সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

জাবিতে মুঠোফোনে সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে অধ্যাপক নিয়োগ

প্রকাশিত: ০১:৪২ পিএম, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৪
জাবি প্রতিনিধিঃ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের গনিত বিভাগ থেকে দ্বিতীয় শ্রেনী পাওয়া তথ্য অধিদফতরের এক কর্মকর্তাকে সরাসরি জার্নালিজম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগে অনৈতিক ভাবে সহযোগী অধ্যাপক পদে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে।   গত বৃহস্পতিবার রাতে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট বৈঠকে পূর্ব ঘোষিত কোন এজেন্ডা ছাড়াই এ নিয়োগ পাশ করানো হয়। এর আগেও প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রান বিজ্ঞান বিভাগে দ্বিতীয় শ্রেণী ও তৃতীয় শ্রেণী পাওয়া ব্যক্তিদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।   সহযোগী অধ্যাপক পদে নিয়োগ পেতে সাক্ষাৎকার দেওয়ার নিয়ম থাকলেও তিনি তা দেননি। তাছাড়া সহযোগী অধ্যাপক হওয়ার জন্য প্রভাষক এবং সহকারী অধ্যাপক পদে শিক্ষকতার অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হলেও তার শিক্ষকতার কোন অভিজ্ঞতাই নেই। গণিত বিষয়ে পড়াশুনা করে তিনি নিয়োগ পেয়েছেন জার্নালিজম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগে। সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ারের সময় যারা নিয়োগটির বিরোধিতা করেছিল তারাই এখন নিয়োগ দিচ্ছে বলে জানা গেছে। নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে নজিরবিহীন এ নিয়োগে উদ্বেগ জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতিসহ শিক্ষকদের বিভিন্ন সংগঠন।   জানা যায়, নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তি হলেন ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি তথ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত প্রধান তথ্য অফিসার এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য। তিনি ১৯৭৭-৭৮ শিক্ষাবর্ষে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত বিভাগে ভর্তি হন। স্নাতক এবং স্নাতকোত্তরে তিনি তৃতীয় বিভাগ থেকে মানোন্নয়ন দিয়ে দ্বিতীয় বিভাগে পাশ করেন। এছাড়া শিক্ষাজীবনে তার কোন প্রথম বিভাগ নেই। শিক্ষাজীবন শেষে তথ্য অধিদফতরে চাকরি শুরু করেন। চাকরির পাশাপাশি তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতা বিষয়ে পিএইচডি করেন।   ২০১৩ সালে জার্নালিজম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগে অধ্যাপক এবং সহযোগী অধ্যাপক পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হলে তিনি অধ্যাপক পদে আবেদন করেন। কিন্তু নিয়োগ কমিটি অধ্যাপক পদে তাকে তার আবেদন গ্রহন না করে তাকে সহযোগী অধ্যাপক পদে নিয়োগ দেওয়ার সুপারিশ করেন।সহযোগী অধ্যাপক পদে নিয়োগ পেতে নিয়োগ কমিটির নিকট সাক্ষাৎকার দিতে হলেও তিনি কোন সাক্ষাৎকার দেননি। যদিও নিয়োগ কমিটির সুপারিশে বলা হয় তিনি সাক্ষাৎকারে ভাল করেছেন।   ওই বছর এক সিন্ডিকেট বৈঠকে তার নিয়োগের বিষয়টি উত্থাপনের প্রচেষ্টা চালান তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন। কিন্তু শিক্ষকদের বাধার মুখে সেই প্রচেষ্টা থেকে সরে আসতে বাধ্য হন তিনি। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার সিন্ডিকেট বৈঠকে সহযোগী অধ্যাপক পদে তার নিয়োগের বিষয়টি উত্থাপন করা হয়। এক্ষেত্রে ২০১৩ সালে গঠিত নিয়োগ কমিটির সুপারিশ উল্লেখ করা হয়। যদিও উক্ত বৈঠকে অধ্যাপক এবং প্রভাষক পদে নিয়োগের এজেন্ডা থাকলেও সহযোগী অধ্যাপক পদে নিয়োগের কোন এজেন্ডা ছিলনা। পূর্ব ঘোষিত কোন এজেন্ডা ছাড়াই জাহাঙ্গীর হোসেনের নিয়োগ পাশ করানো হয় বলে অভিযোগ শিক্ষকদের।   এদিকে এ নিয়োগে প্রতিবাদ জানিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি এবং প্রগতিশীল শিক্ষকদের সংগঠন শিক্ষক মঞ্চ। শিক্ষক মঞ্চের আহবায়ক অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, সাংবাদিকতা বিভাগে এমন একজন ব্যক্তিকে শিক্ষক করা দরকার যার এ বিষয়ে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা রয়েছে। কিন্তু তিনি পড়াশুনা করেছেন গণিত বিভাগে। তাছাড়া সহযোগী অধ্যাপক পদে নিয়োগ দিতে সাক্ষাৎকার নেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকলেও তা নেওয়া হয়নি। এর আগেও প্রাণরসায়ন বিভাগে দ্বিতীয় শ্রেণী, তৃতীয় শ্রেণী পাওয়া ব্যক্তিদের শিক্ষক করা হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যাবে।   এ ব্যাপারে সিন্ডিকেট সদস্য এবং কলা ও মানবিকী অনষদের ডীন অধ্যাপক সৈয়দ কামরুল আহসান বলেন, নিয়োগ কমিটির কাছে যাকে যোগ্য মনে হয়েছে তাই তাকে নিয়োগ দিয়েছে। তাছাড়া সিন্ডিকেট বৈঠকে সকল সদস্য এ নিয়োগের পক্ষে মত দিয়েছেন। সাক্ষাৎকারের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, মুঠোফোনে নিয়োগ কমিটির সদস্যরা তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। তবে মুঠোফোনে এই ধরণের সাক্ষাৎকার নেওয়া যায় কিনা এ প্রশ্নের কোন উত্তর দিতে পারেননি তিনি। এ ব্যাপারে জানার জন্য উপাচার্য অধ্যাপক ফরজানা ইসলামকে বারবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।   একুশে সংবাদ ডটকম/হাফিজুর রহমান/১৯.১২.১৪।

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1