সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

মেহেদির ইতিহাস

প্রকাশিত: ১০:৫৯ এএম, জুলাই ৩, ২০১৫
একুশে সংবাদ :উর্দু অথবা হিন্দিতে শব্দটা ‘হিনা’। বাংলায় যাকে বলা হয় মেহেদি। প্রাচ্যে-পাশ্চাত্যে এই মেহেদির রয়েছে বহুবিধ ব্যবহার। নারী-পুরুষের সৌন্দর্য্য সচেতনতা থেকে শুরু করে ডাক্তারি শাস্ত্রে পর্যন্ত মেহেদির ব্যবহার হয়ে থাকে। কিন্তু পৃথিবীর মানুষ ঠিক কবে থেকে মেহেদির ব্যবহার শুরু করেছিল তা নির্দিষ্ট করে বলা খুবই মুশকিল।     একদল গবেষক বলছেন আজ থেকে পাঁচ হাজার বছর আগে থেকেই পাকিস্তান, ভারত, আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যে মেহেদি ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তবে এই দাবির পক্ষে অতটা নিরেট প্রমাণাদি পাওয়া যায় না। অপর এক পক্ষের দাবি, খ্রিষ্টপূর্ব ৭০ লাখ বছর আগে যখন পৃথিবীতে নিউলিথিক মানুষ বসবাস করতো। আর সেই প্রজাতির মানুষের মধ্যে কাতাল হুয়ুক গোষ্ঠির মানুষ তাদের হাত অলঙ্কৃত করার কাজে মেহেদি ব্যবহার করতো। আর সেই সমাজে মেহেদির সঙ্গে প্রত্যক্ষ যোগাযোগ ছিল উর্বরতার দেবীর।   HEENA শুরুর দিককার মানবসভ্যতাগুলোর মধ্যে ব্যবিলন, এশিরিয়, সুমেরিয়, সেমেটিক, উগারিটি এবং ক্যান্নাইটিসদের মধ্যে মেহেদির ব্যবহার ছিল। উগারিটি কিংবদন্তী ‘বাল’ এবং ‘আনথ’ উপাখ্যানে দেখা যায়, বিয়ের সময় নারীদের সজ্জিত করার জন্য মেহেদি ব্যবহার করা হতো। চতুর্থ এবং পঞ্চম শতকে যে পশ্চিম ভারতেও মেহেদির ব্যবহার হতো তার প্রমাণ ভারতের বিভিন্ন গুহাচিত্র, যার মধ্যে অন্যতম হলো অজন্তা।   এছাড়াও শ্রীলঙ্কাতেও একই রকমের চিত্র পাওয়া যায়। আর এই চিত্রকলা প্রমাণ করে যে, ভারতে মোঘলরা প্রবেশের কমপক্ষে সাত শতক আগেই মেহেদির ব্যবহার হতো, তাই মোঘলরা ভারতে মেহেদির ব্যবহার নিয়ে এসেছে ব্যাখ্যাটা পুরোপুরি সঠিক নয়। moumi-876655 বর্তমানে বিশ্বের প্রায় সব স্থানেই মেহেদির ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। আশির দশকের শুরুর দিকে ট্যাটুর ন্যায় শরীর অলঙ্করণ করতে যুক্তরাজ্যে মেহেদির ব্যবহার শুরু হয়েছিল। ম্যাডোনা, স্টিফানি, ইয়াসমিন ব্লেথ, লিভ টেইলর এবং জিনার মতো শক্তিশালী অভিনেত্রীরাও তখন মেহেদিকে সাজসজ্জার অংশ হিসেবে গ্রহন করেছিল। অনেক গবেষক দাবি করেন যে, পৃথিবীতে আজকে যে ট্যাটু শিল্প দেখা যাচ্ছে, তা বিস্তারের বহু আগেই মেহেদি দিয়ে শরীর অঙ্কিত করা হতো।   প্রাচীনকালে মেহেদিকে অবশ্য শুধুই শরীর চর্চার জন্য ব্যবহার করা হতো তা নয়। মাথাব্যথা, পেটেব্যথা, পোড়া, আঘাতপ্রাপ্ত স্থান, জ্বর কমানোর জন্য, পায়ের পাতার ব্যথা কমানোর জন্য এবং চুল পড়া কমানোর জন্যও চিকিৎসাশাস্ত্রে মেহেদির ব্যবহার ছিল। এরবাইরে মধ্যপ্রাচ্যে রোদ থেকে চামড়া বাঁচানোর জন্যও মেহেদি ব্যবহার করা হতো। বর্তমানেও অনেক অঞ্চলে টোটকা চিকিৎসা হিসেবে মেহেদিকে প্রধান অনুষঙ্গ হিসেবে ধরা হয়। তবে চুলে দেয়ার ক্ষেত্রে মেহেদির সঙ্গে চা, কফি গুড়ো এবং লেবু মিলিয়ে ভিন্ন ধরণের মিশ্রন তৈরি করা হতো, যা চুল পড়া রোধে দীর্ঘদিন মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকায় ব্যবহার হতো। unique-henna-tattoos-on-girl-both-feet স্থানভেদে মেহেদির রং ভিন্ন হয়। আফ্রিকার মেহেদির রং অনেক বেশি গাঢ় এবং দীর্ঘস্থায়ী। কিন্তু দক্ষিণ এশিয়ার দিকে যে মেহেদি পাওয়া যায় তার রং অতবেশি উজ্জ্বল না হলেও মোটামুটি দীর্ঘস্থায়ী হয়ে থাকে। এর কারণ হিসেবে বলা হয়, এশিয়ায় যে মেহেদি গাছ পাওয়া যায় তার শেকড় মূলত প্রাচীন মিসর।     মিসরের মেহেদিতে যে ঔজ্জ্বল্যতা পাওয়া যায় তা এশিয়ার মেহেদিতেও বিদ্যামান। আর মিসর থেকে মধ্যপ্রাচ্য পাড়ি দিয়ে এই অঞ্চলে মেহেদি প্রবেশ করায়,এরসঙ্গে ধর্মও অনেকখানি মিশে গেছে। ভারতের অনেক স্থানে মেহেদিকে ইসলাম ধর্মের রীতি হিসেবে ধরা হয়। কিন্তু রাজস্থান, পাঞ্চাব ইত্যাদি অঞ্চলের জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সবাই মেহেদি ব্যবহার করে।   একুশে সংবাদ/এম/ইয়াসমিন/০৩/০৭/১৫

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1