সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

সোফিয়া লরেনের আত্মজীবনী ‘গতকাল, আজ, আগামীকাল’

প্রকাশিত: ০৮:৩২ এএম, অক্টোবর ২১, ২০১৪
একুশে সংবাদ : ছোট্ট মেয়েটি এতটাই হালকা-পাতলা আর টিংটিঙে ছিল যে সবাই ওকে ‘টুথপিক’ বলে ডাকত। যুদ্ধের দিনগুলোতে পরিবারের আর্থিক অনটন এত শোচনীয় অবস্থায় চলে গিয়েছিল যে মার্কিন সেনাদের কাছ থেকে খাবার চেয়ে নিয়ে পেট ভরাতে হয়েছে মেয়েটিকে। যুদ্ধ শেষে রোমে এসে আলোকচিত্রীদের জন্য মডেল হিসেবে কাজ শুরু মেয়েটি। ১৪ বছর বয়সেই এক সুন্দরী প্রতিযোগিতায় জিতে নেয় ‘সাগরের রানি’ শিরোপা। কিশোরী ‘সাগরের রানি’ থেকে একদিন ওই মেয়েটিই হয়ে ওঠে পশ্চিমের ‘সেলুলয়েডের দেবী’ সোফিয়া লরেন। কিন্তু ওই কিশোরীর গল্প যেন এখনো ফুরায়নি। গত মাসে ৮০ পূর্ণ করা সোফিয়া জানিয়েছেন, শিগগিরই প্রকাশিত হতে যাচ্ছে তাঁর প্রথম আত্মজীবনী ‘গতকাল, আজ, আগামীকাল’। দ্য অবজারভার অবলম্বনে সোফিয়ার প্রেম ও প্রণয়ের এক অধ্যায়। ফ্ল্যামেঙ্কোর মাতাল বাতাস ২২ বছরের টগবগে তরুণী হুয়ানা যখন স্কার্টে সাগরের ঢেউ তুলে ফ্ল্যামেঙ্কোর উন্মাতাল মুদ্রায় নগ্ন পায়ে নেচেছিল, তখন সামনে দাঁড়ানো মন্ত্রমুগ্ধ কৃষকেরা কী ভেবেছিল তা হয়তো আমরা কোনোদিনই জানতে পারব না। কিন্তু দ্য প্রাইড অ্যান্ড দ্য প্যাশন সিনেমায় হুয়ানা চরিত্রে সোফিয়া লরেনের ফ্ল্যামেঙ্কোর মাতাল বাতাস ইংলিশ হিরোর চরিত্রে অভিনয় করা ক্যারি গ্রান্টের হৃদয়ে যে ঝড় বইয়ে দিয়েছিল তার খানিকটা পশ্চিমা সিনে দুনিয়ার লোকেরা হয়তো সে সময়েই টের পেয়েছিলেন! বাকিটা সোফিয়া নিজ মুখেই বলেছেন তাঁর ভক্ত ও পাঠকদের। ১৯৫৭ সালে স্পেনে দ্য প্রাইড অ্যান্ড দ্য প্যাশন-এর শুটিংয়ের সময়ই সোফিয়ার প্রেমে মজেছিলেন ক্যারি গ্রান্ট। যদিও ক্যারি তখন সোফিয়ার চেয়ে ৩০ বছরের বড় এবং তিনি তৃতীয় স্ত্রীর সঙ্গে ঘর করছিলেন। সে সময় প্রেমের অর্ঘ্য হিসেবে প্রতিদিন সোফিয়াকে ফুলের তোড়া পাঠাতেন ক্যারি। ক্যারির চিঠিগুলোতেও থাকত একধরনের প্রায় আধ্যাত্মিক আত্মনিবেদনের আরতি। ‘তুমি সব সময় আমার প্রার্থনায় থাকবে’ কিংবা ‘তুমি যদি আমারই মতো চিন্তা করো আর আমার সঙ্গে প্রার্থনা করো, আমার মতো করেই চাও একই পরিণতি, সবকিছুই ঠিকঠাক থাকবে আর জীবনও মঙ্গলময় হবে।’ সেকালের হলিউড কিংবদন্তি ক্যারি গ্রান্ট এভাবেই সোফিয়া লরেনের কাছে নিজেকে প্রকাশ করেছিলেন।