সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

ভারত - এশিয়াও জিকা ভাইরাসের হুমকিতে

প্রকাশিত: ১১:৩৯ এএম, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০১৬
একুশে সংবাদ : হঠাৎ করেই এক ভয়ংকর ভাইরাসের শিকার হচ্ছে বিশ্ববাসী, যাকে কোনোভাবেই আটকানো যাচ্ছে না। দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে। বিশ্বের বড় বড় ডাক্তাররা এ কঠিন বিপদ কীভাবে সামাল দেওয়া যায়, তা নিয়ে আলোচনা বসেছেন। কিন্তু সমাধান কিছুই পাওয়া যায়নি। এ ভাইরাসের কোনো প্রতিষেধক নেই, নেই কোনো ভ্যাকসিন। তবে এর সবচেয়ে ভয়াবহ থাবার শিকার হচ্ছে শিশুরা। এ ভাইরাসের প্রভাবে হাজার হাজার শিশু অপূর্ণাঙ্গ মস্তিষ্ক নিয়ে জন্মগ্রহণ করছে। এরকম কাহিনী নিয়ে একটা থ্রিলার সিনেমা হতে পারে। তবে শঙ্কার কথা হচ্ছে, এটি এখন বাস্তবেই হচ্ছে, এ পৃথিবীতে। জিকা ভাইরাস যেভাবে ছড়াচ্ছে, তাতে সারা বিশ্ব হুমকির মুখে পড়েছে। এশিয়া মহাদেশও আছে ভয়াবহ জিকা ঝুঁকিতে। জিকা একটি মশাবাহিত রোগ যার কারণে শিশুরা অপরিণত মস্তিষ্ক নিয়ে জন্মগ্রহণ করতে পারে। ভারত ইতোমধ্যেই দেশটির সব নাগরিকদের জিকা ভাইরাস পরীক্ষা করছে। আর আচমকা যদি দেশটির কারো শরীরে জিকা ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত করা যায়ও, তাতেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। কারণ ভারতে জিকার প্রকোপের ইতিহাস অনেক পুরনো। জিকা নিয়ে গবেষণা করছেন, এমন বিজ্ঞানীরা এরই মধ্যে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, প্রায় ২০-৩০ লক্ষ মানুষ জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত ২৩টি দেশে জিকার উপস্থিতি সনাক্ত করা হয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্রও জিকা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকিতে আছে। এখন পর্যন্ত এশিয়াকে জিকামুক্ত বলেই মনে করা হচ্ছে। ভারতের পুনেতে অবস্থিত ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি বেশকিছু মানুষের নমুনা পরীক্ষা করে জিকা ভাইরাসের উপস্থিতি সনাক্ত করতে পারেনি। এটি ভালো খবর হলেও ভারতে এর আগেও জিকার উপস্থিতি সনাক্ত করা গেছে। তাই ভারতকে নিয়ে ভয় এখনও আছে। পুনের এ প্রতিষ্ঠানটি ১৯৫২ সালে যখন প্রথম প্রতিষ্ঠিত হয়, তখন প্রতিষ্ঠানটির বেশ কয়েকজন বিজ্ঞানী বেশকিছু রোগের উৎপত্তি, বিকাশ ও প্রতিষেধকের উপর মনোনিবেশ করেন। এ বিজ্ঞানীরা সারা ভারতের বিভিন্ন জায়গা থেকে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে সেগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ১৫ ধরনের মশাবাহিত রোগের একটি তালিকা করেছিলেন। এখন শুনতে বিষ্ময়কর মনে হলেও সে তালিকায় জিকা ভাইরাসের কথা ছিল। বিষ্ময়কর বলা হচ্ছে এ জন্য, জিকা ভাইরাস অতি সম্প্রতি আলোচনায় এসেছে। অথচ গত শতকের পঞ্চাশের দশকেই বিজ্ঞানীরা এ ভাইরাস সনাক্ত করেছিলেন। সর্বপ্রথম উগান্ডায় জিকা নামের একটি নির্জন জঙ্গলের বানরের শরীরে এ ভাইরাসের উপস্থিতি সনাক্ত করা হয়েছিল ১৯৪৭ সালে। পরে ১৯৫২ সালে বিজ্ঞানীরা এর আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা দেন। ১৯৫৩ সালে ভারতে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়েছিল, ‘ভারতে মানুষ জিকা ভাইরাস আক্রান্ত হচ্ছে’। ১৯৫৪ সালে নাইজেরিয়ায় সর্বপ্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত একজনের কথা প্রকাশ করা হয়। একজন বিশেষজ্ঞ বিবিসি-কে বলেছেন, মানব শরীরে প্রথম কোনো জীবন্ত ভাইরাস সনাক্তের অনেক আগেই জিকা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছিল। ভারতে যদি এখন জিকার ভয়াবহতা পাওয়া না-ও যায়, তাহলেও ডেঙ্গুর ভয়াবহতা এটাই প্রমাণ করে যে, জিকা ভাইরাস ভারতে দ্রুত ছড়াতে সক্ষম। ডেঙ্গু আর জিকা দুটোই এডিস এইজেপ্টি নামক এক প্রজাতির মশার মাধ্যমে ছড়ায়। গতবছর ভারতে ডেঙ্গুর প্রকোপ ছিল অত্যন্ত ভয়াবহ। শুধু হাসপাতালেই ভর্তি হয়েছে ২৫ হাজারের মতো, আর মূল সংখ্যাটা এর চেয়ে অন্তত একশ’ গুণ বেশি বলে ধারণা করছেন সবাই। পৃথিবীতে ডেঙ্গুর প্রকোপ মারাত্মক হারে বেড়েছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত প্রতি একশ’ জনের মধ্যে একজন মারা যাচ্ছে। ৫০ বছর আগেও নগন্য কিছু দেশে ডেঙ্গু ছিল। এখন নগন্য কিছু দেশ অছে, যেখানে ডেঙ্গু নেই। ৫০ বছরে এতটাই পটপরিবর্তন হয়েছে! পৃথিবীর অর্ধেক মানুষ ডেঙ্গুর হুমকিতে আছে, লাখ লাখ মানুষ এরই মধ্যে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। একজন বিশেষজ্ঞ বিবিসি-কে বলছেন, যেখানে ডেঙ্গুর প্রকোপ আছে, সেখানে জিকা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। কারণ দুটোরই ছড়ানোর প্রক্রিয়া একই।   একুশে সংবাদ ডটকম//এম এ//০৩-০২-২০১৬

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1