস্থায় ঘাম ঝরিয়ে বা অন্যান্য উপায়ে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। তবে একপর্যায়ে বিপর্যয় ঘটতে পারে। হিটস্ট্রোক শরীরকে নিস্তেজ করে ফেলে। অতিরিক্ত তাপে লাংগস, হার্ট, কিডনিসহ মৌলিক যন্ত্রপাতি ঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন কমে যায়, মাথা ঝিমঝিম করে। দেহকোষে তরল সরবরাহ কমে যায়, কোষগুলো প্রায় নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে। এ রকম অবস্থায় দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। কাছাকাছি কোনো হাসপাতাল বা ক্লিনিকে যাওয়া ভালো। অবহেলা করা উচিত নয়। কারণ, একটি পর্যায়ের পর মারাত্মক পরিণতির মুখে পড়তে হতে পারে। তাই অতিরিক্ত গরমে সরাসরি রোদে না যাওয়া ভালো। অতিরিক্ত পরিশ্রম করা থেকে বিরত থাকা উচিত। পানি বেশি পান করতে হবে। চট করে অবশ্য হিটস্ট্রোক হয় না। কিন্তু সতর্ক থাকা ভালো। হিটস্ট্রোকের কথা ভাবতে ভাবতে অফিসের কাছে চলে এলাম। সৌভাগ্যই বলতে হবে। হিটস্ট্রোকে পড়তে হলো না। এ জন্য সিএনজিচালককে তার সদাশয়তার জন্য মিটারের চেয়ে কিছু টাকা বেশি দিলাম। চালক তো মহাখুশি! আমিও খুশি, কারণ মিটারে ভাড়া উঠেছিল অন্য সিএনজিচালকদের দাবি ৩০০ টাকার এক-তৃতীয়াংশ মাত্র! একুশে সংবাদ /এস/১৩-০৪-১৬

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1