সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

সেনাবাহিনী যেসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক

প্রকাশিত: ০৮:৪০ পিএম, জানুয়ারি ১১, ২০১৬
ব্যাংক, হোটেল, খাবার, গার্মেন্টস, ইলেকট্রনিক, রিয়েল এস্টেট, পরিবহন – বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আজকাল সব ধরনের ব্যবসার সঙ্গেই যুক্ত৷ আর এই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো চলে ‘আর্মি ওয়েলফেয়ার ট্রাষ্ট' আর ‘সেনা কল্যাণ সংস্থা'-র অধীনে৷ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অধীনে সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠানটি হলো ‘ট্রাষ্ট ব্যাংক লি.'৷ বর্তমানে সারাদেশে এদের অন্ততপক্ষে ১০০টি শাখা রয়েছে৷ প্রতিষ্ঠানটি সাধারণ বাণিজ্যিক ব্যাংকের মতোই কাজ করে৷ এছাড়া ঢাকার সবচেয়ে আকর্ষণীয় পাঁচতারা হোটেল র‌্যাডিসন-ও সেনাবাহিনীর মালিকানায়৷ রাজধানীর বাইরে চট্টগ্রামেও রয়েছে তাদের আরেকটি পাঁচতারা হেটেল র‌্যাডিসন ব্লু৷ বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ‘সেনা কল্যাণ সংস্থা' বা এসকেএস-এর অধীনে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে আছে: ‘মংলা সিমেন্ট ফ্যাক্টরী', ‘ডায়মন্ড ফুড ইন্ডাষ্ট্রিজ', ‘ফৌজি ফ্লাওয়ার মিলস', ‘চিটাগাং ফ্লাওয়ার মিলস', ‘সেনা কল্যাণ ইলেক্ট্রিক ইন্ডাষ্ট্রিজ', ‘এনসেল টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড', ‘স্যাভয় আইসক্রিম', ‘চকোলেট এন্ড ক্যান্ডি ফ্যাক্টরী', ‘ইস্টার্ন হোসিয়ারী মিলস', ‘এস কে ফেব্রিক্স', ‘স্যাভয় ব্রেড এন্ড বিস্কুট ফ্যাক্টরী', ‘সেনা গার্মেন্টস', ‘ফ্যাক্টো ইয়ামাগেন ইলেক্ট্রনিক্স', ‘সৈনিক ল্যাম্পস ডিস্ট্রিবিউশন সেন্টার', ‘আমিন মহিউদ্দিন ফাউন্ডেশন', ‘এস কে এস কমার্শিয়াল স্পেস', ‘সেনা কল্যাণ কমার্শিয়াল কমপ্লেক্স', ‘অনন্যা শপিং কমপ্লেক্স', ‘সেনা ট্রাভেল লিমিটেড', ‘এস কে এস ট্রেডিং হাউস', ‘এস কে এস ভবন খুলনা', ‘নিউ হোটেল টাইগার গার্ডেন', ‘রিয়েল এস্টেট ডিভিশন চট্টগ্রাম' এবং ‘এস কে টেক্সটাইল'৷ অন্যদিকে ‘আর্মি ওয়েলফেয়ার ট্রাষ্ট' বা এডাব্লিউটি-র প্রতিষ্ঠানগুলো হলো: ‘ট্রাষ্ট ব্যাংক লি'., ‘ব়্যাডিসন ওয়াটার গার্ডেন হোটেল', ‘আর্মি শপিং কমপ্লেক্স', ‘সেনা প্যাকেজিং লিমিটেড', ‘সেনা হোটেল ডেভলেপমেন্ট লিমিটেড', ‘ট্রাষ্ট ফিলিং এন্ড সিএনজি ষ্টেশন', ‘সেনা ফিলিং ষ্টেশন – চট্টগ্রাম', ‘ভাটিয়ারী গলফ এন্ড কান্ট্রি ক্লাব', ‘কুর্মিটোলা গলফ ক্লাব', ‘সাভার গলফ ক্লাব', ‘ওয়াটার গার্ডেন হোটেল লিমিটেড চট্টগ্রাম', ‘ট্রাষ্ট অডিটোরিয়াম এবং ক্যাপ্টেনস ওর্য়াল্ড', ‘আর্মি ওয়েলফেয়ার ট্রাষ্ট বাস সার্ভিস' আর ‘ট্যাক্সিক্যাব সার্ভিস' এছাড়া রয়েছে ‘আর্মড ফোর্সেস মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল' ও ‘আর্মি ইন্সটিউট অব বিজনেস