সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

বিশ্ব ঐতিহ্যের সম্মান হারানোর শঙ্কায় সুন্দরবন

প্রকাশিত: ০৪:২৯ পিএম, ডিসেম্বর ১২, ২০১৪
একুশে সংবাদ : বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যের সম্মান হারানোর শঙ্কায় পড়েছে। সম্প্রতি সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের শ্যালা নদীতে সাড়ে তিন লাখ লিটার জ্বালানি তেলসহ ট্যাংকারডুবির ঘটনা এ শঙ্কাকে আরও ঘনীভূত করেছে।   নির্মিতব্য রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র, সুন্দরবন রেঞ্জ দিয়ে নৌযান চলাচলের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারকে বেশ কয়েকবার সতর্ক করেছে ইউনেস্কো কর্তৃপক্ষ। বাগেরহাটের রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রভাব সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে সরকারের কাছে বেশ কয়েকবার চিঠিও দিয়েছে সংস্থাটি। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে গ্রহণযোগ্য কোনো জবাব দেওয়া হয়নি।   সর্বশেষ গত ১১ জুলাই ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সেন্টারের পরিচালক কিশোর রাও স্বাক্ষরিত সুন্দরবন সংক্রান্ত একটি চিঠি সংস্থাটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে দেওয়া হয়। সুন্দরবন রক্ষায় সরকার কী উদ্যোগ নিয়েছে সে বিষয়ে আগামী বছরের ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন চেয়েছে সংস্থাটি।   এ ছাড়া সুন্দরবন অঞ্চলের ভেতর ও আশপাশ দিয়ে নৌযান চলাচলের বিষয়েও বেশ কয়েকবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। এ ব্যাপারেও সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।   সম্প্রতি তেলবাহী ট্যাংকারডুবির ঘটনা ওই অঞ্চলের পানিসহ বনাঞ্চলের প্রাণীদের উপর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক পরিবেশবাদী সংগঠন ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন সোসাইটি। তাদের উদ্বেগানুযায়ী জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশের ওপর প্রভাব পড়লে তা সুন্দরবনের ঐতিহ্যের খেতাবের ক্ষেত্রে মারাত্মক হুমকি হয়ে দেখা দেবে।   পরিবেশবিদরা আশঙ্কা করছেন, এ ধরনের নেতিবাচক প্রভাব অব্যাহত থাকলে শিগগিরই ইউনেস্কোর ‘বিশ্ব ঐতিহ্য’ থেকে ‘বিপন্ন বিশ্ব ঐতিহ্যে’র তালিকায় নাম লেখাবে সুন্দরবন।   নিয়মিত অবহেলার মুখে ইতোমধ্যে সুন্দরবন থেকে ২ প্রজাতির পাখি, ৫ প্রজাতির মাছ ও ৩ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী হারিয়ে গেছে। বিলুপ্ত হওয়ার শঙ্কায় রয়েছে ২ প্রজাতির উভচর, ১৪ প্রজাতির সরীসৃপ, ২৫ প্রজাতির পাখি ও ৫ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী।   শ্যালা নদীতে তেলবাহী ট্যাংকারডুবির এলাকায় ইরাবতী, বোতলনাক, গাঙ্গেয়, ইন্দো প্যাসিফিক হাম্পব্যাক, ফিনলেস পরপয়েস, প্যানট্রপিক্যাল স্পটেড ডলফিনের প্রজাতি দেখতে পাওয়া যায়। এ ছাড়া এর আশপাশে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের বসবাসও রয়েছে। এ দুর্ঘটনার ফলে ওই প্রাণীগুলো ছাড়াও বিখ্যাত সুন্দরী গাছ বিপন্ন হওয়ার মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে।   ইউনেস্কো ঘোষিত প্রাকৃতিক বিশ্ব ঐতিহ্যের স্থানগুলোকে অভয়ারণ্য ঘোষণা করে রক্ষণাবেক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। সংস্থাটির পক্ষ থেকে পর্যবেক্ষণকারী দলসহ রাষ্ট্রের সরকারগুলো ঐতিহ্য রক্ষায় পদক্ষেপ নেয়। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার প্রায়ই সুন্দরবনের ঐতিহ্যের কথা গর্বভরে উল্লেখ করলেও এটি রক্ষায় তেমন কোনো উদ্যোগ নেয়নি। সুন্দরবনের খেতাব বাতিলে ইউনেস্কোর পক্ষ থেকে একাধিকবার সতর্ক করা হলেও এখন পর্যন্ত তা আমলে নেয়নি সরকার।   বাংলাদেশ ও ভারতের মোট ১০ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত সুন্দরবন। এর মধ্যে ৬০১৭ বর্গ কিলোমিটার রয়েছে বাংলাদেশে। ভারত সরকার ইতোমধ্যে তাদের অংশের অঞ্চলকে অভয়ারণ্য ঘোষণা দিয়ে বন রক্ষায় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।     একুশে সংবাদ ডটকম/আর/১২-১২-০১৪:

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1