সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

ভায়াগ্রা সেবনের আগে কয়েকবার ভেবে নিন......

প্রকাশিত: ১০:৫৮ এএম, এপ্রিল ১৯, ২০১৫
একুশে সংবাদ : ভায়াগ্রা নামক ওষুধটি পুরুষত্বহীনতার চিকিৎসায় বিশ্বব্যাপী ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। অনেকেই মনে করেন, এটি পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বাধিক বিক্রীত ওষুধ। ভায়াগ্রায় রয়েছে এক বিশেষ রাসায়নিক উপাদান, যা পুরুষাঙ্গে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে। এর ফলে পুরুষ্যত্বহীন রোগী যৌন উত্তেজনা অনুভব করেন এবং তাদের পুরুষাঙ্গ উত্থিত হয়। পুরুষদের পাশাপাশি অনেক মহিলাও ভায়াগ্রা সেবন করেন। এতে তাদের কাইটরিসে রক্ত সঞ্চালন ঘটে এবং তারা বিপুল উত্তেজনা অনুভব করেন। পুরুষত্বহীনতায় ওষুধটির কার্যকারিতা প্রমাণিত হলেও এর অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। ভায়াগ্রা নিয়ে এক সময় তোলপাড় শুরু হলেও আমাদের দেশে এটি সহজলভ্য ছিল না। বর্তমানে একই উপাদানের ওষুধ পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে অবৈধভাবে আসায় এটা এখন সহজলভ্য হয়ে গেছে। রোগীরাও যত্রতত্র কিনছেন। শুধু রোগীরা নন, যৌন উত্তেজনা উপভোগ করার জন্য আমাদের দেশে অনেক তরুণ-তরুণী এটা সেবন করছেন। এর ক্ষতিকর দিক না ভেবেই অনেকে সেবন করছেন। এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য, যারা বুকে ব্যথার জন্য তথা হৃদরোগের জন্য নাইট্রো গ্লিসারিন ব্যবহার করেন তাদের ক্ষেত্রে ভায়াগ্রা মারাত্মক পরিণতি বয়ে আনতে পারে। পুরুষত্বহীনতার অনেক কারণ রয়েছে। মানসিক কারণ তার মধ্যে প্রধান। কিন্তু যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে কিংবা যারা দীর্ঘ দিন ধরে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ সেবন করেন তাদের মধ্যে পুরুষত্বহীনতা দেখা দিতে পারে। কিন্তু তারা যদি পুরুষাঙ্গ উত্থানের জন্য ভায়াগ্রা সেবন করেন তাহলে বিপদ ঘটতে পারে। তাদের ভায়াগ্রা সেবনের আগে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ভায়াগ্রা বিক্রি করা উচিত নয়। তবে নির্দিষ্ট কারণ ছাড়া ভায়াগ্রা সেবনের চেয়ে এর অপব্যবহারই বেশি হয়। অনেকে স্ত্রীর কাছে নিজেকে জাহির করার জন্য ভায়াগ্রা সেবন করেন। এ ওষুধটি ১৯৯৮ সালের ২৭ মার্চ আমেরিকার ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সে দেশে বিক্রির অনুমতি দেয়। এ ছাড়া ব্রাজিল, এনডোরা, সাউথ আফ্রিকা ও মরক্কোতেও বিক্রয় হয়। আর অনুমতি না পেলেও বর্তমানে সৌদি আরবসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এটি কালোবাজারে চড়াদামে বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু বিভিন্ন জায়গায় ঘটছে কুৎসিত ও ভয়াবহ ঘটনা। এক রোগীর ১৪ বছর ধরে পুরুষাঙ্গ নিস্তেজ ছিল। তাকে