এ্যাডমিনিষ্ট্রেশন'৷ এর সঙ্গে সেনাবাহিনী সরাসরি নির্মাণ কাজেও যুক্ত৷ যেমন ঢাকার ‘হাতির ঝিল' প্রকল্পটি সেনাবাহিনীই বাস্তবায়ন করে৷ এমনকি রাষ্ট্রায়ত্ব প্রতিষ্ঠান ‘মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি' এখন পরিচালনা করে সেনাবাহিনী-ই৷ ‘সেনা কল্যাণ সংস্থা' গঠন হয় ১৯৭২ সালে এবং ১৯৯৮ সালে সংস্থাটিকে কোম্পানি আইনে নিবন্ধন করা হয়৷ ‘আর্মি ওয়েলফেয়ার ট্রাষ্ট' গঠন করা হয় ১৯৯৯ সালে৷ জানা গেছে, এবার ওষুধ ও বীমা কোম্পানিসহ আরো কিছু ব্যবসায় যুক্ত হতে চায় বাংলাদেশের সেনাবাহিনী৷ আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআই)-এর গভর্নমেন্ট ডিফেন্স অ্যান্টিকরাপশন ইনডেক্স-২০১৫ অনুযায়ী, বাংলাদেশের অবস্থান ‘ব্যান্ড ডি'৷ এই ‘ব্যান্ড ডি' বলতে তারা বোঝায় ডিফেন্স সেক্টরে উচ্চমাত্রার দুর্নীতি ঝুঁকির কথা৷ আর সে জন্যই তারা বাংলাদেশের ‘ডিফেন্স' বা প্রতিরক্ষা বাজেটকে পুরোপুরি সংসদীয় ব্যবস্থার অধীন করার সুপারিশ করেছেন৷ ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর ট্রাস্টি বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান এবং সাবেক কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল হাফিজ উদ্দিন খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘সেনাবাহিনী ব্যাংক-হোটেল থেকে শুরু করে ট্র্যাভেল ব্যবসায়ও জড়িয়ে পড়েছে৷ আমি এটাকে সমীচীন মনে করি না৷ এটা সেনাবাহিনীর কাজ নয়৷ একটা পেশাদার বাহিনী এ ধরনের কাজে জড়ালে তাদের পেশাগত দক্ষতা হ্রাস পায়৷'' তাঁর কথায়, ‘‘প্রতিষ্ঠান হিসেবে সেনাবাহিনী ব্যবসা করলে অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তা বা প্রতিষ্ঠানও কি ব্যবসা করবে? তা হওয়া ঠিক নয়৷ আমার মত হলো, সেনাবাহিনীকে ব্যবসা থেকে দূরে রাখা৷'' অন্যদিকে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহেদুল আনাম খান (অব.) ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘সেনবাহিনীর যেসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান আছে, তা বর্তমান এবং সাবেক সেনা কর্মকর্তারা পরিচালনা করেন মাত্র৷ কাজ করেন সিভিলিয়ানরা৷ তাই সেনাবাহিনীর পেশাগতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বা অদক্ষ হওয়ার কোনো কারণ নেই৷ তাছাড়া সেনাবাহিনীর দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখারও ব্যাপার আছে৷ তারা যদি এ সব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দেশে কর্মসংস্থান বাড়াতে পারে, তাহলে তো এটা ইতিবাচক৷'' তিনি অবশ্য এ-ও মনে করেন যে, এটা সেনাবাহিনীর মুখ্য কাজ নয়৷ তাই কখনোই যেন এটা মুখ্য কাজ না হয়ে ওঠে৷ তবে ‘‘এখনও পর্যন্ত এটা মুখ্য কাজ হয়ে ওঠার কোনো প্রবণতা দেখা যায়নি বলেন শাহেদুল আনাম খান৷ সূত্র: ডয়চে ভেলে।

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1