সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

শ্রমিক নিরাপত্তা নিয়ে ক্রেতাদের ভুল ভাঙছে : শহিদুল্লাহ আজিম

প্রকাশিত: ০২:০২ পিএম, নভেম্বর ১১, ২০১৪
একুশে সংবাদ : তাজরীন ফ্যাশনের অগ্নিকা- ও রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় দেশে-বিদেশে নেতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি হয় পোশাক খাতের। নিরাপত্তা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পোশাকের বিশেষ বাণিজ্য সুবিধা জিএসপি স্থগিত করে ওবামা সরকার। ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারে কাজ করে যাচ্ছে সব পক্ষ। এসব বিষয় নিয়ে মুখোমুখি হয়েছেন পোশাক শিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন বিজিএমইএর সহসভাপতি শহিদুল্লাহ আজিম। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন হৃদয় মিজান তাজরীন ফ্যাশনসের নিহতদের স্বজনদের কি পরিমাণ ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে? এই ঘটনায় নিহত ১১২ জনের মধ্যে ১০৯ জনের স্বজনদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক পরিবারকে দেওয়া হয়েছে সাত লাখ টাকা করে। ডিএনএ পরীক্ষায় বাকি তিনজনের পরিচয় মেলেনি, তাই ক্ষতিপূরণ পায়নি স্বজনরা। তাজরীনের মালিকের ব্যাপারে বিজিএমইএ কি ভাবছে? তাজরীন ফ্যাশনসের মালিকের বিষয়ে বিজিএমইএর কোনো কিছু মন্তব্য করার নেই। আইন আইনের গতিতে চলছে। তবে কারখানায় কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে সে জন্য মালিককে ধরে নিয়ে গেলে মানুষ বিনিয়োগ করবে না। তাজরীনের মালিকের বিরুদ্ধে যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে সেটি একটি ভুল সিদ্ধান্ত। বরং মালিক বাইরে থাকলে পাঁচ হাজার শ্রমিকের তুবা গার্মেন্টসে বেতন নিয়ে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটত না। রানা প্লাজা ধসে নিহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ব্যবস্থা নিয়েছেন? রানা প্লাজায় নিহতদের মধ্যে এক হাজার ১২ জনের পরিচয় চিহ্নিত হয়েছে। এর মধ্যে এ পর্যন্ত ৯৭৬ জনকে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া অসুস্থ এবং যারা পঙ্গুতবরণ করেছে অর্থাৎ এক হাত বা এক পা হারিয়েছে এমন ৩৮ জনের প্রত্যেককে ১০ লাখ করে টাকা দেওয়া হয়েছে। আর ৯৭৬ জনের মধ্যে কাউকে এক লাখ, কাউকে তিন লাখ আবার কাউকে সাত লাখ থেকে দশ লাখ টাকা করে দেওয়া হয়েছে। বাকিদেরটা প্রক্রিয়াধীন। রানা প্লাজার ধসে আন্তর্জাতিক ক্রেতারা কী বলছে? ক্ষতিপূরণের জন্য আন্তর্জাতিক লেবার অরগানাইজেশন (আইএলও) একটি তহবিল গঠন করেছে। এ জন্য দরকার ৩১ মিলিয়ন ডলার যার মধ্যে সংগ্রহ হয়েছে ২০ মিলিয়ন। ইতিমধ্যে আইএলও সাড়ে ১৮ কোটি টাকা বিতরণ করেছে। নিহত একেকজনের জন্য দেড় লাখ থেকে ৬০ লাখ টাকা দরকার। শ্রমিকরা বেঁচে থাকলে ৫৭ বছর পর্যন্ত চাকরি করে আয় করতেন। লিভিং আর্নিং সে হিসেবে তাদের টাকা দেওয়া হবে। আইএলও চেষ্টা করছে, কিন্তু বিজিএমইএ কী করছে? বিজিএমইএ থেকে নিখোঁজদের যে তালিকা করা হয়েছে তা শ্রম মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। এই