একুশে সংবাদ : বলা হয়, রঙ্গিন ফলমূলে নাকি প্রচুর ভিটামিন ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর উপাদান থাকে। সত্যিই তাই। কমলা রঙের গাজরও এর ব্যতিক্রম নয়। এই ফলটি শুধু ভিটামিন এ’তেই সমৃদ্ধ নয়, এতে আছে নানাবিধ উপকারী উপাদান। এটি সুন্দর ত্বক থেকে শুরু করে ক্যান্সারের সুরক্ষায়ও বড় ভূমিকা রাখে। প্রতিদিন একটি গাজর থেকে কি কি উপকার পাওয়া যাবে তা নিচে আলোচনা করা হলো : ১. গাজর খেলে বৃদ্ধি পায় দৃষ্টিশক্তি। এতে আছে বিটা ক্যারোটিন যা আমাদের লিভারে গিয়ে ভিটামিন এ'তে রূপান্তরিত হয়। পরে সেটি চোখের রেটিনায় গিয়ে চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। সেইসঙ্গে রাতের বেলায় অন্ধকারেও চোখে ভালো দেখার জন্য দরকারি এমন এক ধরনের বেগুনি পিগমেন্টের সংখ্যা বাড়িয়ে দিয়ে দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে।২. গাজর খেলে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে যায়। এতে আছে ফ্যালকেরিনল বং ফ্যালকেরিনডায়ল যা আমাদের শরীরে এন্টিকান্সার উপাদানগুলোকে পূর্ণ করে। তাই গাজর খেলে ব্রেস্ট, কোলন ও ফুসফুসের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়। ৩. গাজর এন্টি-এজিং উপাদান হিসেবেও কাজ করে। এতে যে বিটা ক্যারোটিন আছে তা আমাদের শরীরের ভেতরে গিয়ে এন্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। এতে আমাদের শরীরের ক্ষয়প্রাপ্ত কোষগুলো ঠিকঠাক থাকে। ৪. সুন্দর ত্বকের জন্যও গাজর উপকারী। এটা ত্বককে ভেতর থেকে সুন্দর করে তুলতে সাহায্য করবে। এর ভিটামিন 'এ' ও এন্টিওক্সিডেন্ট ত্বকের রোদে পোড়াভাব দূর করে। সেই সঙ্গে ভিটামিন এ ত্বকের অযাচিত ভাঁজ, কালো দাগ, ব্রন, ত্বকের রঙের অসামাঞ্জস্যতা দূর করে সুন্দর হয়ে উঠতে সাহায্য করবে। ৫. গাজর একটি ভালো এন্টিসেপ্টিক হিসেবেও কাজ করে। এটি শরীরে কোনো ক্ষত হলে তা ইনফেকশন হওয়া থেকে রক্ষা করে। কোথাও কেটে গেলে বা পুড়ে গেলে সেখানে কুচি করা গাজর বা সিদ্ধ করা গাজরের পেস্ট লাগিয়ে দিলে ইনফেকশন হওয়ার আশঙ্কা দূর হয়। ৬. গাজর বাইরে থেকেও ত্বকের অনেক উপকার করে। ফেশিয়ালের উপাদান হিসেবেও এটিকে ব্যবহার করতে পারেন। ৭. হৃৎপিণ্ডের নানা অসুখে এটি খুব ভালো কাজ করে। এর ক্যারোটিনয়েডগুলো হৃৎপিণ্ডের নানা অসুখের ওষুধস্বরূকাজ করে। ৮. গাজরে উপস্থিত ভিটামিন এ' লিভারে গিয়ে তাকে শরীর থেকে নানা ধরনের টক্সিন জাতীয় খারাপ উপাদান পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। এছাড়াও গাজরের এই উপাদান লিভার থেকে অতিরিক্ত চর্বি সরিয়ে ফেলতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে গাজরের ফাইবার কোলন পরিষ্কার রাখে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের হাত থেকে রক্ষা করে। ৯. সুন্দর ও সুস্থ্য সবল দাঁতের জন্য গাজরের জুড়ি মেলা ভার। গাজর দাঁত ও মুখের ভেতর পরিষ্কার রাখে। এছাড়াও গাজরের মিনারেলগুলো দাঁত মজবুত রাখতে সাহায্য করে৷ ১০. হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত এক সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে যে যারা সপ্তাহে ৬টির বেশি গাজর খান বা খাচ্ছেন তাদের স্ট্রোকের ঝুঁকি যারা এর থেকে কম পরিমাণে কম বা একটি গাজর খাচ্ছেন তাদের তুলনায় অনেক কম হয়। তাই স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে খাবারের তালিকায় যুক্ত করতে পারেন গাজর। সালাদ করেও খেতে পারেন বা তরকারিতেও দিতে পারেন। এক কথায় গাজরের উপকারিতা অনেক। তাই খাদ্য তালিকায় নিয়মিত গাজর খেয়ে সুস্থ রাখতে পারেন নিজেদেরকে। একুশে সংবাদ ডটকম/আর/২৮-১০-০১৪: