সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

বাংলাওয়াশের জন্য টাইগারদের লক্ষ্য ২৫১ রান

প্রকাশিত: ০৬:৩০ পিএম, এপ্রিল ২২, ২০১৫
একুশে স্পোর্টস ডেস্কঃ অভিষিক্ত সামি আসলামকে নিয়ে যেভাবে জুটি গড়েছিলেন আজহার আলি, কিংবা তৃতীয় উইকেটে ৯৮ রানের জুটি গড়ে ফেলার পর বোদ্ধারা পাকিস্তানের সংগ্রহ কত হবে তা নিয়েই হিসাব-নিকাশ শুরু করে দিয়েছিল। কেউ বলছিল ৩২০ হবে। আবার কারও কারও মন্তব্য, কম করে হলেও ৩৫০ তো পার হবেই! কত জ্বল্পনা, কত কল্পনা।   সব কিছুকে ছাপিয়ে গেলো ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ পাকিস্তান। তবে এবার ‘আনপ্রেডিক্টেবিলিটি’ পক্ষে না গিয়ে গেলো বিপক্ষে। কোথায় ৩০০ কিংবা ৩৫০। ২৫০ রান তুলতেই ঘাম ঝরাতে হয়েছে আজহার আলির দলকে। তাও ৪৯ ওভারে অলআউট হয়ে স্বাগতিক বাংলাদেশের সামনে ২৫০ রান করতে সক্ষম হলো সফরকারী পাকিস্তান।   অথচ ১০৫ রানে ২ উইকেট হারানোর পর হ্যারিস সোহেলকে নিয়ে পাকিস্তানকে ২০৩ রান পর্যন্ত টেনে নিয়ে গিয়েছিলেন অধিনায়ক আজহার আলি। তখন মাত্র ৩৯ ওভারের খেলা চলছিল। এরই মধ্যে ক্যারিয়ারে প্রথমবারেরমত সেঞ্চুরির মাইলফলক স্পর্শ করলেন আজহার।   এরপরই ভুল করে বসলেন পাকিস্তানের অনভিজ্ঞ অধিনায়ক। সাকিবের আর্মার বুঝতেই পারলেন না। ব্যাকফুটে গিয়ে কাভার ড্রাইভ করতে চাইলেন। হয়ে গেলেন বোল্ড। এই যে শুরু হলো পাকিস্তানের ‘ডায়রিয়া’। আর থামানো গেলো না। ২০৩ থেকে ২৫০- এই ৪৭ রানে গেলো পাকিস্তানিদের ৮ উইকেট।   বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার তুখোড় নেতৃত্বের কাছেও নাস্তানাবুধ হতে হয়েছে পাকিস্তানকে। শুরুতেই যখন তিনি দেখলেন পেসাররা মার খাচ্ছে, দ্রুত স্পিনার নিয়ে আসলেন তিনি। নাসির, আরাফাত সানিকে দিয়ে ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি করে চলেছেন তিনি প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের ওপর। সব মিলিয়ে আটজন বোলার ব্যবহার করলেন মাশরাফি।   তিনি নিজে, সঙ্গে তাসকিন, রুবেল, নাসির, আরাফাত সানি, সাকিব আল হাসান, সাব্বির রহমান এবং মাহমুদুল্লাহ রিয়াদদের দিয়ে বোলিং করিয়েছেন। ২টি করে উইকেট নিয়েছেন মাশরাফি, রুবেল, সাকিব এবং আরাফাত সানি। ১টি উইকেট নেন নাসির। অপরজন হলেন রানআউট।   বিরল এক হোয়াইটওয়াশের সামনে দাঁড়িয়ে ক্রিকেটের পরাশক্তি পাকিস্তান। প্রথম দুই ম্যাচ হেরে ইতিমধ্যেই সিরিজ খুইয়েছে আজহার আলির দল। তৃতীয় ম্যাচে তাদের হোয়াইট ওয়াশ এড়ানোর চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন অধিনায়ক আজহার আলি। পাকিস্তানের পক্ষে ইনিংস ওপেন করতে নামলেন আজহার আলি এবং অভিষিক্ত সামি আসলাম।   