সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

মুখথুবড়ে পড়েছে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প

প্রকাশিত: ০৪:৫৩ পিএম, জানুয়ারি ১৯, ২০১৫
একুশে সংবাদ : ঘটা করে চুক্তি করলেও অবশেষে ভেস্তে গেল বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প। চুক্তির দেড় বছরের মধ্যে ইতালীয় প্রতিষ্ঠান ম্যানেজমেন্ট এনভায়রনমেন্ট ফাইন্যান্সের উৎপাদনে যাওয়ার কথা থাকলেও প্রায় দুই বছরে এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগই নিতে পারেনি তারা। উৎপাদনে যাওয়া দূরের কথা, প্রকল্পে কোনো অর্থই ব্যয় করেনি তারা। তাই বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প থেকে ম্যানেজমেন্ট এনভায়রনমেন্ট ফাইন্যান্সের আনুষ্ঠানিক সরে যাওয়া এখন সময়ের ব্যাপার বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার বিভাগের কর্মকর্তারা। স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব কে এম মোজাম্মেল হক এ বিষয়ে দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘তাদের (ম্যানেজমেন্ট এনভায়রনমেন্ট) অনেক সময় দেওয়া হয়েছে, কাজগুলো তারা করতে পারেনি। আর কত সময় দেব?’ চুক্তি বাতিল হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখনও বাতিল হয়নি। চুক্তি বাতিলের ক্ষেত্রেও কিছু আনুষ্ঠানিকতা মেনে চলতে হয়। দেখি কী করা যায়।’ তিনি আরও বলেন, ‘এ প্রকল্পের বিষয়ে অনেক দেশ আসছে, কথা বলছে। সিটি করপোরেশনই এ বিষয়গুলো দেখছে।’ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন রাকিব উদ্দিন দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘ইতালীয় প্রতিষ্ঠানটির কোনো উদ্যোগ আমরা দেখিনি। তারা এখনও কোনো অর্থও ব্যয় করেনি। তবে এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগ ভাল বলতে পারবে।’ কথা বলার জন্যে ইতালীয় প্রতিষ্ঠানের স্থানীয় কাউকে না পাওয়া গেলেও জানা গেছে, সভরেন গ্যারান্টির (সার্বভৌম নিশ্চয়তা-সরকারের কাছ থেকে এ গ্যারান্টি নিয়ে বিদেশ থেকে ঋণ গ্রহণ) মাধ্যমে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্য ছিল ম্যানেজমেন্ট এনভায়রনমেন্টের। কিন্তু এ বিষয়ে তারা সফল হয়নি। বিগত দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উপাদনের বিষয়টি আলোচিত হচ্ছিল। কিন্তু নানা জটিলতায় বার বারই মুখথুবড়ে পড়েছে এ প্রকল্প। রাজধানীতে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ২০১৩ সালের ১৮ এপ্রিল ইতালির প্রতিষ্ঠান ম্যানেজমেন্ট এনভায়রনমেন্ট ফাইন্যান্স এসআরএল’র সঙ্গে স্থানীয় সরকার বিভাগের চুক্তি স্বাক্ষর হয়। স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব কে এম মোজাম্মেল হক ও ম্যানেজমেন্ট এনভায়রনমেন্টের কো-চেয়ারম্যান বেলিজারিও কসিমো চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। চুক্তি অনুযায়ী প্রকল্পের আওতায় ঢাকার বর্জ্য ফেলার দুটি স্পট আমিনবাজার ও মাতুয়াইলে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করার কথা ছিল। স্থানীয় সরকার বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্প বাস্তবায়নে ঋণ নিতে পারছিল না প্রতিষ্ঠানটি। তারা পাঁচ দফা সময় নেয়। কিন্তু এরপরও প্রতিষ্ঠানটি কাজ শুরু করতে পারেনি। স্থানীয় সরকার বিভাগের একটি সূত্র জানিয়েছে, গত বছরের মাঝামাঝি সময়ের পর আর সময় বাড়াতে চাইছিল না মন্ত্রণালয়। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে তদবির করে সময় বাড়িয়ে নেয় প্রতিষ্ঠানটি। চুক্তি অনুযায়ী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটির প্রথম দেড় বছরে দুটি প্ল্যান্টে ১০ মেগাওয়াট, দুই বছরে ৩০ মেগাওয়াট ও তিন বছরে ৫০ মেগাওয়াট উৎপাদনে যাওয়ার কথা ছিল। বর্জ্যের সরবরাহ সাপেক্ষে দুটি প্ল্যান্টে উৎপাদন ১০০ মেগাওয়াটে উন্নীত করা হবে। স্থানীয় সরকার বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, প্রতিষ্ঠানটির কাছ থেকে সরকার আট টাকা ৭৫ পয়সা দরে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ কিনবে বলেও চুক্তিতে উল্লেখ ছিল। বিদ্যুতের সঙ্গে সঙ্গে দুটি প্ল্যান্ট থেকে উপজাত পণ্য হিসেবে বছরে ৯ লাখ মেট্রিকটন জৈবসার পাওয়া যাবে বলেও চুক্তির সময় জানানো হয়। এ দুটি প্রকল্পের জন্য ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ৪৩ দশমিক ৪ একর জমি প্রতিবছর ৬৯ লাখ ৪৪ হাজার টাকায় কোম্পানিকে ইজারা দেবে। প্রতি পাঁচবছর পর পর ২০ শতাংশ হারে এই ইজারার টাকা বাড়বে। সম্পাদিত চুক্তি অনুযায়ী, ৩০ কোটি (৩০০ মিলিয়ন) ডলার ব্যয়ে এ প্রকল্পে সরকারের কোনো বিনিয়োগ থাকবে না। ইতালীয় প্রতিষ্ঠানটি ‘নির্মাণ মালিকানা পরিচালনা ও হস্তান্তর (বিওওটি)’ পদ্ধতিতে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের পাশাপাশি বিনিয়োগ তুলে নিতে বিদ্যুৎকেন্দ্র দুটি ২০ বছর পরিচালনা করার কথা। স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে আরও জানা গেছে, ২০১১ সালের ১৩ নভেম্বর সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রস্তাবটি অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর সম্মতি দেয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। একুশে সংবাদ ডটকম/আর/১৯-০১-০১৫:

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1