সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

এক হাতেও তালি বাজে ।। আহসান হাবীব

প্রকাশিত: ১২:০৬ পিএম, মার্চ ১, ২০১৫
একুশে সংবাদ : এক জাপানীর গাড়ি আছে কিন্তু গাড়ি চালায় না। গাড়ি গ্যারেজেই থাকে। গ্যারেজ থেকে কখনো বের হয় না। মাঝে মাঝে সে গ্যারেজে ঢুকে গাড়ি স্টার্ট দেয়, হেড লাইট জ্বালায়, ব্যাক লাইট জ্বালায়, গাড়ির রেডিও অন করে গান শোনে, খবর শোনে তারপর আবার গাড়ির স্টার্ট অফ করে গ্যারেজ বন্ধ করে দেয়। ঐ জাপানীর প্রতিবেশী আবার এক বাঙালি। তার খুব কৌতূহল হলো বিষয়টা নিয়ে। জাপানী প্রতিবেশীর এত সুন্দর গাড়ি কিন্তু কখনো সে গাড়ি চালায় না, মাঝে মাঝে স্টার্ট দেয় ... কিছুক্ষণ পর ফের বন্ধ করে দেয় ঘটনা কী! একদিন সেই বাঙালি এগিয়ে গেল। - হাই মাসাউকি ? - হাই! - আচ্ছা, একটা ব্যাপার জানতে কৌতূহল হচ্ছে। - কী ব্যাপার? - তোমার এত সুন্দর গাড়ি, তুমি চালাও না কেন? মাঝে মাঝে স্টার্ট দাও আবার বন্ধ করে দাও কেন? জাপানী মাসাউকি গর্বিত ভঙ্গিতে একটা হাসি দিয়ে বলল, আমরা সামুরাই বংশের লোক। আমাদের দু’হাতে কিছু ধরা নিষেধ আছে। আমরা এক হাতে সামুরাই সোর্ড ধরি। গাড়ি চালালে দু’হাতে স্টিয়ারিং ধরতে হয়! হাতের আরেকটা গল্প বলা যাক। জাপানী না, এ দেশীয় গল্প। বই মেলারই গল্প! এইতো সেদিন বই মেলায় গিয়ে ঘুরে-টুরে দু’চারটা বই কিনে দুই মেলার মাঝখানে আইল্যান্ডে বসে চা খাচ্ছি। এমন সময় এক অতি স্মার্ট তরুণী এসে বলল, আপনার সাথে ছবি তুলতে চাই। আমি বললাম, বেশ তোলো। সে আমার পাশে বসে অন্য একজনকে মোবাইলটা দিল ছবি তুলে দেওয়ার জন্য। তারপর বলল, স্যার গায়ে হাত দেন! আমি চমকে উঠলাম- এই মেয়ে বলে কী! সে আবার বলল, স্যার গায়ে হাত দেন! এবার আমি একটু ভড়কেই গেলাম। বললাম, মানে কী? তখন স্মার্ট তরুণী ব্যাখ্যা করে বলল, সে একটা অন্তরঙ্গ ছবি তুলতে চায়। এ জন্য তার কাঁধে একটা হাত রাখতে হবে। কী জ্বালা! সবাই বলে, এক হাতে তালি বাজে না। তালি বাজাতে দুই হাত লাগে। কথাটা পুরোপুরি সত্য নয়। আমি একজনকে পেয়েছিলাম, সে এক হাতেই দিব্যি তালি বাজাতে পারে। হাতের চার আঙুল হাতের তালুতে ঠাস ঠাস করে বাড়ি দিয়ে দিব্যি দুই হাতে তালি বাজানোর মতই শব্দ করতে পারে! আসলে মানুষের অসাধ্য বলে কিছু নেই। এই ঢাকা শহরেই এক তরুণ ভিক্ষুককে দেখেছিলাম তার দু’হাত অদ্ভুতভাবে বাঁকা, ইনিয়ে-বিনিয়ে ভিক্ষা করছে। বেচারার বিকলাঙ্গ হাত দুটো দেখে অনেকেই ভিক্ষা দিচ্ছে। অথচ কী আশ্চর্য! ক’দিন পর হঠাৎ দেখি সেই তরুণ গাছতলায় বসে আছে। তার ঠোঁটের কোণে জ্বলছে ফিল্টার সিগারেট। তার দুই হাত সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। সেই হাত দিয়ে ভিক্ষা করে পাওয়া টাকা বসে বসে সে গুণছে, আর সিগারেটে টান দিচ্ছে। আর কী আশ্চর্য! একদিন সেই প্রতারক তরুণ আমার কাছে তার বাঁকা হাত দুটো (আসলে স্বাভাবিক) বাড়িয়ে ভিক্ষা চাইল। আমি তাকে আস্তে করে বললাম, তোমার হাত দুটো যে ঠিক আছে আমি জানি। আমার মোবাইলে ছবি তুলে রেখেছি দেখবে? এ কথা শোনামাত্র তরুণ ভিক্ষুক পড়িমড়ি করে ছুটলো। এক চীনা আর্টিস্ট দু’হাত থাকতেও কখনো হাত দিয়ে ছবি আঁকতেন না। জিভ দিয়ে ছবি আঁকতেন এবং দারুণ সব ল্যান্ডস্কেপ ছবি হতো সেগুলো। তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, হাত থাকতে আপনি কেন জিভ দিয়ে ছবি আঁকেন? তিনি উত্তরে বলেছিলেন, আমি আসলে ছবি আঁকি না, ছবি খাই! কী অদ্ভুত উত্তর! তবে তার উত্তরের ব্যাখ্যাটা বোধ হয় এরকম। বলে না, আজকাল চ্যানেলে টক শোটা দর্শক বেশ খায় ... সে রকম ক্রিয়েটিভ বিষয়গুলো আজকাল মানুষ খায়। সত্যি এটা একটা ট্র্যাজেডি। মানুষ আজকাল সব কিছু খায় দেখে না, অনুভব করে না- শুধু খায়। একুশে সংবাদ ডটকম/আর/০১-০৩-০১৫:

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1