AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

সদরপুরে বাঙ্গির বাজার


Ekushey Sangbad
জেলা প্রতিনিধি, ফরিদপুর
০১:৩৩ পিএম, ১২ এপ্রিল, ২০২২
সদরপুরে বাঙ্গির বাজার

ছবি: একুশে সংবাদ

রাশেদুল হাসান কাজল: রমজান মাসকে সামনে রেখে প্রতিবছরই ফরিদপুর জেলার সদরপুর উপজেলায় বাঙ্গি ও লালমির চাষ করা হয়।

গ্রীষ্মকালীন এই কুমড়া জাতীয় বাঙ্গি ও লালমি উপজেলায় এ বছর ৮৯১ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে।

সদরপুরের প্রায় প্রাতি হাটেই দেখা যায় থরে থরে সাজানো পাকা হলুদ, আধা পাকা সবুজ বাঙ্গি ও লালমি। 

বাজারে এসব ফলের দামও ভালো। অন্যান্য বছর বাঙ্গির কাঙ্ক্ষিত দাম না পেয়ে হতাশ হলেও এবার খুশি চাষিরা।

স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহর ও হাট-বাজারে যায় এই ফল। প্রতিদিন উপজেলার বাজার থেকে শত শত ট্রাকে দেশের বিভিন্ন স্থানে নেওয়া হচ্ছে বাঙ্গি।

উপজেলার প্রধান বাঙ্গির বাজার কাটাখালী, বাধানোঘাট ও নতুন বাজারে গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকেই চাষিরা তাদের বাঙ্গি, লালমি নিয়ে আসছেন। বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ীরা এসেছেন বাঙ্গি কিনতে। প্রকার ভেদে একশ’ বাঙ্গি তিন হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়।

স্থানীয় চাষি রাশেদ শেখ বলেন, এক বিঘা (৫২ শতাংশ) জমিতে বাঙ্গি ও লালমি চাষে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা খরচ হয়। এ বছর এক বিঘা জমিতে ৫০ থেকে ৮০ হাজার টাকার বাঙ্গি বিক্রি হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, বাঙ্গি তোলার পর সেই জমিতে ধান চাষ করা যায়। একই জমিতে দুই ধরনের ফসল চাষ করতে পেরে আমরা বেশ লাভবান হচ্ছি।

আর লালমি একটি নতুন বৈশিষ্ট্যের বাঙ্গি। শীতের দুই মাস বাদে বছরের যেকোনো সময় এটি চাষ করা যায়। রোপণের ৬০ দিনের মধ্যে লালমি পেকে যায়। তাই কৃষকেরা এমন সময় এর বীজ বপন করেন, যাতে রমজান মাসে ফলগুলো বাজারে তোলা যায়। ফরিদপুরে উৎপাদিত ১৮টি ফলের মধ্যে আর্থিক বিবেচনায় বাঙ্গি ও লালমির অবস্থান ৫ নম্বরে। এ কারণে এই ফল চাষে মানুষের আগ্রহ বেশি থাকাই স্বাভাবিক।

ফরিদপুরের কৃষকেরা বলছেন, ১৫ বছর আগে সদরপুরের কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের যাত্রাবাড়ী এলাকায় আলিম খাঁ নামের এক কৃষক প্রথম লালমি চাষ করেন। 

একদম শুরুর দিকের চাষী সদরপুরের কৃষক আলীম খাঁ  বলেন, বছর ১৫ আগে প্রথম এই ফলটি চাষ করেছিলেন। “লালমি বলতে গেলে সারা বছরই হয়। ক্ষেতে লাগালে ৬০ দিন লাগে ফল তোলার সময় হতে। আমরা যেটা করি রোজার হিসেব করে ঠিক তার দুই মাস আগে এর চারা লাগাই।”

তিনি বলেন “শুরুটা ছিল বীজের দোকান থেকে একজন হঠাৎ একটা বীজ দিয়ে বলেছিল এটা লাগিয়ে দেখত। আমরা লাগালাম, তারপর দেখি বেশ চলছে। কিন্তু এখন আমরা নিজেরাই বীজ বানাই। যখন ফসল ওঠে তখন ট্রাকের পর ট্রাক যায় আমাদের এলাকা থেকে।”

এদিকে বাঙ্গির আবাদ সম্পর্কে কৃষ্ণপুর গ্রামের চাষি জুলহাস শেখ জানান, ৭৮ শতাংশ জমিতে বাঙ্গি চাষ করতে প্রায় ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। রোজার শেষ পর্যন্ত বাজারে চলমান দাম থাকলে প্রায় এক লাখ টাকা বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে।

কাটাখালী বাজারের বাঙ্গি ব্যবসায়ী শেখ সামাদ জানান, স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে দেশের বিভিন্ন স্থানে যায় এই বাজারের বাঙ্গি। বিভিন্ন স্থান থেকে এখানে পাইকারি ব্যবসায়ীরা আসেন। এ বছর বাঙ্গির দাম ভালো। প্রকার ভেদে একশ’ বাঙ্গি তিন হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।

ঢাকার দোহার থেকে আসা পাইকারি ব্যবসায়ী আক্তার হোসেন বলেন, রোজার সময় প্রতিবছরই এখানে আসি বাঙ্গি কিনতে। এখান থেকে বাঙ্গি, লালমি কিনে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে নিয়ে বিক্রি করি। একশ বাঙ্গি চার হাজার টাকায় কিনেছি, আবার একটু বড় আকারের একশ কিনেছি ছয় হাজার টাকায়।

সদরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বিধান রায় জানান, রোজার মৌসুমে উপজেলায় ৮৯১ হেক্টর জমিতে বাঙ্গি ও লালমি চাষ করা হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবার দাম ভালো পাওয়ায় লাভবান হচ্ছেন চাষিরা। বাঙ্গি তোলার পর ধান চাষ করা যায় ওই জমিতে। একই জমিতে দুই ধরনের ফসল চাষ করতে পারায় চাষিরা বেশি লাভবান হচ্ছেন।

ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো: হযরত আলী বলেন, ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার কৃষকরা বাঙ্গি ও লালমি লাগাচ্ছেন। একটা উপজেলার জন্য ৮৯১ হেক্টর জমিতে এর আবাদ এটি অনেক বড় ব্যপার। এছাড়া চরভদ্রাসন, নগরকান্দা, ভাঙ্গা এসব এলাকাতেও কিছুটা চাষ হচ্ছে। এর সাথে হাজার দেড়েক কৃষক এখন জড়িত।

লালমি সম্পর্কে ঐ কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে গবেষণা করে এই ফসলের চাষ সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য  কৃষি বিভাগ এ ফলের অধিক মূল্যায়ন ও উন্নয়নের জন্য গবেষণা শুরু করেছে।


একুশে সংবাদ//এইচ আই

Link copied!