সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

সৌম্যর শতকে পাকিস্তান বাংলাওয়াশ

প্রকাশিত: ১০:৩৯ পিএম, এপ্রিল ২২, ২০১৫
একুশেসংবাদ :  ৪৭ রানে শেষ ৮ ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে পাকিস্তানকে আড়াইশ রানে বেধে রেখেছিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা সাকিব আল হাসানরা। সুযোগ কাজে লাগাতে ভুল করেননি বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। তরুণ সৌম্য সরকারের প্রথম শতকে মাঝারি লক্ষ্য তাড়া করে দলকে সহজ জয়ই পেয়েছে স্বাগতিকরা। অধিনায়ক আজহার আলির প্রথম শতকের পরও তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে স্বাগতিকদের কাছে ৮ উইকেটের হার এড়াতে পারেনি পাকিস্তান। এ নিয়ে টানা দ্বিতীয় ও সব মিলিয়ে দশমবারের মতো সিরিজের সব ম্যাচে জিতল বাংলাদেশ। এর আগে দুইবার করে নিউ জিল্যান্ড, জিম্বাবুয়ে ও কেনিয়া এবং একবার করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, আয়ারল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডকে সিরিজের সব ম্যাচে হারায় বাংলাদেশ। ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতে আইসিসির ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও পাকিস্তানের সঙ্গে ব্যবধান কমিয়েছেন মাশরাফিরা। বুধবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৪৯ ওভারে ২৫০ রানে অলআউট হয়ে যায় পাকিস্তান। জবাবে ৩৯ ওভার ৩ বলে ২ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। দেশের মাটিতে এ নিয়ে টানা আট ওয়ানডেতে জিতল তারা। তামিম ইকবালের সঙ্গে শতরানের উদ্বোধনী জুটিতে বাংলাদেশকে দারুণ সূচনা এনে দেন সৌম্য। শুরুতে দেখেশুনে খেললেও সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেন আগের দুই ম্যাচে শতক করা তামিম। ১৪৫ রানের উদ্বোধনী জুটিতে তার অবদান ৬৪ রান। দ্বি-পাক্ষিক সিরিজে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের নিজের রেকর্ডই ভাঙা তামিম ফিরেন জুনায়েদ খানের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে। তামিমের ৭৬ বলের ইনিংসটি গড়া ৮টি চার ও একটি ছক্কায়। পরের ওভারে মাহমুদউল্লাহকে বোল্ড করে বাংলাদেশকে চাপে ফেলেন জুনায়েদ। কিন্তু সৌম্য ও ছন্দে থাকা মুশফিকের পাল্টা আক্রমণে চাপ কেটে সহজ জয়ই পায় বাংলাদেশ। আজহারের বলে ডিপ মিডউইকেট দিয়ে ছক্কা হাকিয়ে নিজের প্রথম শতকে পৌঁছান সৌম্য। নিজের রান তিন অঙ্কে নিয়ে যেতে ৯৪ বল খেলেন এই বাঁহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান। সৌম্য অপরাজিত থাকেন ১২৭ রানে। তার ১১০ বলের অসাধারণ ইনিংসটি ১৩টি চার ও ৬টি ছক্কা সমৃদ্ধ। এই ইনিংস খেলার পথে দাপটের সঙ্গে খেলেন পাকিস্তানের সব বোলারদের। চার হাঁকিয়ে জয় এনে দেয়া মুশফিক অপরাজিত থাকেন ৪৯ রানে। অবিচ্ছিন্ন তৃতীয় উইকেটে সৌম্যর সঙ্গে ৯৭ রানের জুটি উপহার দেন তিনি। বোলিং আক্রমণে ধার বাড়াতে ওমর গুল ও জুলফিকার বাবরকে ফেরায় পাকিস্তান। তাতেও লাভ হয়নি। ৬৩ বল অব্যবহৃত রেখে জয় তুলে নেয় স্বাগতিকরা। সৌম্যর জবাব