চিকিৎসক ভায়াগ্রা গ্রহণের পরামর্শ দেন। দেখা গেছে, ওষুধ সেবনের মাত্র দুই ঘণ্টা পরে তিনি যৌন তাড়নায় পতিতালয়ে যান। ৭০ বছরের এক রোগী ভায়াগ্রা সেবনের দুই দিন পরই ১০ বছর ধরে যার সাথে লিভ টুগেদার করছিলেন তাকে ছেড়ে অন্য এক তরুণীর সাথে চলে যান। ভায়াগ্রা শুধু স্বাভাবিক যৌন উত্তেজনাই বাড়ায় না, তা জন্ম দেয় বিকৃত কামের। আমি যখন চার বছর আগে উচ্চতর পড়াশোনার জন্য বিদেশে একটি হাসপাতালে কাজ করি, সেখানে এ ধরনের অনেক রোগীর সাক্ষাৎ পাই। একজন রোগী ছিলেন বাংলাদেশী, যিনি ভায়াগ্রা সেবন করে অনেক অনৈতিক কাজ করে বেড়াচ্ছেন। যেগুলো আসলে যৌন বিকৃতি। অনেকে বাংলাদেশে ভায়াগ্রার বিকল্প ইন্ডিয়ান ওষুধ সেবন করে বিকৃত কাম চরিতার্থ করছেন। চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়াই তারা ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনে খেয়েছেন। এই ওষুধ প্রেসক্রিপশন ছাড়া বিক্রয় নিষিদ্ধ। অথচ দোকানে গিয়ে নাম বললে নাকি চড়াদামে বিক্রি করা হয়। যাদের পুরুষাঙ্গ ছোট, তারা পুরুষাঙ্গ বড় করার জন্যও এসব ওষুধ খেয়ে থাকেন। আমি এক সময় ব্যাংককের একটি ক্লিনিকে কাজ করেছি। মাত্র দুই মাসে সেখানে বাংলাদেশ থেকে বেড়াতে আসা বেশ কয়েকজনের সাথে আমার সাক্ষাৎ হয়েছে। তারা এখানে আসেন মূলত হেলথ চেকআপের জন্য। অবাক হয়ে শুনেছি, তারা সবাই ভায়াগ্রা অথবা ভায়াগ্রার বিকল্প ওষুধ গ্রহণ করেন। যৌন সমস্যার জন্য কি না জানতে চাইলে বলেন- তাদের কোনো যৌন সমস্যা নেই, বরং যৌনতাকে উপভোগ করার জন্য এ ওষুধ সেবন করেন। এবং তারা তা সেবন করেন চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই। আমার মনে হয়, এ ওষুধ যত্রতত্র বিক্রি করা উচিত নয়। বিশ্বব্যাপী বিকৃত কামের যে ভয়াবহ রূপ প্রকাশ পাচ্ছে এবং যার বিস্তৃতি ঘটছে বাংলাদেশেও, সেটা গ্রহণের আগে ভেবে দেখা উচিত ঠিক কী কারণে ভায়াগ্রা প্রয়োজন। এটা কি স্বাভাবিক যৌন উত্তেজনা লাভের জন্য, নাকি বিকৃত কাম চরিতার্থ করার জন্য? চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া যত্রতত্র খোলাবাজারে ভায়াগ্রা বিক্রির অনুমতি পেলে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করবে সন্দেহ নেই। তাই প্রশাসনের এ দিকে দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন। পুরুষত্বহীনতার অনেক বৈজ্ঞানিক চিকিৎসা রয়েছে। বিভিন্ন থেরাপির মাধ্যমে পুরুষত্বহীনতা ভালো করা সম্ভব। শুধু ভায়াগ্রার ওপর নির্ভরশীল হওয়ার প্রয়োজন নেই। ভায়াগ্রা শুধু স্বাভাবিক যৌন উত্তেজনা বৃদ্ধি করে না, এটা জন্ম দেয় বিভিন্ন ধরনের বিকৃত কামের। তাই ভায়াগ্রা সেবনের আগে ভেবে নিন, এটা আপনাকে কতটা সাহায্য করবে। লেখিকা: যুক্তরাষ্ট্রে একটি হাসপাতালে উচ্চতর প্রশিক্ষণরত একুশে সংবাদ ডটকম/আর/১৯-০৪-০১৫:

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1