সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

আত্রাইয়ে হারিয়ে যাচ্ছে চিরায়ত বাংলার ঐতিহ্যবাহী মাটির বাড়ি

প্রকাশিত: ১০:৫৪ এএম, নভেম্বর ২১, ২০১৫
নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ) প্রতিনিধি : নওগাঁর আত্রাইয়ে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার চির ঐতিহ্য নিদর্শন সবুজ শ্যামল ছায়া ঘেরা শান্তির নীড় মাটির তৈরি বাড়ি (ঘর)। যা এক সময় ছিল গ্রামের মানুষের কাছে মাটির বাড়ি বা ঘর গরিবের এসি বাড়ি নামে পরিচিত। কিন্তু কালের আবর্তে আজ হারিয়ে যাচ্ছে এই ঐতিহ্যবাহী মাটির বাড়ি ঘর। বেশি দিনের কথা নয়, বাংলার প্রতিটি গ্রামে নজরে পরতো এই মাটির বাড়ি ঘর। ঝড়-বৃষ্টি থেকে বাঁচার পাশা-পাশি প্রচুর গরম ও শীতে বসবাস উপযোগী মাটির তৈরি বাড়ি ঘর। এসব মাটির বাড়ি ঘর আর তেমন একটা নজরে পড়ে না। আধুনিকতার ছোঁয়ায় আর সময়ের পরিবর্তে গ্রাম বাংলা থেকে ঐতিহ্যবাহী মাটির তৈরি বাড়ি ঘর বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। এই বাড়ি ঘর শীত ও গরম মৌসুমে আরামদায়ক বলে গ্রামের অনেক বিত্তবানও এই মাটির দ্বিতল বাড়ি ঘর তৈরি করেন। গ্রামের আর্থ-সামাজিক অবস্থায় পরিবর্তন এসেছে। ব্যক্তিগত উদ্যোগে, সরকারি সহায়তা ও বিভিন্ন এনজিওর মাধ্যমে স্বাবলম্বী হয়ে এবং কায়িক পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজেদের অবস্থার উন্নতি করে গরিব পরিবারগুলো এখন তৈরি করছে ছোট বড় আধাপাকা বাড়ি। যার নিচের অংশ ইট-সিমেন্টর তৈরি, উপরের অংশে দেওয়া হয় টিনের তৈরি ছাউনি। জানা যায়, অতি প্রাচীনকাল থেকেই মাটির বাড়ি বা ঘরের প্রচলন ছিল। গ্রামের মানুষের কাছে এই বাড়ি বা ঘর ঐতিহ্যের প্রতীক ছিল। গ্রামের বিত্তবানরা এক সময় অনেক অর্থ ব্যয় করে মজবুত মাটির দ্বিতল বাড়ি ঘর তৈরি করতেন। যা এখনও কিছু কিছু গ্রামে চোখে পড়ে। এঁটেল বা আঠালো মাটির কাঁদায় পরিণত করে ২-৩ ফুট চওড়া করে দেয়াল বা ব্যাট তৈরি করা হয় ১০-১৫ ফুট উঁচু। দেয়ালে কাট বা বাঁশের শিলিং তৈরি করে তার ওপর খর বা টিনের ছাউনি দেয়া হয়। মাটির বাড়ি ঘর অনেক সময় দোতলা পর্যন্ত করা হতো। সব ঘর বড় মাপের হয়না। গৃহিনীরা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মাটির দেয়ালে বিভিন্ন রকমের আল্পনা এঁকে ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতেন। প্রাকৃতিক দূর্যোগ ও বর্ষা মৌসুমে মাটির বাড়ি ঘরের ক্ষতি হয় বলে বর্তমান সময়ে দীর্ঘ স্থায়ীত্বের কারণে গ্রামের মানুষরা ইটের বাড়ি নির্মাণের আগ্রহী হচ্ছেন। ভূমিকম্প বা বন্যা না হলে একটি একটি মাটির বাড়ি শত বছরেও বেশি স্থায়ী হয়। কিন্তু বর্তমান সময়ে কালের বিবর্তনে ইটের দালানকোটা আর বড় বড় অট্রালিকার কাছে হার মানছে মাটির বাড়ি ঘর। উপজেলার শাহাগোলা গ্রামের আজাদ সরদার, ভবানীপুরের রমজান আলী, রসুলপুর গ্রামের মোবারক আলী, হাতিয়াপাড়া গ্রামের হাফিজুল, আয়তালী ও আব্দুস সামাদসহ আরো অনেকে জানান, মাটির তৈরি এই বাড়ি ঘর তারা পেয়েছেন পৈত্রিক ভাবে। তাদের পূর্ব পুরুষরাও এই মাটির তৈরি বাড়িতেই জীবন কাটিয়ে গেছেন। তাই এখনও তারা এই বাড়িগুলো ভাঙ্গেনি। মাটির বাড়ি বসবাসের জন্য আরামদায়ক হলেও যুগের পরিবর্তনে আধুনিকতার সময় অধিকাংশ মাটির বাড়ি ঘর ভেঙ্গে অধিক নিরাপত্তা ও স্বল্প জায়গায় দীর্ঘ স্থায়ী ভাবে অনেক লোকের নিবাস কল্পে গ্রামের মানুষরা ইটের বাড়ি ঘর তৈরি করছেন বলে অনেকের ধারনা। গরিব মানুষগুলো আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিবর্তন হওয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে চিরায়ত বাংলার মাটির তৈরি এসব ঘর।# একুশে সংবাদ ডটকম//এম এম//২১-১১-২০১৫

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1