সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

ভূতরাও তো মানুষ :: আহসান হাবীব

প্রকাশিত: ০৩:০৩ পিএম, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৪
একুশে সংবাদ : এক তরুণ বিয়ে করতে চায় না। একেবারেই চায় না। বাবা-মাও চেষ্টা করে হাল ছেড়ে দিয়েছে; ছেলে যখন চায় না তখন আর কি করা! এভাবেই দিন কেটে যেতে লাগল। এক সময় ছেলের বয়স বাড়ল। ছেলে এখন তার বন্ধুদের ছেলেপেলের জন্মদিনের দাওয়াত পায়। একদিন হঠাৎ ছেলে বিয়ে করতে রাজি হলো। এতে বাবা-মা ভীষণ খুশি! যদিও তারা সন্দিহান, এই বয়সে ছেলের উপযুক্ত পাত্রী পাওয়া যাবে কিনা, তারপরও ছেলেকে তারা জিজ্ঞাসা করল, ‘বাপ কী ধরনের পাত্রী চাস?’ ছেলে আমসি মুখে মিন মিন করে বলল, ‘জা পান’। মানে যা পাওয়া যায়, তাতেই হবে আরকী! যাই হোক ছেলের বিয়ে নিয়ে কথাবার্তা মোটামুটি চলছে। আশপাশে এবং আত্মীয়-স্বজন সবাইকে জানিয়েও দেয়া হয়েছে। একদিন পাত্রী পক্ষ এলো ছেলে দেখতে। ছেলের যেহেতু বয়স বেশি স্বাভাবিকভাবেই মেয়ে পক্ষের জোর একটু বেশি। কারণ মেয়ের বয়স কম। তারা প্রশ্ন করতে শুরু করল। ছেলে কী করে? জি, ছেলে এজি অফিসের কেরানি। কেরানি? জি, ছেলে হাতি মারা কেরানি। কি বলছেন! মাছি মারা কেরানির কথা শুনেছি। হাতি মারা কেরানির কথা তো শুনি নাই। এর মানে কী? মানে ছেলে কেরানি হলে কী হবে, আড্ডায় বসলে হাতি-ঘোড়া মারে। হাতি-ঘোড়া মারা কেরানিও বলতে পারেন। যাই হোক পাত্রীপক্ষ পিছিয়ে গেল। সে যাত্রা বিয়ে আর হলো না। বাবা-মারও মন খারাপ হলো, যাও বা ছেলেটা বিয়ে করতে রাজি হলো এখন পাত্রীই পাওয়া যাচ্ছে না। ছেলে বলেছিল ‘যা পান’। এখন তো কিছুই পাওয়া যাচ্ছে না। এই করতে করতে হাতি-ঘোড়া মারা কেরানি পাত্রের মানসিক সমস্যা দেখা দিল। হয়তো সে ঘরেই বসে আছে চুপচাপ, হঠাৎ কি দেখে চমকে চমকে ওঠে, যেন ভূত দেখেছে! বাবা-মা চিন্তায় পড়লেন। এমনি একা একা বসে আছে এমন সময় ভূত দেখার মতো চমকে উঠুক ক্ষতি নেই, কিন্তু পাত্রী দেখতে গিয়ে ভূত দেখার মতো চমকে উঠলে সমস্যা আছে। শেষ পর্যন্ত পাত্রকে সাইকিয়াট্রিস্টের কাছে নেওয়া হলো। সাইকিয়াট্রিস্ট দীর্ঘ সময় ধরে তাকে বেদম জিজ্ঞাসাবাদ করলেন। শুনলেনও। তারপর বললেন, এটা ঘোস্টোফোবিয়া ডিসঅর্ডার। এর চিকিৎসা কী? এর চিকিৎসা সহজ। কীরকম? উনাকে সত্যি ভূতের ভয় দেখাতে হবে। কী বলছেন? ঢাকা শহরে আমরা ভূত পাব কোথায়? আরে কি বলেন, বারো ভূতে দেশটা লুটেপুটে খাচ্ছে, আর আপনি ঢাকা শহরে ভূত পান না? আসল ভূততো সব ঢাকায়। শেষ পর্যন্ত অনেক চিন্তাভাবনা করে হাতি-ঘোড়া মারা কেরানি পাত্রকে নিয়ে এক শুক্রবার যাওয়া হলো ঢাকার ভূত রেস্টুরেন্টে। সেই রেস্টুরেন্টে হঠাৎ হঠাৎ করে নাকি একদল ভূত এসে হাজির হয়। তো ছেলেকে বসিয়ে তারা খাবারের অর্ডার দিলেন। এরপর তক্কে তক্কে রইলেন, কখন ভূত আসবে আর তাদের দেখে ভয় পেয়ে ছেলে সুস্থ হয়ে উঠবে। কিন্তু কি আশ্চর্য ভূত আর এলোই না! শেষ পর্যন্ত ম্যানেজারকে ডাকলেন পাত্রের বাবা। আচ্ছা কী ব্যাপার বলুন তো? কী বিষয়ে বলুন স্যার? আপনাদের রেস্টুরেন্টে ভূত আসে না? আসে তো। কই আজ তো এলো না? ওহ্, আজ আসবে কী করে? আজ শুক্রবার তো। ভূতরা নামাজ পড়তে গেছে। আসলে স্যার বুঝতে হবে, এই রেস্টুরেন্টের ভূতরাও তো মানুষ। শেষ পর্যন্ত সেই হাতি-ঘোড়া মারা আড্ডাবাজ কেরানির আর বিয়ে হলো না। তিনি চিরকুমারই থেকে গেলেন। এলাকার চিরকুমার সমিতির সভাপতি পদে ইলেকশন করে সম্প্রতি এক ভোটে হেরেছেনও। ওই একটা ভোট অবশ্য তার কনফার্ম ছিল, কিন্তু সেই লোক হঠাৎ (রেলমন্ত্রীর মতো) বিট্রে করে বিয়ে করে ফেলল। সুতরাং তার ভোটাধিকার ছিনিয়ে নেওয়া হয়। আর এতেই তার কপাল পোড়ে। তারপরও তিনি ভালো আছেন। তার ঘোস্টফোবিয়া ডিসঅর্ডার রোগটা অনেকটাই সারার পথে। একুশে সংবাদ ডটকম/আর/১৫-১২-০১৪:

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1