সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

দক্ষিণ বাংলার জলের স্বর্গে ঘুরে আসুন

প্রকাশিত: ১০:১০ এএম, এপ্রিল ১১, ২০১৬
একুশে সংবাদ: যাঁরা থাইল্যান্ডের ফ্লোটিং মার্কেট নিয়ে আগ্রহ দেখান, যাঁরা কেরালার ব্যাকওয়াটারের ছবি দেখে হা-পিত্যেস করেন তাঁরা দেখে আসুন বরিশাল আর পিরোজপুরের জলের এক স্বর্গ রাজ্য। বলছিলাম বরিশাল-পিরোজপুরের-ঝালকাঠির নদী আর গ্রামের ভেতর বয়ে যাওয়া খালগুলোর কথা। ধান-নদী-খাল এই তিনে বরিশাল- এ কথা তো অনেকেই জানে। কিন্তু অনেকেই জানেন না এ নদী-খালের মধ্যে কী অপরিসীম স্বর্গীয় সৌন্দর্য লুকিয়ে আছে। বরিশালে প্রতি এলাকায়ই একটি নদী নিদেন পক্ষে একটি খাল রয়েছে। ভরা বর্ষায় তো বটেই, শীতকালেও এসব খালে পানি প্রবাহ থাকে। তাই বছর ভর ঘুরে বেড়ানো যায় শান্ত স্নিগ্ধ এ এলাকায়। ছোট খালের দুই পাশে কোথাও ফসলের মাঠ, কোথাও পতিত ভূমি কোথাও বা বসতবাড়ি- সব কিছুই ছবির মতো মনে হবে আপনার কাছে। কিছুক্ষণ পর পর আছে গ্রামীণ ছোট বাজার। আর সে বাজারের আছে টাটকা সব শাকসবজি। দুপুরে খেতে চাইলে আছে তারও ব্যবস্থা। সবচেয়ে আকর্ষণীয় যে জিনিসটি আপনার মন কেড়ে নেবে তা হলো ফ্লোটিং মার্কেট বা ভাসমান বাজার। পানিপ্রধান অঞ্চল বলে স্বভাবতই এখানকার জীবনযাত্রায় নৌকার ভূমিকা প্রবল। কতটা প্রবল তা এখানে না এলে বোঝা যাবে না। কিছু কিছু এলাকার অধিবাসীদের বাণিজ্যের বেশ বড় অংশ চলে জলে বসে। আর এ কারণেই বরিশাল, পিরোজপুরে আর ঝালকাঠিতে গড়ে উঠেছে অনেক ভাসমান বাজার। বরিশালের বানারীপাড়ার সন্ধ্যা নদীতে প্রতি শনি এবং মঙ্গলবার বসে বিশাল ধান আর চালের ভাসমান বাজার। খুব সকাল থেকেই কয়েকশ নৌকায় করে কারবারি ও গৃহস্থরা ধান চাল নিয়ে আসে বিক্রির জন্য। অনেকে আসে খালি নৌকা নিয়ে চাল কিনতে। পুরো প্রক্রিয়াটাই চলে নদীতে বসে। ধানের বাজার ছাড়াও আছে ভাসমান সবজি বাজার। নাজিরপুরের বৈঠাকাঠা, উজিরপুরের হারতা, মাহমুদকাঠিসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় আছে এ সবজি বাজার। এখানেও স্থানীয় মানুষজন তাদের শাকসবজি নৌকায় করে নিয়ে এসে নৌকায় করেই বিক্রি করে থাকে। সকাল থেকেই জমে ওঠে এ বাজার। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত লাল শাক, পালং শাক, পুঁই শাক, কলা, চিচিংগা, বরবটি, শশা, টমেটো, ঢেড়শ, মূলা ইত্যাদি নানা সবজি দিয়ে ভরপুর থাকে এসব নৌকায়। অসাধারণ ফটোজেনিক জায়গা এটি। বলা যায় ফটোগ্রাফারদের স্বর্গরাজ্য। শান্ত জলের মাঝে সবজি বোঝাই নৌকাগুলোতে বেচাকেনা চলে হরদম। a আর আপনি যদি যান জুলাই থেকে অক্টোবরের মাঝে তবে দেখা পাবেন অপার্থিব এক সুন্দর বাজারের। সেটা হলো ভিমরুলির ভাসমান পেয়ারা বাজার। বাংলাদেশের উৎপাদিত মোট পেয়ারার প্রায় ৮০ ভাগই উৎপাদিত হয় ঝালকাঠির বিভিন্ন গ্রামে। আটঘর, কুরিয়ানা, ডুমুরিয়া, বেতরা, ডালুহার, সদর ইত্যাদি এলাকার প্রায় ২৪ হাজার একর জমিতে পেয়ারার চাষ হয়। আর এ পেয়ারা বেচাকেনার জন্য ঝালকাঠির ভিমরুলিতে জমে ওঠে বাংলাদেশের সবচে বড় ভাসমান বাজার। প্রতি মৌসুমে এ বাজারে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার বেচাকেনা হয়। প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চলে কেনাবেচা। অনেক দূর-দূরান্ত থেকে পেয়ারা চাষিরা তাদের ক্ষেতের পেয়ারা নিয়ে আসে এ বাজারে। আর ক্রেতারাও আসে অনেক দূর থেকে। সাধারণত নৌকায় থাকা পুরো পেয়ারাই এক লটে কেনাবেচা হয়। ভরা মৌসুমে এক নৌকা পেয়ারা মাত্র ৩০০ টাকায়ও কিনে নেওয়া যায়। তো যদি স্রেফ ২ রাত ১ দিন সময় পান হাতে, দেখে আসুন দক্ষিণ বাংলার অপার সে সৌন্দর্য, অনুভব করে আসুন বাংলার রূপ। s কোন বারে কোন বাজার : বানারীপাড়ার চালের বাজার : শনিবার ও মঙ্গলবার উজিরপুরের হারতার সবজি বাজার : রবি ও বুধবার নাজিরপুরের বৈঠাকাঠা সবজি বাজার : শনি ও মঙ্গলবার ঝালকাঠির ভিমরুলির পেয়ারা বাজার : প্রতিদিন (জুলাই থেকে অক্টোবর) বাজার দেখতে হলে উপরের এ দিন মিলিয়ে যাওয়াই ভালো। সব বাজারই খুব সকালে বসে এবং দুপুরের মধ্যে শেষ হয়ে যায়, তাই সকালে যাওয়াই উত্তম। আর শুধু জলভ্রমণ করতে হলে যেকোনো দিনই যাওয়া যায়। একুশে সংবাদ /এস/১১-০৪-১৬

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1