সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে রামুর নিম্নাঞ্চলে প্লাবন

প্রকাশিত: ১০:৩০ পিএম, জুলাই ২৭, ২০১৫
গত দুদিন ধরে বাঁকখালী নদীর পানি বিপদসীমার উপর প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া ইতিপূর্বে বন্যায় ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি প্রবেশ করে বিভিন্ন নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে। দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল আলম জানিয়েছেন, মিঠাছড়ি ছড়ারকূল এলাকায় তিনটি বসত ঘর সম্পূর্ণভাবে ধসে গেছে। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অনেকগুলো। তিনি আরও জানান, বন্যায় এ ইউনিয়নের প্রায় তিন হাজার বসত ঘর পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ইউনিয়নের চরপাড়া, ঘাটপাড়া, উমখালী, পশ্চি ধরপাড়া, আজিমুদ্দিন সিকাদারপাড়া, জনুমাতবরপাড়া, চাইল্যাতলী, সিকদারপাড়া, কাটিরমাথা, কাঠিরমাথা নতুন বাজার, কাইম্যারঘোনা সহ ইউনিয়নের সবকটি গ্রামে পানি ঢুকেছে বলে জানান তিনি। ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ভূট্টো জানান, অফিসের চর ডাক বাংলো, হাইটুপি ভুত পাড়া, জাদিমুরা এলাকার ভাঙা দিয়ে বন্যার পানি ঢুকে পুরো ইউনিয়ন ডুবে গেছে। এতে ইউনিয়নের প্রায় ছয় হাজার বসত ঘর পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এরমধ্যে মধ্যম মেরংলোয়া, পূর্ব মেরংলোয়া, পশ্চিম মেরংলোয়া, উত্তর ফতেখাঁরকূল, অফিসের চর, চর পাড়া, সিকদারপাড়া, তেচ্ছিপুল সিকদারপাড়া, দ্বীপ ফতেখাঁরকূলসহ অনেক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এখনও সরকারি সহায়তা না পেলেও তিনি বন্যার্তদের শুকনো খাবার সরবরাহ করছেন বলে জানান। জোয়ারিয়ানালা ইউপি চেয়ারম্যান এমএম নুরুচ ছাফা জানিয়েছেন, প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে চা বাগান, বড়ুয়া পাড়া, তিনঘর পাড়া, গাইন পাড়া, আশকরখিল, চৌধুরী পাড়া, পশ্চিম নোনাছড়ি, নন্দাখালী, মুরা পাড়া, বড় পাড়া, উত্তরপাড়া, খিলামুরা, ইলিশিয়াপাড়া, ঘোনারপাড়াসহ ২০টি গ্রাম পানিতে ডুবে গেছে। এসব গ্রামে প্রায় ৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে মানবেতর সময় পার করছে বলে তিনি জানান। গর্জনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান তৈয়ব উল্লাহ চৌধুরী জানান, ইউনিয়নের কৈয়াজর বিল, ডেইঙ্গারচর, বোমাংখিল, পশ্চিম বোমাংখিল, স্কুলপাড়া, জুমছড়ি, পশ্চিম জুমছড়ি, জামছড়ি, ইদ্রিসনগরসহ ১৫টি গ্রাম পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তিনি জানান, এক মাস আগে সৃষ্ট বন্যায় বাঁকখালী নদীর উপর বিধ্বস্ত খালেকুজ্জামান সেতু পারাপারের জন্য নির্মিত সাঁকোটি রোববার দুপুরে নদীতে তলিয়ে গেছে। ফলে গর্জনিয়া-কচ্ছপিয়া ইউনিয়ন এবং পার্শ্ববর্তী বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার লক্ষাধিক মানুষের বিভিন্ন সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে বলে তিনি জানান। কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের নাপিতের চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম জানিয়েছেন, বাঁকখালী নদীর পানি ও পাহাড়ি ঢলে ইউনিয়নের নাপিতের চর, ফাক্রিকাটা, হাজির পাড়া, তিতার পাড়া, মিয়াজী পাড়া, মৌলভীকাটা, বড় জামছড়ি, ছোট জামছড়ি, ফুলতলী, তুলাতলীসহ ১৫টি গ্রামের ৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ইউনিয়নের বৃহত্তর গর্জনিয়া বাজার, গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়ি, গর্জনিয়া ফইজুল উলুম মাদ্রাসাসহ অনেক শিক্ষা, ধর্মীয় ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকেছে। কাউয়ার খোপ ইউনিয়ন নিকাহ রেজিস্ট্রার এম আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, প্রবল বর্ষণে বাঁকখালী নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় এ ইউনিয়নের পশ্চিম কাউয়ার খোপ, বৈলতলী, মধ্যম কাউয়ার খোপ, চরপাড়া, লামার পাড়া, পশ্চিম মনিরঝিল, মনিরঝিল, ফরেস্ট অফিস, গাছুয়াপাড়াসহ কয়েকটি গ্রামের দুই হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় এখানকার মানুষ উপজেলা সদর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বলে তিনি জানান। সরেজমিনে দেখা যায়, রামুর ফকিরা বাজার-জাদিমুরা সড়কের হাইটুপি ভুত পাড়া, রামু-মরিচ্যা সড়কের ডাকবাংলো এলাকাসহ রাজারকুল ইউনিয়নের পূর্ব রাজারকুল বড়ুয়া পাড়া, হাজি পাড়া, নয়া পাড়া, নাইয়া পাড়া, দক্ষিণ পাড়া, নাশিকুল, মুরা পাড়া, শিকল ঘাট, পশ্চিম পাড়া, ফতেখাঁরকূল ইউনিয়নের অফিসের চর, চরপাড়া, লামারপাড়া, মধ্যম মেরংলোয়া, পূর্ব মেরংলোয়া, পশ্চিম মেরংলোয়া, চাকমারকুল ইউনিয়নের তেচ্ছিপুল, কলঘর, মোহাম্মদপুরা, শ্রীমুরা, কোনার পাড়া এলাকায় বন্যার পানিতে একাকার হয়ে গেছে। এদিকে রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাসুদ হোসেন জানান, প্রবল বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। তবে আশ্রয় কেন্দ্রে বেশি মানুষ আসেনি বলে দাবি করে তিনি জানান, রোববার সকাল থেকে দুর্গত লোকজনকে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া জেলা প্রশাসনের কাছে পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা দেওয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছে।

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1