সোফিয়া লরেন। জন্ম: ২০ সেপ্টেম্বর, ১৯৩৪। আমেরিকান নাগরিক ক্যারি চেয়েছিলেন সোফিয়া তাঁকে জীবনসঙ্গী হিসেবে গ্রহণ করবেন। কিন্তু কৈশোরের বিভীষিকাময় জীবনের স্মৃতি তখনো দগদগে সোফিয়ার স্মৃতিতে। ফলে তিনি এমন কাউকেই বিয়ে করার কথা ভাবছিলেন যার সঙ্গে থাকলে ব্যক্তিজীবন আর সিনেমার ক্যারিয়ার দুই-ই ঠিকঠাক গোছানো সম্ভব হবে। এ কারণেই কার্লো পন্টিকে বিয়ে করেছিলেন সোফিয়া। নেপলসের কাছের ছোট্ট শহর পোজ্জোউলি থেকে রোমে এসে সেরা সুন্দরীর পুরস্কার জেতার পরই ইতালীয় চলচ্চিত্র নির্মাতা কার্লো পন্টির নজরে এসেছিলেন সোফিয়া। কার্লোর হাত ধরেই সিনেমায় ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল তাঁর। বছর দুয়েক আগে এক সাক্ষাৎ​কারে সোফিয়া জানিয়েছিলেন, তিনি ওই সময়ে আসলে এমন কাউকে খুঁজছিলেন যিনি একই সঙ্গে তাঁর সঙ্গী এবং পথপ্রদর্শক হতে পারবেন। ‘আমাকে অবশ্যই কাউকে বেছে নিতে হতো। কার্লো ইতালীয়, সে আমার জগতের বাসিন্দা। আমি জানতাম, এটাই আমার জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত।’ কিংবদন্তি এই অভিনেত্রী আরও বলেন, ‘সেই সময়ে আমার কোনো আফসোস ছিল না। আমি আমার স্বামীকে ভালোবাসতাম। ক্যারির প্রতিও আমার অনেক অনুরাগ ছিল। কিন্তু আমার বয়স তখন মাত্র ২৩ এবং তখন ভিনদেশি এক বিরাট মানুষকে বিয়ে করার জন্য কার্লোকে ত্যাগ করতে আমার মন সায় দেয়নি। আমি অত বড় সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি।’ এ সবই সোফিয়া জানিয়েছেন তাঁর প্রকাশিতব্য বইয়ে। সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় নিজ বাড়িতে পুরোনো চিঠিপত্র আর নানা উপহারের একটা বাক্স খুঁজে পাওয়ার পরই সোফিয়া নিজের প্রথম আত্মজীবনীমূলক বইয়ের কাজে হাত দেন। সেপ্টেম্বরের ২০ তারিখে ৮০তম জন্মদিনকে ঘিরে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, খুব শিগগির জীবনের ওই অপ্রকাশিত অধ্যায়ের কিছুটা সবার জন্য উন্মুক্ত করে দিচ্ছেন তিনি। সোফিয়ার আত্মজীবনী গতকাল, আজ, আগামীকাল নামটিও তিনি নিয়েছেন তাঁরই অভিনীত সিনেমা থেকে। ১৯৬৩ সালে বিখ্যাত ইতালীয় চলচ্চিত্র নির্মাতা ভিত্তোরিও ডি সিকা পরিচালিত ইয়েসটারডে, টুডে, টুমরো সিনেমায় সোফিয়া তিনটি চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। লেখিকা সোফিয়ার এই বই, ‘অপ্রকাশিত স্মৃতি, কৌতূহল উদ্দীপক গল্প, ছোট ছোট গোপন কথার এক সংকলন, যার সবই হঠাৎ করে খুঁজে পাওয়া এক বাক্স থেকে আবেগের ঝরনাধারা হয়ে অভিজ্ঞতা আর রোমাঞ্চ নিয়ে বেরিয়ে পড়েছে।’ একুশে সংবাদ ডটকম/আর/২১-১০-০১৪:

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1