জানা ছিল না তাদের কারোরই। পাকিস্তানের শক্তিশালী বোলিং আক্রমণকে এলোমেলো করে ইচ্ছেমত শট খেলেন সৌম্য। জয়ের যত কাছে দলকে নিয়ে যাচ্ছিলেন সৌম্য-মুশফিক গ্যালারিতে তত বাড়ছিল ভক্তদের উল্লাস। সৌম্যর শতকের পরই গ্যালারিতে জয় উৎসব শুরু করেন তারা। মুহুর্মুহু গর্জনে ফেটে পড়া ভক্তরা ফিরেন বাংলাওয়াশের সুখস্মৃতি নিয়ে। এর আগে অভিষিক্ত সামি আসলামের সঙ্গে ৯১ রানের উদ্বোধনী জুটিতে পাকিস্তানকে ভালো সূচনা এনে দেন আজহার। মাশরাফি প্রথম ৫ ওভারে ১৭ রান দিলেও ভালো করতে পারেননি অন্য দুই পেসার তাসকিন আহমেদ ও রুবেল হোসেন। তবে স্পিনাররা আক্রমণে এলে অতিথিরা আর রানের গতি ধরে রাখতে পারেনি। বাঁহাতি ব্যাটসম্যান আসলামকে মুশফিকের গ্লাভসবন্দি করে ১৮ ওভার স্থায়ী উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন নাসির হোসেন। প্রথম ওয়ানডেতে ৪ ও দ্বিতীয় ওয়ানডে শূন্য রান করা মোহাম্মদ হাফিজ আবার ব্যর্থ হয়েছেন। এবার ৪ রান করে আরাফাত সানির বলে বোল্ড হয়ে যান তিনি। দ্রুত দুই উইকেট হারালেও তৃতীয় উইকেটে ৯৮ রানের জুটিতে প্রতিরোধ গড়েন আজহার ও হারিস। আজহার শতক ও হারিস অর্ধশতকে পৌঁছে দলকে বড় সংগ্রহের পথে রেখেছিলেন। শতক করে আজহারের বিদায়ে ভাঙে তৃতীয় উইকেট জুটির ১৭.২ ওভারের প্রতিরোধ। সাকিবের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ১০১ রানের দৃঢ়তাভরা ইনিংস খেলেন আজহার। তার ১১২ বলের অধিনায়কোচিত ইনিংসটি গড়া ১০টি চারে। নিজের পরের ওভারে ফিরতি ক্যাচ নিয়ে মোহাম্মদ রিজওয়ানকে ফেরান সাকিব। মাঝখানের ওভারে বিপজ্জনক হারিসকে ফেরান মাশরাফি। তার বলে মুশফিকের গ্লাভসবন্দি হওয়ার আগে ৫২স রান করেন হারিস। দ্বিতীয় স্পেলে টানা পাঁচ ৫ ওভার বল করে ২৭ রান দিয়ে দুটি উইকেট নেন মাশরাফি। তার এই পাঁচ ওভারের তিনটি ছিল ব্যাটিং পাওয়ার প্লের সময়ে করা। সব মিলিয়ে ৪৪ রানে ২ উইকেট নেন ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’ মাশরাফি। বাঁহাতি স্পিনার সাকিব দুই উইকেট নেন ৩৪ রানের খরচায়। ফাওয়াদ আলমকে আউট করে নিজের দ্বিতীয় উইকেট নেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। ফাওয়াদের বিদায়ে অবদান কম নয় অনেকটা দৌড়ে ঝাঁপিয়ে চমৎকার ক্যাচ নেয়া নাসিরের। এক সময় পাকিস্তানের সংগ্রহ ছিল ২ উইকেটে ২০৩ রান। সেখান থেকে আরো বড় স্কোরের সম্ভাবনা জাগিয়েও রানের বেশি করতে পারেনি অতিথিরা। শেষ দিকে মাশরাফি, সাকিব, আরাফাত ও রুবেলের দারুণ বোলিং রানেই অলআউট  হয়ে যায় পাকিস্তান। ৪৭ রানে পাকিস্তান শেষ ৮ উইকেট হারানোয় বড় অবদান রয়েছে আরাফাত (২/৪৩) ও রুবেলের (২/৪৩)। সংক্ষিপ্ত স্কোর: পাকিস্তান: ৪৯ ওভারে ২৫০ (আজহার ১০১, আসলাম ৪৫, হফিজ ৪, হারিস ৫২, রিজওয়ান ৪, ফাওয়াদ ৪, নাসিম ২২, ওয়াহাব ৭, গুল ০, বাবর ১*, জুনায়েদ ৪; সাকিব ২/৩৪, আরাফাত ২/৪৩, রুবেল ২/৪৩, মাশরাফি ২/৪৪, নাসির ১/৩৭) বাংলাদেশ:৩৯.৩ ওভারে ২৫১/২ (তামিম ৬৪, সৌম্য ১২৭*, মাহমুদউল্লাহ ৪, মুশফিক ৪৯*; জুনায়েদ ২/৬
একুশেসংবাদ.কম/এইচকেএস/২২.০৪.১৫।

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1