বাংলাদেশের পক্ষে বল হাতে ইনিংস ওপেন করলেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। এক অধিনায়ককে বোলিং করলেন আরেক অধিনায়ক। প্রথম চার বল ডট দিলেন মাশরাফি। পঞ্চম বলে এসে ২ রান নিয়ে পাকিস্তানের ইনিংসের খাতা খোলেন আজহার। এরপর শেষ বলে এসে আরও এক রান নেন তিনি। অথ্যাৎ, প্রথম ওভারে ৩ রান নিয়ে পাকিস্তানের পক্ষে সূচনা এনে দেন আজহার-সামি জুটি।   পাকিস্তান অনুর্ধ্ব-১৯ দলকে নেতৃত্ব দেওয়া বাঁ হাতি ব্যাটসম্যান সামি আসলাম কিন্তু প্রথম থেকেই মারমুখি। ব্যাটিং স্টাইলও ক্ল্যাসিক বলা যায়।অভিষেকই সামি আসলাম বুঝিয়ে দিলেন, পাকিস্তান দলে অনেক দিন টিকে থাকার জন্য এসেছেন তিনি।   সঙ্গে চলতি সিরিজে পাকিস্তানের ধারাবাহিক ব্যাটসম্যান আজহার আলিও রয়েছেন ফর্মে। ওপেনিং জুটির ওপর ভর করে সূচনাটাও দুর্দান্ত হলো পাকিস্তানের। ১৮ ওভারেই ৯১ রানের জুটি গড়ে ফেলেন এ দু’জন। অবেশেষে নাসির হোসেনের বলে বিচ্ছিন্ন হলো এই জুটি। ৪৫ রান করা সামি আসলামকে উইকেটের পেছনে মুশফিকের হাতে ক্যাচ দিতে বাধ্য করলেন নাসির হোসেন।   তার আউটসুইঙ্গার বলটিকে খোঁচা দিতে গিয়েই ব্যাটের কানায় লাগান সামি আসলাম। ৫০ বলে ৭টি বাউন্ডারিতে ৪৫ রান করে আউট হলেন অভিষিক্ত সামি। ওপেনিং জুটি ভাঙার পর ক্রিজে নামেন মোহাম্মদ হাফিজ।   আইসিসি থেকে অ্যাকশন ক্লিয়ারিং পাওয়ার পর এটাই তার প্রথম ম্যাচ। তবে ব্যাট হাতে আগের দুই ম্যাচের ধারাবাহিকতারই প্রমান দিলেন। ১৫ বল খেলে মাত্র ৪ রান করে আরাফাত সানির বলে বোল্ড হয়ে গেলেন হাফিজ। ১০৫ রানে ঘটলো দ্বিতীয় উইকেটের পতন। প্রথম ম্যাচেও আরাফাতের বলে বোল্ড হয়েছিলেন হাফিজ। সেদিন আউট হয়েছিলেন কোন রান না করেই। প্রথম ম্যাচে মাত্র ৪ রান করে রানআউট হয়েছিলেন তিনি।   ১০৫ রানে ২ উইকেট গেলেও ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি নিজেদের হাতে ধরে রেখেছে পাকিস্তান। ওপেনার আজহার আলি গড়ে ফেলেন ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি। ১১১ বলে ১০টি বাউন্ডারিতে তিন অংকের ঘর স্পর্শ করেন তিনি। যদিও শেষ পর্যন্ত সেঞ্চুরির পরের বলেই বোল্ড হয়ে সাকিবের হাতে উইকেট বিসর্জন দিতে হয়েছে আজহারকে।   