সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির রহস্যময় পোট্রেট

প্রকাশিত: ০৮:২৩ পিএম, অক্টোবর ৩১, ২০১৪
একুশে সংবাদ ডেস্ক: আর কিছুদিনের মধ্যেই ইতালির তুরিন শহরে প্রদর্শিত হতে যাচ্ছে বিশ্ববিখ্যাত সেল্ফ পোট্রেট (নিজের তোলা বা আকা মুখচ্ছবি)। তাও আবার যার তার আঁকা পোট্রেট নয়। খোদ শিল্পী লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির আঁকা সেল্ফ পোট্রেট এটি।   পোট্রেটটি নিয়ে অনেক বিতর্ক থাকা সত্ত্বেও ধারণা করা হয়, প্রায় ৫০০ বছর আগে লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি নিজেই নিজের এই পোট্রেটটি একেছিলেন। আর লাল খড়িমাটিতে আঁকা এই পোট্রেটটি ঘিরে ক্রমাগত রহস্যের জাল ঘণীভূত হয়েছে। যে রহস্যের হাতছানি থেকে বাদ যাননি ইতিহাস বিখ্যাত রাষ্ট্রনায়ক অ্যাডলফ হিটলারও।   লিওনার্দোর এই চিত্রকর্মটি নিয়ে কিছু ধারণা প্রচলিত আছে। আর এই প্রচলিত ধারণাগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো এই চিত্রকর্মটি দেখলে মানুষের মনের শক্তি বাড়ে এবং তিনি যেকোনো অসম্ভব কাজ সম্ভব করতে পারেন। তাই বোধহয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে তুরিন শহর থেকে এই চিত্রকর্মটি সরিয়ে রোমের গোপন স্থানে রাখা হয়েছিল। যাতে জার্মান বাহিনী এই চিত্রকর্মটি হাতিয়ে নিয়ে তাদের প্রিয় ফুয়েরারকে উপহার দিতে না পারে। কারণ তুরিনবাসীর মনেও ভয় ছিল যদি হিটলার এই চিত্রকর্মটি হাতে পায় তাহলে হয়তো তিনি আরো ক্ষমতাবান হয়ে উঠবেন।   ভিঞ্চির রহস্যময় পোট্রেটদ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অনেকদিন পর এই চিত্রকর্ম এবং লিওনার্দোর আঁকার খাতা রোম থেকে উদ্ধার করা হয়। সেই খাতা এবং লিওনার্দোর কিছু চিত্রকর্মও প্রদর্শিত হবে তুরিনের গ্যালারিতে।   এ বিষয়ে তুরিন আর্ট গ্যালারির বর্তমান সংগ্রাক জিওভান্নি সাক্কানি বলেন, ‘নাৎসি বাহিনী যেন এই চিত্রকর্মটি হাতিয়ে নিয়ে যেতে না পারে, তাই একটি গোপন গোয়েন্দা দলের তত্ত্বাবধানে এটিকে রোমের গোপন জায়গায় নিয়ে রাখা হয়েছিল। এতে অবশ্য ক্ষতি হয়েছিল। চিত্রকর্মটির স্বাভাবিক সৌন্দর্য কিছুটা হলেও হ্রাস পায়।’   সেল্ফ পোট্রেট নিয়ে অবশ্য কমবেশি বিতর্ক আছে। একদল মনে করেন এটি আদৌ ভিঞ্চির সেল্ফ পোট্রেট নয়। আবার আরেক দল বলেন, এই ছবিটি লিওনার্দো একটি স্কুলে বসে এঁকেছিলেন অন্য কোনো ব্যাক্তির মুখ দেখে।   তবে যাই হোক, ৫০০ বছরের পুরনো তৎকালীন সময়ের সস্তা কাগজে লাল খড়িমাটি দিয়ে আঁকা পোট্রেটটি আজও পৃথিবীর তাবৎ শিল্পবোদ্ধাদের কাছে এক গভীর রহস্যের উপাদান। ৫০০ বছর ধরে অনেক মানুষের হাত ঘুরে সর্বশেষ তুরিনের জাদুঘরে আপাতত স্থায়ীভাবে জায়গা পেয়েছে লিওনার্দোর এই কীর্তি।   জানা গেছে, ১৮৩৯ সালের দিকে স্যাভয়ের রাজা কার্লো আলবার্তো জিওভান্নি ভোলপাতো নামক এক ব্যাক্তির কাছ থেকে লিওনার্দোর এই সেল্ফ পোট্রেটটি ক্রয় করেন। জিওভান্নির কাছে কিভাবে এই শিল্পকর্মটি এসেছিল তা জানা যায়নি। তবে জানা যায়, জিওভান্নির কাছ থেকে রাজা কার্লো ৭০ হাজার লিরা খরচ করে লিওনার্দোর চিত্রকর্মটি কিনেছিলেন। তৎকালীন সময়ে একজন ডাক্তারের বাৎসরিক উপার্জন ছিল এক হাজার লিরা। ঠিক সেই অর্থনৈতিক বাস্তবতায় দাড়িয়ে লিওনার্দোর এই রহস্যময় পোট্রেটটির জন্য একজন রাজা ৭০ হাজার লিরা খরচ করেছিলেন, তার মানে এই পোট্রেটটিকে ঘিরে এমন কোনো বক্তব্য চালু ছিল যা একজন রাজাকেও এত অর্থ এবং সময় খরচ করতে বাধ্য করেছিল।   চিত্রকর্মটির গায়ে উল্লিখিত সাল হলো ১৫১৫। কিন্তু কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করেন চিত্রকর্মটি আঁকা হয়েছিল মূলত ১৪৯০ সালের দিকে এবং ছবিটি একজন সাধারণ বৃদ্ধ মানুষের।   জেমস হল নামক একজন লেখক ও বিশেষজ্ঞ এ ব্যাপারে বলেন, ‘লিওনার্দোর আসলে সেল্ফ পোট্রেটের ধারণা ছিল না। আমার মনে হয়, লিওনার্দো কাউকে দেখানোর জন্য এই চিত্রকর্মটি এঁকেছিলেন। আবার এমনও হতে পারে, এই চিত্রকর্মটি আদৌ লিওনার্দোর আঁকাই নয়।’   একুশে সংবাদ ডটকম/মামুন/৩১.১০.২০১৪

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1