সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

ইতালিতে কাজের খোঁজে প্রবাসী বাংলাদেশিরা

প্রকাশিত: ১১:৫৭ এএম, নভেম্বর ২৪, ২০১৪
একুশে সংবাদ : ‘স্বপ্নের খোঁজে কেউ কত দূর দেশে যায়, আমি কলকাতায়...’। ওপার বাংলার শিল্পী অঞ্জন দত্তের এই গানের কথাগুলোর মতোই যেন বাংলাদেশের অগুনতি মানুষ একটু ভালো থাকা আর একটু ভালো রোজগারের আশায় বিদেশ–বিভুঁইয়ে পাড়ি জমান। তেমনই কয়েকজন বাংলাদেশির সঙ্গে কথা হলো ইতালির ফ্যাশন রাজধানী ও দ্বিতীয় বৃহত্তম জনবহুল শহর মিলানে। তাঁদের অধিকাংশই বৈধভাবে ইতালি গেছেন। আর একটি অংশ ঝুঁকি নিয়ে অবৈধ উপায়ে বহু দেশ, বহু পথ ঘুরে সেখানে পৌঁছেছেন। তবে দুই ধরনের প্রবাসীরাই ভালো আছেন। আলাপকালে জানা যায়, যাঁরা বৈধ উপায়ে ১০-২০ বছর আগে গেছেন, তাঁদের অধিকাংশই হোটেল-বার-রেস্তোরাঁয় ভালো বেতনে কাজ করেন। কেউ কেউ এত দিনে নিজস্ব ব্যবসা-বাণিজ্য গড়ে তুলেছেন এবং গাড়ি হাঁকিয়ে চলেন। আর যাঁরা অবৈধ পথে গেছেন, তাঁরা জুতসই কাজ না পেয়ে হকারি করছেন। তাতেও দেশে নিয়মিত টাকা পাঠাতে পারেন। বাংলাদেশের একদল সাংবাদিককে নিয়ে দুবাইভিত্তিক বিমান সংস্থা এমিরেটস এয়ারলাইন আয়োজিত এক সফরে ইতালির ফ্যাশন রাজধানী ও দ্বিতীয় বৃহত্তম জনবহুল শহর মিলানে গিয়ে প্রবাসীদের সঙ্গে আলাপ করে এমনটা জানা গেছে। আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে দুবাই-মিলান পথে অত্যাধুনিক দ্বিতল এয়ারবাস এ৩৮০ উড়োজাহাজের সাহায্যে ফ্লাইট বা উড্ডয়ন কার্যক্রম চালু উপলক্ষে এ সফরের আয়োজন করা হয়। এই পথে বর্তমানে দৈনিক তিনটি ফ্লাইট পরিচালনা করছে এমিরেটস। সফরকালে বাংলাদেশে এমিরেটস এয়ারলাইনের উপদেষ্টা কাজী ওয়াহিদুল আলম বলেন, মিলান বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের একটি বড় বাজার। আর সেখানে বাংলাদেশের প্রচুর লোক থাকেন। সে জন্য এমিরেটস ঢাকা-দুবাই-মিলান পথে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক যাত্রী ও পোশাকপণ্য পরিবহনের আশা রাখে। মিলানের গারিবলডি, কায়াচ্ছো, কালোফারনি, ক্রেসপি, ডোমোসহ কয়েকটি এলাকায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, ইতালি সরকার যেমন বাংলাদেশিদের সহযোগিতা করে, তেমনি দেশটির জনগণও বেশ সহনশীল আচরণ করে। এমনকি যাঁরা অবৈধ পথে সেখানে গেছেন, তাঁদেরও পুলিশ ধরপাকড় করে না। তবে বৈধ কাগজপত্র তথা ভিসা না পেয়ে বাংলাদেশের অনেকেই ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ইরান, তুরস্ক, গ্রিস প্রভৃতি দেশ হয়ে মিলানসহ ইতালির বিভিন্ন শহরে গিয়ে পৌঁছান। এভাবে অবৈধ উপায়ে বিদেেশ যাওয়ার চেষ্টা করলে যেকোনো দেশেই ধরা পড়ার আশঙ্কা থাকে এবং অচেনা-অজানা পথে নানা বিপদ হতে পারে। মিলানপ্রবাসীদের বেশির ভাগই গেছেন মাদারীপুর ও শরীয়তপুর জেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে। এর মধ্যে দেলোয়ার, কামাল, মজনু, আলমগীর, মামুন, সজীব, রমজান প্রমুখ প্রবাসী জানান, মিলান যেতে ব্যক্তিভেদে তাঁদের খরচ পড়েছে সাড়ে আট থেকে ১১ লাখ টাকা। জমানো টাকার পাশাপাশি ধারদেনা ও জমি বিক্রি করে তাঁরা মিলান গেছেন বলে জানান। অবৈধভাবে যাওয়া কবির, রফিক, মজিদ ও রিপন এই চারজনও একই সুরে কথা বলেন। তাঁরা জানান, বিভিন্ন নাইট ক্লাবের সামনে ফুল, ডিসকো চশমা, বাঁশি ইত্যাদি বিক্রি করে মাসে বাংলাদেশের ৪০ থেকে ৭০ হাজার টাকার মতো আয় করেন। মেসে থাকা ও খাওয়া বাবদ খরচ হয় ২০-৩০ হাজার টাকা। তবে ইতালিয়ান ভাষা জানলে ও প্রশিক্ষণ থাকলে এক থেকে দুই লাখ টাকার সমান রোজগার করা যায়। মিলানের মেয়রের কার্যালয়ের পররাষ্ট্র বিভাগের তিন কর্মকর্তা জিয়ান কারলা বোরেত্তি, আরনেস্তো রদ্রিগুয়েজ ও সিলভিয়া লা ফারলা আলোচনাকালে জানান, সার্বিকভাবে বাংলাদেশিদের নিয়ে তাঁরা মোটামুটি সন্তুষ্ট হলেও অবৈধভাবে যাওয়া লোকদের ব্যাপারে অসন্তুষ্ট। কারলা বোরেত্তি বলেন, ইতালিতে এখনো অর্থনৈতিক সংকট চলছে। তাই কাজের সুযোগ কম। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়লে বাংলাদেশিরা আবার সুযোগ পেতে পারেন। একই সঙ্গে তিনি বাংলাদেশিদের ইতালির ভাষা ও সংস্কৃতি শেখার আহ্বান জানান। ১৯৯৯ সাল থেকে সৈয়দ জামান সম্রাট ইতালিপ্রবাসী। তিনি বলেন, যাঁরা ইতালির ভাষা শিখেছেন, তাঁরা ভালো বেতনে কাজ পাচ্ছেন। ব্যবসায়ী শাহাদাৎ হোসেন বলেন, দ্বিতীয় প্রজন্মের বাংলাদেশিদের কেউ কেউ ইতালিতে মূলধারায় চাকরি পান। ইতালি অভিবাসীদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করেন, প্রয়োজনে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। আরেক প্রবাসী ব্যবসায়ী তোফায়েল আহমেদ খান তপু বলেন, বাংলাদেশিরা এখন দ্রুত ইতালির ভাষা শিখছেন, যাতে ভালো কাজ পাওয়া যায়। একুশে সংবাদ ডটকম/আর/২৪-১১-০১৪:

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1