সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

বরেন্দ্র অঞ্চলে বিলুপ্ত রাসেল ভাইপার সাপ!

প্রকাশিত: ১১:৫২ এএম, ডিসেম্বর ২১, ২০১৪
রাজশাহী প্রতিনিধি: বিলুপ্তপ্রায় রাসেল ভাইপার সাপের সন্ধান পাওয়া গেছে বরেন্দ্র অঞ্চলে। ইতোমধ্যে ওই সাপের কামড়ে রাজশাহী অঞ্চলে গত ছয় মাসে তিন জন মারা গেছে।     গত শুক্রবার রাজশাহীর তানোরের বাধাইড় ইউপির শিবরামপুর ও সাইধাড়া এলাকায় দুটি রাসেল ভাইপার সাপের সন্ধান পাওয়া গেছে। আন্তর্জাতিক বিষ গবেষণা কেন্দ্র (জার্মান) থেকে এক দল গবেষক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।     সম্প্রতি দলটি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ আজিজুল হক আজাদের নেতৃত্বে সাপ দুটি ধরেও এনেছে। এখন এর নমূনা সংগ্রহ করে বিশেষজ্ঞ দলটি পরীক্ষা নিরীক্ষা করছে।     তানোরের শিবরামপুর গ্রামের জাইদুল ইসলাম জানান, তিনি এই সাপের তাড়া খেয়েছেন। সাপটি তাকে দেখে প্রায় ১০ ফুট দূর থেকে এক ফুট মাথা উচু করে বিকট শব্দ করে তার দিকে আসতে থাকলে তিনি পালিয়ে রক্ষা পান।     রামেক হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ও বিভাগীয় প্রধান ডা. আজিজুল হক আজাদ জানান, সাপটি বাংলাদেশ থেকে প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল। ২০ থেকে ২৫ বছর ধরে এদের দেখা মেলেনি। গত ১ জুন নওগাঁর ধামইড় হাট উপজেলার আগ্রাদ্বিগুণ গ্রামে জামাল নামে এক কৃষককে দংশন করে রাসেল ভাইপার। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রথমে তার পায়ের ক্ষতস্থানে পচন ধরলে অর্ধেকটা কেটে ফেলা হয়। আট দিনের মাথায় সারা শরীরে পঁচন ছড়িয়ে পড়লে তিনি মারা যান। বিষয়টি চিকিৎসকদের ভাবিয়ে তুলেছিল।     তিনি জানান, এর এক মাস পর চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলউপজেলার বরেন্দ্রা গ্রামের আব্বাস আলীর ছেলে আক্কাসের (১৮) হাতের আঙ্গুলে সাপে কামড় দেয়। তিনিও রামেক হাসপাতালে ভর্তি হন। তাকে দেখে ওই কৃষকের মতোই হয়েছিল। ছয় দিন পর হাত কেটে ফেলে হয়। তারপর তিনিও মারা যান।     ডা. আজিজুল হক আজাদ আরও জানান, সর্বশেষ গত ২৫ নভেম্বর রাজশাহীর তানোর উপজেলার শিবরামপুর গ্রামের নওসাদ আলীর ছেলে তাজিমুদ্দিন (২৫) জমিতে সেচ দিতে গেলে তার পায়ে সাপে কামড় দেয়। সেই দিনই তাকে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। একইভাবে তারও পা কাটার পর সারা শরীরে পঁচন ধরে। নয় দিন পর তিনিও মারা যান।     তিনি জানান, রোগীগুলো দেখে মনে হতো অণ্য সাপে কাটা রোগীর মতো তারাও ভালো হয়ে যাবে। কিন্তু এই বিষধর সাপ বাংলাদেশ থেকে বিলুপ্তি হয়ে যাওয়ার পর এর কোনো ভ্যাকসিন বা ইনজেকশন নেই। সে কারণে তাদের বাঁচানো সম্ভব হচ্ছে না।     এ ব্যাপারে রামেক কর্তৃপক্ষ আন্তর্জাতিক বিষ গবেষণা কেন্দ্রের সাহায্য চেয়ে চিঠি দেয়। এর প্রেক্ষিতে জার্মান থেকে একটি গবেষণা দল আসে।     রামেজক কর্তৃপক্ষ জানায়, রাসেল ভাইপার সাপটি রাজশাহীর বরেন্দ্র এলাকায় বিস্তার লাভ করেছে। এই সাপ বছরে দুই বার একসঙ্গে ২০ থেকে ৩০টি ডিম দেয়। এটি দুই থেকে তিন ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়। ২৫ থেকে ৩০ বছর আগে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে সাপটি দেখা যেত।     এদিকে, রাজশাহীর তানোর, শিবরামপুর, সাইধাড়া, জুমারপাড়া, নাচোল উপজেলা, বরেন্দ্রা আমনুরা, লক্ষীপুর, নিজামপুর, ও ধামইড়হাট উপজেলার আগ্রাদ্ধিগুণ গ্রামসহ কয়েকটি গ্রামে মানুষ এই বিষধর সাপের আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। অনেক এলাকার কৃষকরা মাঠে কাজ করতেও ভয় পাচ্ছেন।     অন্যদিকে, সাপের বিষ নিধনের কোনো ভ্যাকসিন বা ইনজেকশান বাংলাদেশে না থাকায় বিশেষজ্ঞ চিকৎসকদেরও ভাবিয়ে তুলেছে।     একুশে সংবাদ ডটকম/মামুন/২১.১২.২০১৪

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1