সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

অনিরাপদ নয় মোটেই বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৩:১৫ পিএম, নভেম্বর ৮, ২০১৫
একুশে সংবাদ : বাংলাদেশ সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ দেশ, মোটেই অনিরাপদ নয় বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার (৮ নভেম্বর) বেলা ১১টার পর গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। নেদারল্যান্ডস সফর নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। গত ৩ নভেম্বর দ্বিপাক্ষিক সফরে নেদারল্যান্ডস যান প্রধানমন্ত্রী। ব্যস্ততম এ সফর শেষে তিনি ঢাকায় ফেরেন ৬ নভেম্বর। সাম্প্রতিক বিদেশি হত্যা ও কিছু দেশের সতর্কতা জারির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিউইয়র্কে আওয়ামী লীগ নেতাকে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। ফ্লোরিডায় মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করা হয়েছে। কেন এই প্রবাসীকে সেখানে হত্যা করা হলো, সে প্রশ্ন কি আমেরিকান প্রেসিডেন্টকে কেউ করতে পারবেন? তিনি বলেন, এখন সাম্প্রতিক বিদেশি হত্যায় কেউ বাংলাদেশের নিরাপত্তা নিয়ে যদি প্রশ্ন তোলে, তবে এ দেশে আইএস আছে বলে প্রমাণ করতে যারা চক্রান্ত করছে তাদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে কথা বলা হবে। বাংলাদেশের কেউ কি এটি প্রমাণ করতে চান? আমেরিকায় প্রতিদিন কতো হত্যাকাণ্ড ঘটে, সে তুলনায় বাংলাদেশ সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ দেশ, কোনোভাবেই অনিরাপদ নয়। শেখ হাসিনা বলেন, চক্রান্তকারীরা বাংলাদেশকে অনিরাপদ প্রমাণ করতে ব্যস্ত, যেন কোনোভাবে বাংলাদেশে ঢুকে হামলা করতে পারে। কিন্তু আমরা কি তাদের সে সুযোগ করে দেবো? বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সংলাপের আহ্বানের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনি যদি কারও বাড়িতে যান, সে যদি ঢুকতে না দিয়ে ফিরিয়ে দেয় তাহলে কেমন লাগবে? এরপরও এ বিষয়ে আবার কেন প্রশ্ন করেন? ঐক্যের কথা কোন উদ্দেশ্যে বলছেন তিনি? আমি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, আমাকে তার কাছে কতো ঝাড়ি খেতে হয়েছে। তিনি সংলাপের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়ে বলেন, যখন সত্যিকারভাবে জাতীয় ঐকমত্য তৈরির সুযোগ এসেছিল, তখন তিনি সাড়া দেননি। নির্বাচন বানচাল করার জন্য তিনি পুড়িয়ে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করেছেন। তার কাছে গেলেই এখন পোড়া মানুষের গন্ধ পাবো। এতোদূর পর্যন্ত গেলাম, ফোন দিলাম। তিনি নির্বাচন বয়কটই কেবল করেননি, মানুষকে হত্যা করেছেন। প্রিসাইডিং অফিসারকে পর্যন্ত ‍পুড়িয়েছেন। যখন জাতির প্রয়োজন ছিলো তখন তার সাড়া আসেনি। এখন বাংলাদেশে এতো রাজনৈতিক দৈনতা পড়েনি যে খুনির সঙ্গে বসতে হবে। যার হাত দিয়ে মানুষ পোড়ে, তার সঙ্গে বসার কোনো দরকার নেই। তবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা যদি বলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হওয়া উচিত, এটা সমর্থন করি। তারপর ভেবে দেখা যাবে। দয়া করে খুনির সঙ্গে বসতে অনুরোধ করবেন না। তিনি বলেন, মানুষ হত্যা করে একটা পরিস্থিতি বানিয়ে সংলাপের কথা যেহেতু বলছেন, তাতে বোঝা যায় এতে তার হাত আছে। এটা স্পষ্ট। অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জ্বালাও-পোড়াও করে মানুষ মেরে যখন উদ্দেশ্য সফল করতে পারেনি, তখন এবার গুপ্তহত্যা চালানো হচ্ছে। এদেশে আইএস আছে বলে প্রমাণের চেষ্টা চলছে। যদি তা প্রমাণ করা যায়, তাহলে কী হবে সেটা আফগানিস্তান, পাকিস্তান, ইরাক, সিরিয়ার কথা ভাবলেই হবে। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক চক্রের সঙ্গে দেশের একটি গোষ্ঠীও এ চক্রান্তে লিপ্ত। দেশবাসী যদি সচেতন না হোন তাহলে সর্বনাশ। নিরাপত্তা নিয়ে অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কথায় আছে- ‘বনের বাঘে খায় না, মনের বাঘে খায়’। সবাইকে সাহস রাখতে হবে। খুনের কতো তালিকা হয়। ১৯৮১ সালে যেদিন দেশের মাটিতে পা রেখেছিলাম, সেদিন থেকেই সব তালিকার শীর্ষে রয়েছি আমি। আমি তো ভীত নই। এমনিতেই গভীর চক্রান্ত চলছে এ দেশকে অনিরাপদ প্রমাণ করতে। নিজেরা সতর্ক-সাহসী না হলে চক্রান্তকারীদের উদ্দেশ্য সফলের সুযোগ বেড়ে যাবে। তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে যতটুকু নিরাপত্তা দেওয়া দরকার, সেটা দেওয়া হচ্ছে। যখনই যেখানে যা হচ্ছে, সঙ্গে সঙ্গে তার সমাধানের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এখন কোথাও যদি সন্ত্রাসীদের অস্তিত্ব পাওয়া যায়, তবে তাদের ধরতে সাংবাদিকসহ সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে। এসময় ধর্ম নিয়ে বিকৃত রুচির লেখালেখি না করারও পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগে এ ধরনের লেখা যেন না হয়। আমরা ধর্মনিরপেক্ষ। কিন্তু সেক্যুলারিজম মানে ধর্মহীনতা নয়। তাই কেউ ধর্ম মানবে কি মানবে না, সেটা তার ব্যাপার। কিন্তু অন্যের ধর্মে আঘাত দিতে পারবে না। বিকৃত লেখা মানবিক গুণ নয়। কারও অনুভূতি যেন আঘাতপ্রাপ্ত না হয় সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখাই মানবিকতা। তিনি দেশবাসীকে সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, প্রত্যেকের মনে সাহস থাকতে হবে। রাষ্ট্র নিরাপত্তা দেবে, নিজেকেও সচেতন হতে হবে। জামায়াত নিষিদ্ধের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়টি আদালতে প্রক্রিয়াধীন। আদালতের বিষয়। আদালত সিদ্ধান্ত নেবেন। লেখক-প্রকাশক-ব্লগার হত্যার বিচার প্রসঙ্গে আরেক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, লেখক-ব্লগার হত্যাকারীরা ধরা পড়ছে। তদন্ত হচ্ছে। খুনিদের কোনো তথ্য দিলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। অবশ্যই সব খুনের বিচার হবে।

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1