সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

অস্ট্রেলিয়ার সমর্থনে গোটা বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৮:১২ পিএম, মার্চ ২৫, ২০১৫
একুশে সংবাদ : `ভাই আর বলেন না, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত যা করেছে কোয়ার্টার ফাইনালে, তা চুরি নয় বরং ডাকাতি বলাই ভালো। আমি চাই এর ফল ভারত পাক সেমিফাইনালে। কোনদিন অস্ট্রেলিয়ার সাপোর্ট করি নাই, কিন্তু আমি এখন তাদেরই সমর্থক। ভারত হারুক, তা দুই চোখে দেখে তৃপ্ত হতে চাই’ কথাগুলো বেশ আক্ষেপের সুরেই বলছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্র সাজিদ রহমান। সাজিদের মতো এমন আক্ষেপ, হতাশা, প্রতিহিংসা, প্রতিশোধ, ক্ষোভ; যাই বলুন না কেন সবই কম-বেশী পোড়াচ্ছে গোটা বাংলাদেশকেই। আর তাই প্রতিবেশী দেশ হওয়া সত্বেও ভারতকে রেখে সাত সমুদ্দুর তেরো নদীর ওপারে থাকা অস্ট্রেলিয়ারই সমর্থক যেন গোটা বাংলাদেশই। অস্ট্রেলিয়া জিতলে কিছুই যায় আসে না, তারপরও মনে একটু শান্তি পাওয়ার জন্যই বোধ হয় এমন ব্যকুলতা। সত্যিকার অর্থে তাই। বৃহস্পতিবার সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে সহ-আয়োজক অস্ট্রেলিয়া ও বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারত। গোটা বাংলাদেশের সমর্থন থাকবে অস্ট্রেলিয়ার দিকেই, তা সহজেই অনুমেয়। আড়ালে-আবডালে দুই-একজন ভারতের সমর্থন জানাবে, তা গোলা বোঝাই ধানের মধ্যে গুটি কয়েক চিটার মতোই। ইংল্যান্ডকে হারিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট কেটেছিল বাংলাদেশ। যা দেশের ক্রিকেট ইতিহাসে ছিল নতুন মাইলফলক। শেষ আটের লড়াইয়ে ভারত ছিল সব দিক থেকেই এগিয়ে, তা জানা ছির সবার। তবু টাইগারদের চেষ্টা ছিল সেরাটা দেয়ার। কিন্তু ভারত যেভাবে জিতেছে, তা রীতিমোত লজ্জার। যাতে তীব্র সমালোচনার ঝড় ওঠে। বিশেষ করে দুই আম্পায়ার ইয়ান গোল্ড ও আলিম দার যেন ছিলেন ভারতের কেনা গোলাম। সঠিক বলও কল করেছেন নো বল, আর এলবিডব্লিউ হলেও তাতে সাড়া দেননি রিভিউ দেখেও। আবার বাউন্ডারি লাইন স্পর্শ করে ক্যাচ ধরেও নায়ক ধাওয়ান। আম্পায়ার নির্লজ্জের মতো আঙ্গুল তুলে দিয়েছেন আউট। ভারতের কাছে বাংলাদেশ হারতেই পারে। কিন্তু ঐ ম্যাচে সবাই ফেয়ার প্লে দেখতে চেয়েছিল, আম্পায়াদের কু-কীর্তি নয়। যা নিয়ে আইসিসির প্রেসিডেন্টও কড়া ভাষায় ক্ষোভ ঝেড়েছেন, বিসিবিও আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জানানোর প্রক্রিয়া রয়েছে। তবে পুরো বাংলাদেশই তখন ক্ষোভে উত্তাল ছিল। দুই আম্পায়ের কুশপুতুল দাহ করা হয় টিএসসিতে। শুধু তাই নয়, ক্রিকেট বিশ্বেও এই ম্যাচ নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠে। সাবেক অনেক তারকা ক্রিকেটাররাও বলেছিলেন, ঐ ম্যাচে আম্পায়ারদের পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ নিয়ে। তবে ভারত নির্বিকার, চুপ আইসিসিও। আর সেকারণে অনেকেই ব্যঙ্গ করে আইসিসিকে ডাকে ইন্ডিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল নামে। ধোনিদের কথায় উঠে-বসে ক্রিকেটের এই নিয়ন্তা সংস্থা। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, সেমিফাইনালের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধেও কি বাঁকা পথে হাঁটবে না ভারত। ইতোমধ্যে সিডনির পিচ কিউরেটর নিয়ে সমালোচনাতো তুঙ্গে। আর তাই অস্ট্রেলিয়াকে সমর্থন জানালেও আগাম শংকাই প্রকাশ করেছেন ব্যাংক কর্মকর্তা নাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ভাই দেখেন, ভারতই জিতবে। এর পেছনে অনেক কারণ আছে। কোন না কোন কারসাজি তারা করবেই। তবে আমি চাই অস্ট্রেলিয়া জিতুক, ভারতের দম্ভ অন্তত একটু কমুক’। গার্মেন্ট শ্রমিক রাতুলও চান অস্ট্রেলিয়া জিতুক। তার মতে, ‘আমি অত কিছু বুঝি না। সেমিফাইনালে ভারত বিদায় নিক, এটাই আমি চাই। সে কারণে আমি অস্ট্রেলিয়ার অন্ধ সমর্থক’। একসময় ভারতের সমর্থন করতেন অনেকেই। তবে বাংলাদেশের সঙ্গে কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচের পর তারাও সম্বিত ফিরে পেয়েছেন। এমনই একজন মগবাজারের ব্যবসায়ী খায়রুল বাশার। তিনি বলেন, ‘একসময় বাংলাদেশের পর ভারতের সাপোর্ট করতাম ভীষণ। কিন্তু ওরা যে এমন আচরণ করবে, তা কল্পনাতেও ভাবিনি। ওরা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। ভালো খেলে ম্যাচ জেতো, আম্পায়ারদের সহযোগিতা লাগবে কেন? সত্যি কথা বলতে আমি সেদিন অনেক কষ্ট পেয়েছিলাম। এই বিশ্বকাপে এখন আমি নিউজিল্যান্ডের সমর্থক। তবে সেমিফাইনালে সমর্থন করব অবশ্যই অস্ট্রেলিয়ার’। খায়রুল বাশারের মতো এমন অনেকেই বৃহস্পতিবার সমর্থন করে যাবে অস্ট্রেলিয়ার। তবে বাস্তব অবস্থা ভিন্ন, ঐ ম্যাচে কে জিতল তাতে বাংলাদেশের কিন্তু কিছুই যায়-আসে না। টাইগাররা কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত গিয়েছিল, এমন সাফল্যে খুশি সবাই। তবে মনের কোণে অব্যক্ত কষ্টটা লাঘব করতেই বুঝি অস্ট্রেলিয়ার প্রতি আনমনেই সমর্থনটা চলে যাবে বাংলাদেশের, এটাও এক রকমের বাস্তবতা। একুশে সংবাদ ডটকম/রাজু/২৫-০৩-০১৫:

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1