সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

মারামারি যেখানে উৎসব!

প্রকাশিত: ০৪:৫৫ পিএম, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৪
একুশে সংবাদ ডেস্ক: মানুষের সঙ্গে মানুষের ঐক্য স্থাপনের বড় হাতিয়ার হলো উৎসব। তাইতো পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে হরেক ধরনের উৎসব প্রচলিত।     আর ঐক্য স্থাপনের এই উৎসবগুলোর সৃষ্টিও হয়েছে এক একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে। যেমন ধরা যাক পেরুর মারামারি উৎসবের কথাই। প্রতিবছর দেশটির চুমবিভিলকাস প্রদেশে এই উৎসব পালিত হয়। কুসকো অঞ্চল নামে খ্যাত ভূ-পৃষ্ঠ থেকে অনেক উঁচুতে অবস্থিত আন্দিস পর্বতমালায় বড়দিন উপলক্ষ্যে এই উৎসবের আয়োজন করা হয়। তবে উৎসবটি শুধু মারামারির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না। গান-বাজনা, নৃত্য-গীত, পানীয় এবং রংবেরংয়ের পোশাক সবকিছু মিলিয়ে উৎসবটি হয়ে ওঠে মনোমুগ্ধকর।     চলতি মাসের ২৫ তারিখ পেরুতে পালিত হতে যাচ্ছে এই উৎসব। আর তাই পেরুর বিভিন্ন স্থানে ইতোমধ্যেই উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। তৈরি করা হয়েছে মারামারির মঞ্চ, যেখানে শিশু-তরুন-বৃদ্ধ সবাই অংশগ্রহন করে। এমনকি নারীদের মারামারির জন্যও উন্মুক্ত থাকে মঞ্চ।     এর অবশ্য কারণ আছে। পেরুর স্থানীয়দের বিশ্বাস মতে, মানুষের মধ্যেই থাকে শয়তান, আর সেই শয়তানকে মানব শরীর থেকে বের করতে না পারলে মানুষ নতুন কিছু সৃষ্টি করতে পারে না। শয়তান বের করে দেয়ার প্রতীকী রূপ হিসেবে তাই বছরে একবার এই মারামারির আয়োজন করা হয়। নতুন বছরে যেন পরস্পরের মধ্যে ভাতৃত্ববোধ এবং সম্প্রদায়ের মধ্যে শান্তি ফিরে আসে, সেই উদ্দেশ্যই থাকে এই উৎসবের মূল।   maramari   ১৯৯০ সালের দিকে যুক্তরাষ্ট্রের একটি টেলিভিশন চ্যানেল এই উৎসবটি নিয়ে একটি অনুষ্ঠান করে। আর এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমেই পৃথিবীর মানুষ সর্বপ্রথম মারামারি উৎসব সম্পর্কে জানতে পারে। তবে এই উৎসবটি ১৯৬৬ সাল থেকে পেরুতে প্রচলিত হয়। ফাদার দানিয়েল ও’ক্যাফে এই উৎসবটি চালু করেন, যদিও প্রথমদিকে এটি শুধু ও’ক্যাফে পরিবারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল।     প্রতিবছর নিয়ম করে এই পরিবারটি নিজেদের বিশ্বাস মোতাবেক উৎসবটি পালন করতো। পেরুর স্থানীয়দের ভাষায় এর নাম ‘ফেস্টিভুস’, কিন্তু মার্কিন টেলিভিশন চ্যানেলে অনুষ্ঠানটি দেখানোর পর বৃহত্তর জনগোষ্ঠির মাঝে উৎসবটি ছড়িয়ে যেতে সময় লাগেনি। আর যেহেতু অনুষ্ঠানটি বড়দিনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত তাই তা ছড়িয়ে যেতেও সময় লাগেনি।     বড়দিনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত হলেও পেরুর সামাজিক জীবনে এর গভীর ছাপ রয়ে যায়। প্রতিবছর তারা নিজেদের সামাজিক এবং ব্যক্তিগত সমস্যার মুখোমুখি হয়ে তাকে পরাস্ত করে নতুনের সূচনা করার যে রীতি তার পেরুর জনজীবনে নতুন এক দিকের সূচনা করে। প্রথমদিকে শুধু হাতাহাতির মাঝে সীমাবদ্ধ থাকলেও পরবর্তীতে মার্শাল আর্টসহ শারিরীক বিভিন্ন কসরতের প্রক্রিয়া চালু হয়ে যায়। প্রতিটি মারামারিই শেষ হয় করমর্দন এবং কোলাকুলির মাধ্যমে।     পৃথিবীর বেশিরভাগ উৎসবের চিত্রই যদি আমরা খেয়াল করে দেখি, তাহলে কিছু বিষয়ে আমরা মিল দেখতে পাবো। এরমধ্যে অন্যতম হলো ‘করমর্দন’ এবং ‘কোলাকুলি’। কোলাকুলির মাধ্যমে যে মানুষ মানুষের আরও কাছে চলে আসে এই চিরন্তন পরীক্ষিত সত্যটিকে একেক সভ্যতা ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে বুঝতে সমর্থ হয়েছে। তাই প্রায় প্রতিটি উৎসবেই আমরা কোলাকুলি এবং করমর্দনের রীতি দেখতে পাই।     একুশে সংবাদ ডটকম/মামুন/১৯.১২.২০১৪

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1