সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

বরফ-আগুনের আলিঙ্গন যেখানে

প্রকাশিত: ০৬:০৮ পিএম, নভেম্বর ২৪, ২০১৪
একুশে সংবাদ : আইসল্যান্ড। নামের মধ্যেই ঠাণ্ডার আভাস। তুষারঝড় আর হিম শীলত আবহাওয়া। যেন বরফে ঢাকা এক পৃথিবী। যার একমাত্র রঙ সাদা। তবে দেশটির নাম বরফে ঢাকা পড়লেও এর ভেতরে লুকিয়ে আছে ভয়ঙ্কর আগুনের খনি। এর নাম আগ্নেয়গিরি। তাও আবার সক্রিয়। জমাট হিমবাহ আর গনগনে সক্রিয় আগ্নেয়গিরি একে অপরকে আলিঙ্গন করে থাকা দেশটির নাম আইসল্যান্ড। কল্পকাহিনীর মতো চোখজুড়ানো সব দৃশ্যপট রয়েছে এই দ্বীপদেশের পুরোটা জুড়ে। আগুন আর বরফ, এই দুয়ের মিলনে আপনার কল্পনাকেও হার মানাবে আইসল্যান্ড। তবে অন্যান্য টুরিস্ট স্পটের মতো ছিমছাম গোছালো নয় এই দ্বীপদেশ। পাহাড়ি এই দ্বীপের অবস্থান উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরে। পার্শ্ববর্তী গ্রিনল্যান্ডকে উত্তর আমেরিকার অংশ ধরা হলেও মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন এই দেশটিকে ইউরোপীয় এবং নরডিক দেশ বলে ধরা হয়। এটি একটি স্ক্যান্ডিনেভীয় এবং বিশ্বের প্রাচীনতম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। আইসল্যান্ডের উত্তর প্রান্ত সুমেরুবৃত্তকে স্পর্শ করেছে। ডিম্বাকার এই দ্বীপটি পূর্ব-পশ্চিমে প্রায় ৪৮৫ কিলোমিটার এবং উত্তর-দক্ষিণে প্রায় ৩৬০ কিলোমিটার দীর্ঘ। দেশটির জলবায়ু, ভূগোল ও সংস্কৃতি বৈপরীত্য ও বৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ। বছরের বিভিন্ন সময়ে এর দিন-রাত্রির দৈর্ঘ্যে বিশাল পার্থক্য দেখা যায়। জুন মাসে রাতের আঁধার নামে বটে কিন্তু আকাশ পুরোপুরি অন্ধকার হয় না। মার্চ এবং সেপ্টেম্বর ইকুইনক্স বা বিষুবের সময়ে দিনরাত্রির দৈর্ঘ্য প্রায় এক হলেও অন্য সময়ে তা হয় না। ডিসেম্বরে প্রায় ২০ ঘণ্টাই সেখানে রাত্রি। আবার গ্রীষ্মকালে এ অবস্থা উল্টে যায় এবং আপনি দেখতে পাবেন চমৎকার একটি দৃশ্য, যা হলো- 'মাঝরাতের সূর্য'! শীতকালে বরফে ঢাকা আইসল্যান্ডের যে সৌন্দর্য তা পাল্টে যায় আবার গ্রীষ্মে এবং দুই ঋতুতে ভিন্ন ভিন্নভাবে আপনি উপভোগ করতে পারবেন আপনার আইসল্যান্ড ভ্রমণ। এখানের আবহাওয়া মুহূর্তেই পাল্টে যেতে পারে আর সেই কারণে এখানকার বাসিন্দাদের মাঝে একটি কৌতুক প্রচলিত আছে। 