সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

বিয়ের আগে পাত্রীর যে সব বিষয়গুলো জেনে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি!

প্রকাশিত: ১১:০৮ এএম, এপ্রিল ১৯, ২০১৫
একুশে সংবাদ : রূপ-সৌন্দর্য, ধন-সম্পদ, বংশমর্যাদা ও ধর্মভীরুতা- বৈবাহিক ক্ষেত্রে এ চারটি গুণের ওপর ভিত্তি করেই মূলত একটি নারীকে মূল্যায়ন করা হয় আবহমানকাল থেকেই। মানুষের জীবনের প্রতিটি বিষয় ও দিকের মতো বিবাহর ক্ষেত্রে পাত্রী নির্বাচনের ব্যাপারে বেশ গুরুত্ব প্রদান করেছে ইসলাম। পাত্রী নির্বাচনের শর্ত এবং মৌলিক গুণাবলী বাতিয়ে সর্তক করেছে প্রতিটি বিবাহযোহগ্য আগ্রহী পুরুষকে। বরপক্ষের প্রতি রাসুলুল্লাহ (সা.) -এর দিকনির্দেশনার প্রতি আমরা তাকালে দেখতে পাব সেখানে তিনি ধর্মপরায়ণ নারী নির্বাচনের পরামর্শ দিয়েছেন। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) রাসুলুল্লাহ (সা.) থেকে হাদিস বর্ণনা করেন যে, রূপ-সৌন্দর্য, ধন-সম্পদ, বংশমর্যাদা ও ধর্মভীরুতা- সাধারণত এ চার গুণের দিকে লক্ষ করে কোনো নারীকে বিয়ে করা হয়। শ্রোতা! তুমি ধার্মিককে গ্রহণ করে সাফল্যমণ্ডিত হও। আর নিরুৎসাহিত হইও না।’ (বোখারি, মুসলিম)। রাসুলুল্লাহ (সা.) এই হাদিসে স্বাভাবিক অবস্থার প্রতি খেয়াল করে কনের সর্বশ্রেষ্ঠ গুণ ধর্মপরায়ণতাকে সবশেষে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু পরেই বরের সফলতা ওই গুণটির মধ্যেই নিহিত, তা স্পষ্ট উল্লেখ করেছেন। শুধু তাই নয়, সবশেষে এ উদ্দেশ্যে উৎসাহব্যঞ্জক আরও একটি বাক্য জুড়ে দিয়েছেন। (শরহে নববি : ৩/২১২)। আদর্শ গৃহ গড়ার প্রথম সোপান হলো, এ গৃহের জন্য আদর্শময়ী সতী-সাধ্বী স্ত্রী নির্বাচন করা। তাই দাম্পত্য জীবন আরম্ভের শুরুতেই সহধর্মিণীর দ্বীনদারিতা ও ধার্মিকতা দেখে নেয়া একান্ত জরুরি। আল্লাহর রাসূল [সা.] বলেন, এমন সতী-সাধ্বী স্ত্রী বরণ করা উচিত, যে তোমাকে তোমার দ্বীন ও দুনিয়ার বিষয়ে সাহায্য করে; যা সব সম্পদ অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ।’ রাসূল [সা.] অন্যত্র বলেন, ‘পুণ্যময়ী ও অধিক সন্তানপ্রসূ নারীকে বিয়ে করো। কেয়ামতে তোমাদের সংখ্যাধিক্য নিয়ে সব আম্বিয়ার কাছে আমি গর্ব করব।’ (মুসনাদে আহমাদ : ৩/২৪৫)। রাসূল [সা.] বলেন, ‘সতী স্ত্রী এক সৌভাগ্যের সম্পদ; যাকে তুমি দেখে পছন্দ করো এবং যে তোমার মন মুগ্ধ করে, আর তোমার অবর্তমানে তার ব্যাপারে ও তোমার সম্পদের ব্যাপারে সুনিশ্চিত থাকে। পক্ষান্তরে অসতী স্ত্রী দুর্ভাগ্যের আপদ; যাকে দেখে তুমি অপছন্দ করো এবং যে তোমার মন মুগ্ধ করতে পারে না। যে তোমার ওপর মানুষের হামলা চালায়। আর তোমার অনুপস্থিতিতে তার ও তোমার সম্পদের ব্যাপারে সুনিশ্চিত হতে পারে না।’ (সিলসিলা সহিহা ১৮২, ইবনে হিব্বান)। রাসুলুল্লাহ [সা.] বলেছেন, ‘যখন তোমাদের কেউ নারীকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় তখন সে যেন তার এমন কিছু দেখে, যা তাকে তার সাথে বিয়েতে উৎসাহিত করে’ (আবু দাউদ : ২০৮২)। কনেকে একবার দেখে পছন্দ করা গেলে একবার দেখাই বিধান। কোনো কোনো নারীকে একবার দেখে তার সাথে বিয়ের মতো গুরত্বপূর্ণ চুক্তির সিদ্ধান্ত নেয়া য়ায় না। এ ক্ষেত্রে তাকে একাধিকবার দেখা বিহিত। ফিকহের ভাষ্য হচ্ছে, পাত্রের জন্য বিহিত পাত্রীকে বারবার দেখা, এমনকি যদি সে উ™ভূত পরিস্তিতিতে তিনবারের বেশিও দেখে- যাতে তার সামগ্রিক বিষয়টি পাত্রের কাছে সুস্পষ্ট প্রতিভাত হয়। (আর-রামলি, নেহায়া : ৬/১৮৬)। যদি পাত্র পাত্রীকে একবার দেখেই পরিতৃপ্ত হয়ে যায়, তবে তার জন্য একবারের অতিরিক্ত দেখা হারাম। কারণ এই দেখা হালাল করা হয়েছে অনিবার্য প্রয়োজনে। সুতরাং এখানে অনিবার্য প্রয়োজন বিবেচ্য (রাদ্দুল মুহতার : ৬/৩৭০)। এছাড়া আরো বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে একটি সুন্দর ও স্বার্থক দাম্পত্য জীবনের সঙ্গী নির্বাচনের ক্ষেত্রে যে সব বিষয়গুলোর প্রতিও বিশেষ লক্ষ্য রাখা উচিত। নিন্মে এমন কিছু বিষয়ই আলোচনা করা হলো- ১. পাত্রীর অতীত সম্পর্কের ব্যাপারেও যথেষ্ট ধারণা রাখুন : বিয়ের পর স্ত্রীর অতীত থেকে একজন প্রেমিক বা ভালোবাসার পুরুষ উঠে আসলে নিশ্চয়ই আপনার ভালো লাগবে না? কিন্তু সেই সম্পর্ক যদি “সারপ্রাইজ” হিসাবে দেখা দেয় বিয়ের পর, তাহলে সমস্যা। তাই আগেই জেনে রাখুন স্ত্রীর পুরনো সম্পর্কের ব্যাপারে, যেন ভবিষ্যতে এই ব্যাপারটি আর আপনাদের মাঝে দূরত্ব সৃষ্টি করতে না পারে। সবচেয়ে ভাল হয় যে সকল ছেলে বা মেয়ে বিবাহ পূর্ব অবৈধ প্রেমের সম্পর্ক রাখে তাদের পরিহার করা। ২. জেনে নিন পাত্রীর পারিবারিক ইতিহাস : শুধু পরিবারের সবার নাম-পরিচয়ই নয়, নিকট আত্মীয়দের পেশা এবং অন্যান্য জরুরী তথ্যগুলো জেনে রাখুন। সাথে এটাও জেনে রাখুন যে কোন বংশানুক্রমিক ব্যাধি আছে কিনা। পরিবারে কোন অপরাধের রেকর্ড বা অন্য কোন অসামাজিক বিষয়ের রেকর্ড আছে কিনা। ৩. জেনে নিন পরিবার গঠন ও দাম্পত্য সম্পর্কে তিনি কী ভাবেন : বিয়ের আগেই এই বিষয়গুলো পরিষ্কার করে নেয়া দরকার। কারণ সংসার করবেন আপনারা, পরিবার গঠন করবেন আপনারা। এক্ষেত্রে পরস্পরের মূল্যবোধ যদি না মেলে, সেক্ষেত্রে এই লম্বা জীবন পার করাটা খুবই কষ্টকর হয়ে দাঁড়াবে। তাই আগেই জেনে নিন দাম্পত্য সম্পর্কে তাঁর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী। ৪. পাত্রীর অসুস্থতা সম্পর্কেও জানুন : এই বিষয়টি জানার দিকে আমরা খুব একটা মনযোগ দেই না। কিন্তু নারী ও পুরুষ উভয়েরই পরস্পরের মেডিকেল হিস্ট্রি জেনে রাখা উচিত। একসাথে চলার পথে অসুখ বিসুখের আক্রমণ হবেই, জীবনে ঘটতে পারে নানান দুর্ঘটনাও। তাই দুজনেরই শারীরিক যে কোন সমস্যা ও মেডিকেল হিস্ট্রি জেনে রাখা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। ৫. পাত্রীর বন্ধুদের চিনে নিন : হবু স্ত্রীর বন্ধু বান্ধবদের সাথে পরিচিত হয়ে নিন। এতে খুব পরিষ্কার ধারণা পাবেন স্ত্রীর পছন্দ-অপছন্দ এবং তাঁর পরিচিত সার্কেল সম্পর্কে। এবং জানতে পারবেন এমন অনেক অজানা বিষয় যেগুলো অন্য কোনভাবে জানা সম্ভব না। স্ত্রীর ধ্যান ধারণার মূল্যায়ন করতে সুবিধে হবে আপনার। একুশে সংবাদ ডটকম/আর/১৯-০৪-০১৫:

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1