সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

সিলেটের জাফলং'য় পর্যটকদের মিলনমেলা

প্রকাশিত: ০৯:৫৩ এএম, অক্টোবর ২০, ২০১৪
একুশে সংবাদ : ঈদের ছুটিতে সিলেটের জাফলং, রাতারগুল, পান্তুমাই ও বিছনাকান্দি, লাউয়াছড়া, মাধবকুণ্ড পর্যটন এলাকা পর্যটকদের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে। ভারতের মেঘালয় পাহাড় ঘেঁষা প্রকৃতির অপরূপ লীলাভূমি জাফলং, পান্তুমাই, বিছনাকান্দি আর বিশ্বের অন্যতম জলা বন রাতারগুল দেখার জন্য ভিড় করছেন দেশের বিভিন্ন জেলার মানুষ। দেশের বাইরে থেকেও পর্যটকেরা আসছেন। মানুষ ব্যস্ত জীবনের ফাঁকে একটু অবসর চায়। পরিবার, বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে চায় প্রিয় জায়গাগুলোতে ঘুরে বেড়াতে। ঈদের ছুটি ভ্রমণপিপাসু মানুষকে সেই সুযোগ এনে দিয়েছে। সিলেট শহর থেকে ৫৯ কিলোমিটার দূরে মেঘালয় পাহাড়ের সীমান্তে জাফলং পর্যটন এলাকা। এখানে রয়েছে জেলা পরিষদ ডাকবাংলো, তামাবিল জিরো পয়েন্ট, পার্বত্য অঞ্চলের মতো আঁকাবাঁকা সড়ক, ছোট-বড় বিভিন্ন আকৃতির পাহাড়-টিলা। এ ছাড়াও জাফলং-এ রয়েছে গ্রীন পার্ক, ঝরনা, চা-বাগান, খাসিয়া আদিবাসীদের বাড়ি এবং কমলা বাগান। এ কারণে জাফলং দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম পর্যটন নগরী হিসেবে পর্যটকদের কাছে বিশেষ পরিচিতি লাভ করেছে। ঈদের ছুটি ছাড়াও প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পর্যটক জাফলং বেড়াতে আসেন। পর্যটকদের জন্য এলাকায় নতুন করে বিভিন্ন ব্যবসাকেন্দ্র গড়ে উঠেছে। বিভিন্ন মানের রেস্তোরাঁ, হোটেল, মোটেলসহ উপহার সামগ্রীর দোকান আগের তুলনায় বেড়েছে। এ সব জায়গা এখন পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত। জাফলং-এ মামার দোকান থেকে শুরু করে বল্লাঘাট পর্যন্ত দীর্ঘ গাড়ির সারি বলে দিচ্ছে এলাকার ব্যস্ততা। যদিও সিলেট-জাফলং মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানের বেহাল অবস্থার কারণে আগত পর্যটকদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তারা আনন্দের পাশাপাশি ক্ষোভ এবং হতাশা নিয়ে ত্যাগ করছেন সিলেটের এই বিখ্যাত পর্যটন স্থান। রাতারগুলেও সব বয়সী পর্যটকের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। একইভাবে পর্যটকের ভিড় চোখে পড়েছে পান্তুমাইয়ে। সেখানে বড়হীল ঝরনা সিলেটের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ। বিশেষ করে তরুণ তরুণীদের প্রিয় স্থান এই বড়হীল ঝরনা। গোয়াইনঘাট উপজেলার রুস্তমপুর ইউনিয়নে দেশের বৃহত্তম পাথর কোয়ারী বিছনাকান্দি এলাকাতেও পর্যটকদের উপস্থিতি ছিল আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় বেশি। জাফলং পিকনিক রেষ্টুরেন্টের প্রোপাইটার রাজিবুল ইসলাম শিমুল বলেন, ‘অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার পর্যটকদের সংখ্যা বেশি। ব্যবসা ভালোই হচ্ছে। পর্যটকদের সেবা দিতে আমরা প্রস্তুত।’ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় উপ-পরিচালক তাহমীনা খানম বলেন, ‘পান্তুমাই পর্যটন এলাকা দেখে খুব ভালো লাগল। তবে দেশের অন্যান্য পর্যটন এলাকার চেয়ে পান্তুমাই স্পট এখনও অক্ষত রয়েছে। এখন স্থানীয় এবং সরকারিভাবে জায়গাটির রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে।’ অপরদিকে সিলেটের পাশ্ববর্তী জেলা মৌলভীবাজারে লাউয়াছড়া, মাধবপুর লেক ও হাম হাম ঝরনা দেখার জন্যও অনেক পর্যটক ভিড় করছেন। পবিত্র ঈদুল আজহার টানা ছুটিতে এই জেলার লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, নয়নাভিরাম মাধবপুর লেক, হাম হাম জলপ্রপাত, বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী হামিদুর রহমানের স্মৃতিস্তম্ভসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পট এখন দেশি-বিদেশি পর্যটকের পদচারণায় মুখরিত। গত শুক্রবার পর্যন্ত এসব এলাকায় পর্যটকদের ভিড় সামলাতে পর্যটন সহায়ক পুলিশ ও ট্যুরিস্ট গাইডদের যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে সপরিবারে লাউয়াছড়া বেড়াতে আসা পর্যটক রাসেল আহমদ, সিলেটের ব্যবসায়ী সালাউদ্দিন, আশফাক আহমদ, গৃহিণী তানিয়া আক্তার, কলেজছাত্রী হেপী বেগমের সঙ্গে এই প্রতিবেদকের কথা হয়। সকলেই লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের অপরূপ প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হয়েছেন। নয়নাভিরাম মাধবপুর লেকে বেড়াতে এসেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার স্কুল শিক্ষক রফিকুল ইসলাম, গৃহিণী তাসলিমা বেগম, ব্যবসায়ী আবু তালেব। তারাও এই প্রতিবেদকের কাছে তাদের মুগ্ধতার কথা প্রকাশ করে সময় ও সুযোগ করে পুনরায় মাধবপুর লেকে আসার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। মৌলভীবাজার থেকে বেড়াতে আসা রাজিব মিয়া বলেন, ‘কমলগঞ্জ থেকে মাধবপুর লেকে আসার রাস্তাটি খুব খারাপ। রাস্তা সংস্কার করলে এই মনোরম লেকে পর্যটক বাড়বে।’ সুনামগঞ্জের স্কুল শিক্ষক আ স ম দানিয়াল বলেন, ‘লেকটিকে ঘিরে বিনোদনের জন্য সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করলে একদিকে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আদায় হবে, অন্যদিকে পর্যটকদের কাছেও লেকটি আরো আকর্ষণীয় হবে।’ লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের কো-ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য মনজুর আহমদ মান্না বলেন, ‘পবিত্র ঈদুল আজহার টানা ছুটিতে গত ৪-৫ দিনে লাউয়াছড়ায় টিকেট বিক্রি করে আয় হয়েছে প্রায় দেড় লাখ টাকা। বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র রক্ষা করাসহ পর্যটকদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার থাকলে পর্যটন শিল্পে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান আরো ভালো ভূমিকা রাখতে পারবে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অনুপম সৃষ্টি মাধবকুণ্ড। যুগ যুগ ধরে এ পাহাড়ি জলকন্যা ভ্রমণপিপাসু পর্যটকদের কাছে টানছে। মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার এই জলপ্রপাত প্রতি বছরের ন্যায় এবার ঈদের ছুটিতেও পর্যটকের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে। জায়গাটি যেন পর্যটকের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। কয়েক যুগ ধরে মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতের ঝরনাধারা প্রবাহমান থাকলেও সত্তরের দশকে দর্শনীয় স্থান হিসেবে এর পরিচিতি প্রকাশ পায়। বিপুলসংখ্যক পর্যটকের আগমনে হাসি ফুটে উঠেছে মাধবকুণ্ডের হোটেল-মোটেলসহ ছোট-বড় সব ধরনের ব্যবসায়ীর মুখে। একুশে সংবাদ ডটকম/আর/২০-১০-০১৪:

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1