সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

অবিবাহিতা বলেই কি আপনি গঞ্জনার শিকার?

প্রকাশিত: ১২:৫১ পিএম, মার্চ ২, ২০১৫
একুশে সংবাদ : রেবা পেশায় সাংবাদিক। জীবনের শুরুতে কেরিয়ার নিয়ে ব্যস্ত থাকায় বিয়ে নিয়ে ভাবার একেবারেই সময় পায়নি। এখন কেরিয়ার হয়েছে, কিন্তু বিয়ে দেন যে বাবা-মা, তারা আজ কেউই বেঁচে নেই। ভাইবোনরাও নিজেদের জীবনে থিতু। সারাদিন কাজের মাঝে বিয়ে নিয়ে ভাববার সময়ই পায় না। সত্যি বলতে কি, আলাদা করে আর বিয়ে করার তাগিদ অনুভব করেনি রেবা। কিন্তু আত্মীয়স্বজনরা বুঝতেই পারেন না একাও সুখে থাকা যায়। কোনো অনুষ্ঠানে গেলেই শুরু হয়ে যায় কানাঘুষা। বিরক্ত হয়ে পারিবারিক অনুষ্ঠানে যাওয়াই ছেড়ে দিয়েছে রেবা। খুব সাধারণ পরিবারের, দেখতে একেবারেই সাদামাটা মেয়ে অনামিকা। পড়াশোনাতেও তেমন আহামরি কিছু নয়। গ্র্যাজুয়েশনের পর থেকেই বিয়ের জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন বাবা-মা। কিন্তু সমস্যা হলো পাত্রপক্ষের চাহিদার স্রোতে প্রতিবারই খড়কুটোর মতো ভেসে যায় অনামিকার সাধারণত্ব। এ দিকে সুন্দরী ছোটবোনের বিয়ে দিতে কোনো ঝামেলাই পোহাতে হয়নি বাবা-মাকে। মায়ের তীক্ষ্ম চোখ, বাবার হতাশা, ভাই-ভাবীর বিরক্তিতে লজ্জায়, ভয়ে তঠস্থ হয়ে থাকে অনাকমিকা। নিজেকে ভীষণ অপরাধী লাগে ওর। এ দিকে শুধুমাত্র পাত্রপক্ষের মনোরঞ্জনের জন্য সাজতেও কেমন ছোট লাগে। সবমিলিয়ে কী করবে ও কিছুই ভেবে পায় না। কলেজে পড়ার সময়েই প্রেমে পড়েছিল জলি। কলেজ পেরিয়ে কঠিন বাস্তবের মুখে পড়ে উবে যায় সেই প্রেম। তারপর থেকেই বিয়ের নামে অজানা একটা ভয় কাজ করে জলির মনে। এরপর আর প্রেম আসেনি ওর জীবনে। সমস্যাটা সেখানেই। আগের সম্পর্কটা ভেঙে যাওয়ায় মা প্রায়ই ওর মানুষ চেনার ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। প্রসঙ্গটা ভেতরে ভেতরে নাড়িয়ে দিয়ে যায় ওকে। জলি আত্মবিশ্বাসের ভিতটাই টলে ওঠে। তাই জলি চায় আর একবার নিজেকে যাচাই করে দেখতে। আর একবার নিজেকে ঠিক মানুষ খোঁজার সুযোগ দিতে। কিন্তু বাবা-মাকে কিছুতেই নিজের সমস্যা খুলে বলতে পারে না। ওপরের ঘটনাগুলো চেনা চেনা ঠেকছে? এ গল্পগুলো আপনার-আমার মতো মেয়েদেরই, যারা আমাদের আশেপাশেই বসবাস করে। আমাদের সমাজে মেয়েদের বিয়ে নিয়ে এমন টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে হরহামেশাই যেতে হয়। বর্তমান সময়টা নারী ও পুরুষের সমানতালে তাল মিলিয়ে চলার। ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা পিছিয়ে নেই কোনো দিক থেকেই। না শিক্ষা-দীক্ষায়, না কাজে-কর্মে। মেয়ের বয়স পঁচিশের সীমা পেরোতে না পেরোতেই বিয়ের তোড়জোড় শুরু হয়ে যায়। মেয়ের বিয়ে না হলে এখনো হতাশ হয়ে পড়েন বাবা-মা। অবিবাহিতা মেয়েকে নিয়ে চলতে থাকে কানাঘুষা। কখনো তাচ্ছিল্য, কখনো সমবেদনার ফোয়ারা ছোটান আত্মীয়-স্বজনেরা। কেউ জানতেও চান না মেয়েটি আদতে বিয়ে করতে ইচ্ছুক কি না। পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি যদি আপনার অনুকূল না হয়, তাহলে নিজেই নিজের পাশে দাঁড়ান সমব্যথী হয়ে। কী করবেন - প্রথমেই ভাবুন আপনি কী চান। - বাবা-মা অথবা আত্মীয়স্বজনকে নিজের বক্তব্যটা বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করুন। - বিয়ে না করার জন্য যে আপনি অসুখী নন, সেটা স্পষ্ট করে বলুন। - প্রয়োজন হলে বিখ্যাত, সফল, অবিবাহিত নারীদের কথা গল্পচ্ছলে বলুন অভিভাবকদের। - বিয়ের পরের দায়িত্ব নেয়ার জন্য আপনি মানসিকভাবে প্রস্তুত নন, সেটা বাড়িতে খোলাখুলিভাবে জানান। - বিয়ে নিয়ে মানসিকভাবে কোনো ভয় কাজ করলে কাউন্সেলিং করান। - সারাদিন নানা ধরনের ইতিবাচক কাজ, ইতিবাচক চিন্তায় সময় ব্যয় করুন। - যথেষ্ট কারণ থাকলে নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থাকুন। - ভালোমতো ভেবে দেখুন, বিয়েতে আপত্তি করার কারণটা সত্যিই জোরালো কি না। - বিবাহিত, সুখী বন্ধুদের সাথে সময় কাটান। এতে বিয়ে নিয়ে কোনো ভুল ধারণা থাকলে কেটে যাবে। - নিজে সিদ্ধান্ত না নিতে পারলে পাত্র পছন্দের জন্য কাছের মানুষ, বন্ধুবান্ধবদের সাহায্য নিন। কী করবেন না - সমন্ধ ভেঙে যাওয়ার জন্য নিজেকে দায়ী করবেন না। - পরিবার-পরিজনের থেকে দূরে সরে যাওয়া কোনো সমাধান নয়। এতে তারা আপনাকে আরো বেশি ভুল বুঝবেন, আপনিও কষ্ট পাবেন। - 'আমাকে কেউ বোঝে না', 'আমি সবার কাছে বোঝা হয়ে গেছি' - এই ধরনের চিন্তাভাবনা মনে আনবেন না। নেতিবাচক চিন্তা আপনাকে আরো হতাশ করবে। - বিয়ে নিয়ে অযথা প্যানিক হবেন না। জীবনের আর পাঁচটা ঘটনার মতো এটাও অত্যন্ত স্বাভাবিক ঘটনা। বিয়ে হলে বর্তে যাওয়া বা না হলে ভেঙে পড়ার কোনো কারণ নেই। - বিয়ে হচ্ছে না বলেই নিজের অপছন্দের পাত্রকে বিয়েতে মত দিয়ে দেবেন না। সারাজীবন চলার জন্য মানসিক মিল থাকা অত্যন্ত প্রয়োজন। - নিজে যা নন, বিয়ের জন্য নিজেকে তাই সাজাবেন ন না অথবা বানাবেন না। সারাজীবন কিন্তু নিজে যা নন, তাই হয়ে থাকতে পারবেন না। - বিয়ে ভাগ্যের ব্যাপারও বটে। ছোট বোনের বা ভাইয়ের বিয়ে হয়ে গেলে কষ্ট পাবেন না। কারণ আপনার কষ্ট তাদের দুঃখের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। - বিয়ে হয়ে গেলেই আপনার স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হবে, এরকম মনোভাব থেকে বিয়েতে আপত্তি জানাবেন না। কয়েকটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে এবং পরামর্শ দিয়েছেন- ডা. মোরশেদা হক মনোরোগ বিশেষজ্ঞ আরোগ্য সদন মিরপুর সাড়ে এগারো, পল্লবী, ঢাকা একুশে সংবাদ ডটকম/আর/০২-০৩-০১৫:

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1