'আবহাওয়া তোমার পছন্দ না হলে, পাঁচ মিনিট অপেক্ষা করেন!' এটা এমনই এক জায়গা যেখানে সূর্যের তাপে ত্বক পুড়ে যাবে আবার এর একটু পরেই বৃষ্টিতে ভিজে একসা হয়ে যাবেন আপনি। ধরে নেওয়া হয়, শীতকাল যদি বেশ লম্বা এবং ঠাণ্ডা হয় তবে গ্রীষ্ম হবে বেশ উষ্ণ। এখানে বরফের মাঝে মাঝেও রয়েছে অনেকগুলো উষ্ণ প্রস্রবণ বা স্পা। এছাড়াও দ্বীপটিতে অনেকগুলো আগ্নেয়গিরি সক্রিয় আছে। ভূমিকম্প বেশ সাধারণ ব্যাপার। ভূ-গর্ভস্থ উষ্ণ পানির প্রস্রবণগুলো দেশটির ভবনগুলোকে সারাবছর ধরে উষ্ণ রাখে এবং কৃষিকাজে সহায়তা করে। দক্ষিণ-পশ্চিমের প্রস্রবণগুলো থেকে নির্গত জলীয় বাষ্পের কারণে সেখানে অবস্থিত আইসল্যান্ডের রাজধানীর নাম দেয়া হয়েছে রেইকিয়াভিক, অর্থাৎ 'ধোঁয়াটে উপসাগর'। ভৌগোলিকভাবে অত্যন্ত উত্তরে সুমেরুর কাছে অবস্থিত হওয়া সত্ত্বেও উত্তর আটলান্টিকে মহাসাগরের উষ্ণ উপসাগরীয় সমুদ্রস্রোতের কারণে এখানকার জলবায়ু তুলনামূলকভাবে মৃদু। ফলে আইসল্যান্ড পৃথিবীর সবচেয়ে উত্তরে অবস্থিত মানবসতিগুলোর একটি। এটিকে তাই সুমেরু অঞ্চলীয় রাষ্ট্র হিসেবেও গণ্য করা হয়। আইসল্যান্ডের রাজধানি রেকিয়াভিক থেকে উত্তরে ৯০ মিনিট দুরত্বে অবস্থিত বিয়ারনারফেল অঞ্চলে আপনি দেখা পাবেন একটি সক্রিয় উষ্ণ প্রস্রবণ যা থেকে পানির বুদবুদ সবসময়েই উঠতে থাকে কিন্তু আপনি হঠাৎ করেই দেখা পেয়ে যেতে পারেন আকাশছোঁয়া গরম পানির ফোয়ারার! এই এলাকায় অনেকগুলোই আছে আজ থেকে প্রায় ১০০০ বছর আগে কাজ শুরু করা উষ্ণ প্রস্রবণ। এ ছাড়াও আইসল্যান্ডে রয়েছে বেশ কয়েকটি ন্যাশনাল পার্ক। এর মাঝে রয়েছে ভাটনাইয়ওকুল পার্ক, পুরো দ্বীপের প্রায় ১০ শতাংশ জুড়ে এর অবস্থান। বরফের মাঝে আনন্দ করার জন্য এটি আদর্শ।পিংভেলির ন্যাশনাল পার্ক মূলত ঐতিহাসিক কারণে বিখ্যাত। স্নেইফেলসইয়োকুল ন্যাশনাল পার্ক রয়েছে স্নেইফেলসনেস উপদ্বীপ ঘিরে। আর এর মধ্যমণি হয়ে আছে দৃষ্টিনন্দন এক আগ্নেয়গিরি। ইচ্ছে করলে এখানে মাছ ধরেও সময় কাটানো যায়।আর আইসল্যান্ডের হিমবাহের সৌন্দর্য পুরোপুরি উপভোগ করতে হলে সবচাইতে উপযুক্ত স্থান হল ইয়োকুলসারলন। তাই সময় সুযোগ হলে ঘুরে আসতে পারেন বরফ আর আগুনের আলিঙ্গনের দেশ আইসল্যান্ড। একুশে সংবাদ ডটকম/আর/২৪-১১-০১৪:

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1