সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

দায়িত্বশীল ইসলামে সন্তানের কাজ

প্রকাশিত: ১২:২০ পিএম, এপ্রিল ৪, ২০১৬
একুশে সংবাদ:পিতা-মাতার মত পৃথিবীতে আপন কেউ নেই। পিতা-মাতা সন্তানকে লালন-পালন করে বড় করে তোলে। এখানে পিতা-মাতা দায়বদ্ধতার চাইতে বেশিই প্রকাশ করেন ভালবাসা। এ ভালবাসার বন্ধন অটুট রাখার শিক্ষা পরিবার থেকেই পাওয়া যায়। এই কারণেই ইসলাম পারিবারিক বন্ধনকে সুদৃড় করতে উৎসাহ দিয়েছে। মাতা-পিতার প্রতি সন্তানের কিছু দায়িত্ব-কর্তব্য নির্ধারণ করেছেন। পিতা-মাতার সাথে সৎ ব্যবহারের আদেশ দিয়ে আল্লাহ বলেন, ‘‘তোমার প্রতিপালক আদেশ দিয়েছেন তিনি ব্যতীত অন্য কারও ইবাদত করনা এবং তোমাদের পিতা-মাতার সাথে সৎ সদ্ব্যবহার কর”। পিতা-মাতার কোন একজন অথবা উভয়েই বার্ধক্যে উপনীত হলে তাদেরকে ‘উফ’ শব্দ পর্যন্ত বলা থেকে দুরে থাকতে বলা হয়েছে। যে কোন পরিস্থিতিতে পিতা-মাতার মনে কষ্ট পায় এমন শব্দ ব্যবহার ও ধমক দিতে নিষেধ করা হয়েছে। ইসলামে পিতা-মতার সাথে সকল পরিস্থিতিতে সম্মানসূচক কথা বলতে নির্দেশ দিয়ে সূরা বনী ইসরাইল এ আল্লাহ বরেন, “তাদের (পিতা-মাতা একজন অথবা উভয়ে বার্ধক্যে পরিনত হয় তবে তাদের সাথে ‘উফ’ শব্দ উচ্চারণ করনা”। সন্তানকে তার পিতা-মাতার প্রতি সধাচরণ শিক্ষা দেয়া হয়েছে, মা তার সন্তানকে গর্ভে ধারণকালে যে কষ্ট ভোগ করেছেন তার কথা সরণ করিয়ে দিয়ে। আল্লাহ বলেন, ‘‘আমি তো মানুষকে তার পিতা-মাতার প্রতি সদাচরণের নির্দেশ দিয়েছি। মা সন্তানকে কষ্টের পর কষ্ট বরণ করে গর্ভে ধারণ করে এবং তার দুধ ছাড়ান হয় দুই বৎসরে। সুতরাং আমার প্রতি ও তোমার পিতা-মাতার প্রতি কৃতজ্ঞ হও। প্রত্যাবর্তন তো আমারই নিকট।’’ (সূরা লুকমান, আয়াত ১৪)। পিতা-মাতার সাথে সন্তানের আনুগত্যের সীমানা কতোটুকু হবে তারা যে আদেশ দেন তার সকলটিই মানতে হবে কি-না তার প্রতি দৃষ্টিপাত করে আল্লাহ বলেন, ‘‘তোমার পিতা-মাতা যদি তোমাকে পীড়াপীড়ি করে আমার সাথে কাউকে শরীক করতে যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই, তুমি তাদের কথা মানবে না। তবে পৃথিবীতে তাদের সাথে সদভাবে বসবাস করবে।’’ (সূরা লুকমান, আয়াত ১৫)। অর্থাৎ তারা যদি আল্লার সাথে কাওকে শরীক অথবা সমকক্ষ মনে করতে বলে তা করা যাবেনা। কিন্তু দুনিয়ার যাবতীয় কাজে তাদের প্রতিশ্রদ্ধাশীল থাকতেই হবে। কেননা আল্লাহর অবাধ্য হযে যে আনুগত্য প্রকাশ করা হয় তা গ্রহন যোগ্য নয়। এ বিষয়টিকে সুন্দর করে সাজাতে গিয়ে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ মানুষ মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেন, ‘‘আল্লাহর অবাধ্যতায় কারো কোন আনুগত্য নেই। আনুগত্য শুধু ভাল কাজে।’’ তিনি অন্যত্র বলেন, ‘‘স্রষ্টার অবাধ্যতায় সৃষ্টির কোন আনুগত্য নেই। একদা এক ব্যক্তি রাসুল (সঃ) কে বললেন, হে আল্লাহ রাসূল আমার ভাল ব্যবহার পাওয়ার সবচাইতে বেশি হকদার কে? তিনি রাসুল (সঃ) বললেন, “তোমার মা। সে জিজ্ঞেস করল, তারপর কে? তিনি বললেন, তোমার মা। সে পুনরায় জিজ্ঞেস করল, তারপর কে? তিনি বললেন, তোমার মা। সে পুনরায় জিজ্ঞেস করল, তারপর কে? তিনি বললেন, তোমার পিতা। অন্য বর্ণনায় রয়েছে, তিনি বললেন, তোমার মা, তারপর তোমার মা, তারপর তোমার মা, অতঃপর তোমার পিতা। অতঃপর তোমার নিকটতম ব্যক্তিবর্গ”। সুতারং মাতার অধিকার প্রতিষ্ঠিত এ কথায় কোন দ্বিমত পোষন কারা জায়গা নেই। বিশিষ্ট্য সাহাবী আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ (রা) বলেন, “আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করলাম, আল্লাহর নিকট সবচেয়ে পছন্দীয় আমল কোনটি? তিনি বললেন, সময়মত নামায আদায় করা। আমি বললাম, তারপর কোনটি? তিনি বললেন, পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করা। আমি বললাম, তারপর কোন কোনটি? তিনি বললেন, আল্লাহর পথে জিহাদ করা”। সুতারং জিহাদ করার চাইতেও মাতা-পিতার আনুগত্য করাটা অধিক গুরুত্ব্যের দাবি রাখে। অন্য সাহাবী আনাস বিন মালিক (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি তার আয়ু ও রিযিক বৃদ্ধি করতে ইচ্ছুক, সে যেন তার বাবা-মার সাথে ভাল ব্যবহার করে এবং আত্মীয়তার বন্ধন অটুট রাখে”। পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করা যেমন সন্তানের কর্তব্য, তেমনি তাদের সাথে সম্পর্কছেদ করা কবীরা গুনাহ। রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেন, “আমি কি তোমাদেরকে সবচেয়ে বড় গুনাহ সম্পর্কে অবগত করব না? সাহাবীগণ বললেন, হ্যাঁ, অবশ্যই হে রাসূলুল্লাহ! তিনি বললেন, আল্লাহর সাথে শিরক করা, পিতা-মাতার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করা এবং মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদান করা”। সুতারং সুন্দর সমাজের ছবি যে মন আাঁকে তার উচিৎ একজন আদর্শ সন্তান হিসেবে সমাজে পিতা-মতার অধিকারের ব্যপারে নিজে সচেতন থাকা এবং তার সাথীদের এ বিষয়ে সচেতন করা। একুশে সংবাদ/এস/০৪-০৪-১৬

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1