আজহারের সঙ্গে দুরন্ত ফর্মে রয়েছেন হারিস সোহেলও। দু’জন মিলে ৯৮ রানের জুটি গড়ে বিচ্ছিন্ন হন। ইতিমধ্যে হাফ সেঞ্চুরির মাইলফলক স্পর্শ করে ফেলেছেন হারিস। ৫৫ বলে ১টি বাউন্ডারি আর ২টি ছক্কায় হাফ সেঞ্চুরি করেন তিনি। তবে দুর্ভাগ্য হারিস সোহেলের। ৪০তম ওভারের দ্বিতীয় বলে সুইপ শট খেলতে যান তিনি। কিন্তু বল ব্যাটের কানায় লেগে উঠে যায় আকাশে। মুশফিকই সেই ক্যাচ তালুবন্দী করে নেন। ২০৭ রানে ঘটলো চতুর্থ উইকেটের পতন। হারিস ফিরে গেলেন ৫৩ রানে।   চতুর্থ থেকে পঞ্চম হতে বেশিক্ষণ সময় লাগলো না। পরের ওভারেই সাকিব আল হাসানের ঘূর্ণিতে পড়ে তার হাতেই ফিরতি ক্যাচ দিয়ে দিলেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। ৬ বলে মাত্র ৪ রান করে আউট হয়ে গেলেন পাকিস্তানের এই তরুণ। টানা তিন ওভারে তিন উইটে হারাল সফরকারীরা।   ২ ওভার বিরতি দিয়ে আবারও উইকেট। এবার ঘাতক মাশরাফি। শিকার হলেন ফাওয়াদ আলম। ৪৪তম ওভারের প্রথম বলেই মাশরাফিকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ তুলে দেন ফওয়াদ। অনেক দুর দৌড়ে ক্যাচটি তালুবন্দী করলেন নাসির হোসেন।   প্রথম থেকেই বেশ পিটুনি খেলেছেন বাংলাদেশের স্পিডস্টার রুবেল হোসেন। দ্বিতীয় স্পেলে বোলিং করতে এসে অবশেষে উইকেটের দেখা পেলেন তিনি। ফেরালেন গত ম্যাচে হাফ সেঞ্চুরি করা ওয়াহাব রিয়াজকে। রুবেলের বল ব্যাকফুটে গিয়ে কাভারে খেলেন ওয়াহাব। ক্যাচ উঠে গেলে সহজেই তা তালুবন্দী করেন মাশরাফি।   এরপর অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হলেন উমর গুল। ৪৭তম ওভারের ৪র্থ বলে আরাফাত সানিকে শর্ট কভারে ঠেলে দিয়ে দ্রুত একটি রান নিতে যান গুল। তার আগেই ফিল্ডিং করে বল ফেরত পাঠান সাকিব। খুব সহজেই স্ট্যাম্প ভাঙেন আরাফাত। ২৪৪ রানে ঘটলো অষ্টম উইকেটের পতন।   ২৫৫ রানে ঘটলো ৯ম উইকেটের পতন। এবারও বোলার রুবেল হোসেন। গত ম্যাচে অপরাজিত ৭৭ রান করা সাদ নাসিমকে খুব সহজেই ফিরিয়ে দিলেন বাংলাদেশের এই পেসার। ২৪ বলে ২২ রান নিয়ে বলা যায় বিপজ্জনকই হয়ে উঠছিলেন তিনি। কিন্তু রুবেলের বলে শট খেলতে গিয়ে মিড অফে ক্যাচ তুলে দেন নাসিম। জায়গায় দাঁড়িয়ে ক্যাচ ধরলেন তাসকিন আহমেদ।   পাকিস্তানের সর্বশেষ উইকেটটিও তুলে নিতে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হলো না। ৪৯তম ওভারের শেষ বলেই আরাফাত সানির বলে পাকিস্তানের শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে সরাসরি বোল্ড হয়ে গেলেন পাকিস্তানের জুনায়েদ খান। ২৫০ রানেই অলাআউট হয়ে গেলো পাকিস্তান।     একুশেসংবাদ.কম/এইচকেএস/২২.০৪.১৫।

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1