সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

পহেলা বৈশাখ প্রায় এসেই গেলো

প্রকাশিত: ০৫:৩৭ পিএম, এপ্রিল ১২, ২০১৬
একুশে সংবাদ : প্রায় এসেই পড়েছে পহেলা বৈশাখ বাংলাদেশের এমনই উৎসব- যা ধর্ম, সমাজ, বয়স ও বৃত্তির সীমা পেরিয়ে সর্বত্র একাকার। নববর্ষের আনন্দ চিত্তে নতুনের জাগরণ ঘটায়। উৎসবের মধ্যে মানুষ নিজেকে খুঁজে পায় বৃহত্তরের গতিতে। রবীন্দ্রনাথ যেমনটা বলেছেন, ‘প্রতিদিন মানুষ ক্ষুদ্র দীন একাকী- কিন্তু উৎসবের দিনে মানুষ বৃহৎ; সেদিন সে সমস্ত মানুষের সঙ্গে একত্র হইয়া বৃহৎ, সেদিন যে সমস্ত মনুষ্যত্বের শক্তি অনুভব করিয়া মহৎ।’ পহেলা বৈশাখ নতুন আঙ্গিকে জীবন গড়ার শপথের দিন। এদিন রাষ্ট্রীয় কর পরিশোধের অঙ্গীকার গ্রহণের দিন ছিল একদা। দেনা-পাওনা হালনাগাদ করার দিন। ব্যবসায়ীদের হালখাতা খোলার দিন। পারস্পরিক সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ব সৃষ্টির প্রেরণার দিন। একদা ফসলি কর পরিশোধের সঙ্গে মানুষের খাদ্য নিরাপত্তাবোধ জাগানোর দিন ছিল। বাঙালী জীবনে দীর্ঘকাল ধরে পহেলা বৈশাখের পহেলা-বৈশাখ-ঘোরাঘুরি অনুষঙ্গ হচ্ছে ‘হালখাতা’। উদ্দেশ্য হচ্ছে ফসলি কর পরিশোধের আনন্দ প্রকাশ করা এবং ব্যবসায়ের হিসাব ও খাজনা ‘রাজকীয়’ খাতায় হালনাগাদ রাখা। এ উপলক্ষে রাজা-জমিদারকে প্রজারা তাদের সৃজনশীল পণ্য ও সূচিকর্ম উপহার দিত। রাজা-জমিদাররাও প্রজাদের কর রেয়াত ও ইনাম দিতেন। মানুষের নৈপুণ্য প্রদর্শন ও সাংবাৎসরিক প্রয়োজনীয় অথবা শৌখিন পণ্যের বেচাকেনার জন্য বৈশাখীমেলা লোকবাংলার প্রাচীন ঐতিহ্য। মানুষ এই উৎসবের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠে মুঘল আমল থেকেই। অবশ্য রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, ‘মানুষের উৎসব কবে? মানুষ যেদিন আপনার মনুষ্যত্বের শক্তি বিশেষভাবে স্মরণ করে, বিশেষভাবে উপলব্ধি করে।’ সেই দিন হতে বিশ্বের প্রায় প্রতিটি জাতি নতুন বর্ষ পালন করে আসছে নিজ নিজ ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে সমুন্নত রেখে। রাজস্ব আদায়ের সুবিধার্থে সম্রাট আকবরের রাজত্বকালে একটি নতুন সৌর সনের উদ্ভাবন করা হয়। ফসলি সন হিসেবে এই বাংলা সন বাঙালীর জীবনে নিয়ে আসে প্রাণের স্পন্দন আজও। আর ‘জগতের যেখানে অব্যাহত শক্তির প্রচুর প্রকাশ, সেখানেই যেন মূর্তিমান উৎসব’ (রবীন্দ্রনাথ)। এই উৎসব নিয়ে আসে সবার প্রাণে-মনে চির নতুনের আবাহন। মধ্যযুগের বাংলায় দরিদ্র মানুষের জীবনে বৈশাখ আনন্দবার্তা নিয়ে আসত এমন নয়, প্রচ- গরম আর অভাবের মাঝে বেঁচে থাকা গ্রামবাংলার মানুষ তবু খুঁজত প্রাণে প্রাণে যোগ। কবি মুকুন্দ রামের ‘কালকেতু ফুল্লরা উপাখ্যানে’ ফুল্লরার বর্ণনায় বৈশাখের দেখা মেলে এভাবেÑ ‘পাশেতে বসিয়া রামা কহে দুঃখবাণী/ভাঙা কুড়্যা ঘরখানি পরে ছাওনী/ভেরান্ডার খাম তার আছে মধ্যঘরে/প্রথম বৈশাখ মাসে নিত্য ভাঙে ঝড়ে ॥/ পুণ্য কর্ম্ম বৈশাখেতে খরতর খর/তরুতল নাহি মোর করিতে পসর ॥/ পদ পোড়ে খরতর রবির কিরণ/শিরে দিতে নাহি আঁটে অঙ্গের বসন॥/ বৈশাখ হৈল আগো মোরে বড় বিষ/মাংস নাহি খায় সর্ব্বলোক নিরামিষ একুশে সংবাদ /এস/১২-০৪-১৬

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1