তালিকা এখন যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। তারপর এদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। অভিযোগ রয়েছে এখনো ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়ন করা হয়নি? একটা সঠিক নয়। প্রথম যখন ৩ হাজার টাকা মজুরি ঘোষণা করা হয়েছে তখন বাস্তবায়ন করতে প্রায় ৯ মাস সময় লেগেছে। মজুরি বাস্তবায়ন করেনি এমন কোনো কারখানা নেই। শ্রমিকের নিরাপত্তার জন্য কি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে? রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর কর্মপরিবেশ উন্নতির জন্য কাজ শুরু করে বিজিএমইএ। তাৎক্ষণিকভাবে ভবনের ভার কমানোর জন্য জেনারেটর নামানো হয়েছে। অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্সের কারখানা পরিদর্শন কার্যক্রম শুরুর আগেই বিজিএমইএ ঝুঁকিপূর্ণ ২৮টি কারখানা বন্ধ করে দেয়। কারখানার শ্রমিক ও কর্মকর্তাদের অগ্নিদুর্ঘটনা প্রতিরোধ বিষয়ে প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা করা হয়। পরিদর্শনকৃত দুই হাজার ৮৫টি কারখানার মধ্যে ২৩টিতে ত্রুটি পাওয়া গেছে। কারখানাগুলোতে শ্রমিক নিরাপত্তা, অগ্নি, ভবন নিরাপত্তার বিষয়ে মালিকরা কাজ করছে। এটা চলমান প্রক্রিয়া। এছাড়া নতুন কারখানা অনুমোদনের ক্ষেত্রে শুধু কাগজপত্র নয় প্রকৌশলী দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরই অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে। কারখানা ও শ্রমিকের নিরাপত্তা ইস্যুতে কাউকে ছাড় নয়। অ্যাকর্ড অ্যালায়েন্সের পরিদর্শনে মাত্র দুই শতাংশেরও কম ঝুঁকিপূর্ণ কারখানা পেয়েছে। জিএসপি সুবিধা বন্ধে কী ধরনের সমস্যা হচ্ছে? এটা মূলত ভাবমূর্তির সমস্যা। আর্থিকভাবে কোনো ক্ষতি হচ্ছে না। যুক্তরাষ্ট্রে জিএসপি সুবিধা দিয়ে যায় মাত্র ৫ মিলিয়ন ডলার। আর বাংলাদেশের আরএমজি খাত থেকে আমেরিকা রাজস্ব পাচ্ছে ৮৫০ মিলিয়ন ডলার। তবু আমরা ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারে জিএসপি সুবিধা ফিরে পেতে চাই। জিএসপি ফিরে পেতে কি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে? যুক্তরাষ্ট্র যেসব পর্যবেক্ষণ দিয়েছিল সরকার তার বেশিরভাগ পালন করেছে। আর যেগুলো বাকি ছিল সেগুলো চলমান প্রক্রিয়া। ট্রেড ইউনিয়ন করা হচ্ছে। যেখানে ১২ বছরে ট্রেড ইউনিয়ন ছিল ৩৮টি সেখানে এক বছরে (২০১৩-১৪ অর্থবছরে) করা হয়েছে ২৩৮ টি। এটি খুবই ইতিবাচক। অ্যাকর্ড অ্যালায়েন্স কারখানা পরিদর্শনের পর এখন ক্রেতাদের অবস্থান কি? রানা প্লাজা ধসের পর নেতিবাচক প্রচারণা হচ্ছিল যে, আমাদের ৮০ শতাংশ কারখানাই খারাপ। অ্যাকর্ড অ্যালায়েন্সের পরিদর্শনের পর দেখা যাচ্ছে, ঝুঁকিপূর্ণ কারখানার হার দুই শতাংশ। এগুলো সংস্কার কাজ চলছে। অ্যাকর্ড-এর পরিদর্শনে কারখানা বন্ধ হয়েছে সাতটি আর অ্যালায়েন্সের পরামর্শে বন্ধ হয়েছে দুটি। এছাড়া কারখানার মানোন্নয়নে অনেক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সাপ্তাহিক এই সময়-এর সৌজন্যে একুশে সংবাদ ডটকম/আর/১১-১১-০১৪:

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1