সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

রাবি ক্যাম্পাসে সৌন্দর্যবর্ধনের নামে চলছে ব্যাপক অনিয়ম !

প্রকাশিত: ১১:২৮ এএম, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৪
একুশে সংবাদ : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামী ১৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় সমাবর্তনকে ঘিরে ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যবর্ধনের নামে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যবর্ধনের নামে ‘ঠিকাদারের মনোরঞ্জন’ করা ছাড়া আর কিছুই হচ্ছে না। সংশ্লিষ্টরা জানান, ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যবর্ধন ও পরিচ্ছন্নতার জন্য প্রায় সাড়ে ৩১ লাখ টাকার কাজের অনুমোদন ইতিমধ্যে দেওয়া হয়েছে। অনুমোদনের পরদিনই তড়িঘড়ি করে ঠিকাদারও নিয়োগ করা হয়েছে। সমাবর্তনের এক মাস বাকি থাকলেও এখনো কোনো কাজ শুরু হয়নি। ফলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। কোষাধ্যক্ষ দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন ভবন সংস্কারের জন্য প্রথম পর্যায়ে প্রায় ২০ লাখ টাকার বাজেট প্রস্তাব করে সমাবর্তন উপলক্ষে গঠিত ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যবর্ধন, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ও স্যানিটেশন উপ-কমিটি। ওই বাজেটে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবন-১ এর জন্য ৩ লাখ ৭১ হাজার, কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনের জন্য ২ লাখ ১৮ হাজার, প্রথম বিজ্ঞানভবনের জন্য ২ লাখ ১২ হাজার, শহীদ মিনারের জন্য ১ লাখ ৯৪ হাজার, দ্বিতীয় বিজ্ঞানভবনের জন্য ১ লাখ ৮৩ হাজার, প্রশাসন ভবন-২ এর আংশিক সংস্কারের জন্য ৯৬ হাজার, স্টেডিয়ামের আংশিক সংস্কারের জন্য ৮৩ হাজার টাকা ও কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার সংস্কারের জন্য ৭৯ হাজার টাকার বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়। এছাড়া গাছে রং করার জন্য ১ লাখ ৯৬ হাজার, ইলেকট্রিক কাজের জন্য ১ লাখ ৬৬ হাজার, ‘ছোট কাজ’ বাবদ ১ লাখ ১৯ হাজার, ক্যাম্পাসে ডাস্টবিন মেরামত ও স্থাপন বাবদ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়। পরে দ্বিতীয় দফায় রবীন্দ্র কলাভবন, শহীদুল্লাহ কলাভবন ও মমতাজউদ্দিন কলাভবন সংস্কারের জন্য আরো প্রায় সাড়ে ১১ লাখ টাকার বাজেট প্রস্তাব করে ক্যাম্পাস সৌন্দর্যবর্ধন বিষয়ক উপ-কমিটি। বাজেট অনুমোদন করে গত ২ ডিসেম্বর কোষাধ্যক্ষ দপ্তর থেকে বিষয়টি ওই কমিটিকে অবহিত করা হয়। সৌন্দর্যবর্ধন উপ-কমিটি সূত্রে জানা গেছে, বাজেট অনুমোদনের বিষয়ে কোষাধ্যক্ষ দপ্তরের চিঠি পাওয়ার পরদিন (৩ ডিসেম্বর) তড়িঘড়ি করে ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়। কাজগুলোকে ১৫ ভাগে বিভক্ত করে ‘আরএফকিউএম’ পদ্ধতি অনুসরণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকাভুক্ত ১৫ জন ঠিকাদারের মধ্যে বণ্টন করা হয়েছে বলে ওই সূত্র জানিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কিছু দিন আগেই ক্যাম্পাসের প্রশাসন ভবন ১ ও ২, রবীন্দ্র কলাভবনের ভেতরের কিছু অংশ, শহীদ মিনার, মিলনায়তনের সংস্কার ও রং করা হয়েছে। এসব স্থাপনায় ফের সংস্কারের জন্য অনুমোদন দেওয়ায় ‘অনিয়মে’র অভিযোগ উঠেছে। জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক সায়েন উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমি ওই স্থাপনাগুলোতে পূর্বে সংস্কারের বিষয়ে অবগত নই। এসব বিষয়ে প্রধান প্রকৌশলী ভালো বলতে পারবেন।’ তিনি আরো বলেন, ‘যদি সমাবর্তনের আগে এই কাজগুলো শেষ না হয়, তাহলে তা সমাবর্তনের পরে করার জন্য ঠিকাদারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’ এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী মো. সিরাজুম মুনীরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক অভিযোগ করেছেন, সমাবর্তনের জন্য যে পথ দিয়ে শোভাযাত্রা প্রদক্ষিণ করে, সাধারণত ওই পথের আশপাশের ভবন সংস্কার করা হয়। অথচ এবার সৌন্দর্যবর্ধনের নামে মোটা অংকের টাকা অপচয় করা হচ্ছে, যা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের টেকসই কোনো উন্নয়ন করা সম্ভব ছিল।’ নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রকৌশল দপ্তরের একজন প্রকৌশলী বলেন, ‘শীতকাল হওয়ায় বর্তমানে রোদের যথেষ্ট অভাব রয়েছে। এই বৈরী আবহাওয়ায় রং করা হলে তা মোটেও টেকসই হবে না। তাছাড়া এতো কম সময়ে এই বৃহৎ কাজ করাও সম্ভব নয়।’ এ বিষয়ে গত রোববার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে সৌন্দর্যবর্ধন, পরিচ্ছন্নতা ও স্যানিটেশন উপ-কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মুশফিক আহমদ তার সঙ্গে সরাসরি দেখা করতে বলেন। সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় তার বিভাগে যাওয়া হলে তিনি ব্যস্ততার কথা বলে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেন নি। জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মুহম্মদ মিজানউদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘সবকিছু পর্যালোচনা করে আমরা দেখেছি, এতো দ্রুত সবগুলো কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। সেজন্য শুধু গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো সম্পন্ন করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’ তিনি দাবি করেন, কোষাধ্যক্ষ দপ্তর থেকে সাড়ে ৩১ লাখ টাকার কাজের অনুমোদন হওয়ার পর তিনি বিষয়টি জানতে পেরেছেন। একুশে সংবাদ ডটকম/আর/১৭-১২-০১৪:

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1