AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

জয় দিয়ে শেষ হলো মাশরাফির অধিনায়কত্বের অধ্যায়


Ekushey Sangbad

১১:৩৩ এএম, মার্চ ৭, ২০২০
জয় দিয়ে শেষ হলো মাশরাফির অধিনায়কত্বের অধ্যায়

জয় দিয়ে শেষ হলো বাংলাদেশের মাশরাফি বিন মর্তুজার অধিনায়কত্বের অধ্যায়। গতকাল সিলেট আর্ন্তজাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়েকে বৃষ্টি আইনে ১২৩ রানে বড় ব্যবধানে হারায় বাংলাদেশ। ফলে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতে জিম্বাবুয়েকে টানা চতুর্থবারের মত হোয়াইটওয়াশ করলো টাইগার।

এই জয়ের মাধ্যমে অধিনায়ক হিসেবে ওয়ানডেতে ৫০ ম্যাচ জয়ের রেকর্ড গড়লেন মাশরাফি। তাই জয়ের হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নিয়ে অধিনায়কত্বের অধ্যায় শেষ করলেন বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল দলপতি মাশরাফি।

গতকালই ঘোষনা দিয়েছিলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক হিসেবে আজই শেষ ওয়ানডে খেলবেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। সাংবাদিক সম্মেলনে আবেগ ছুয়েছিলো তাকে। সেই আবেগ ছুয়েছে বাংলাদেশের অগণিত ক্রিকেটপ্রেমির মনেও। কিন্তু অধিনায়ক হিসেবে বিদায়ের শুরুটা যেন খারাপই থেকে গেল মাশরাফির। টস ভাগ্যে হারেন তিনি। অবশ্য অধিনায়ক হিসেবে নিজের প্রথম ওয়ানডেতে ঠিকই টস জিতেছিলেন ম্যাশ।

টস ভাগ্যে মাশরাফি হারলেও সিরিজের শেষ ম্যাচে প্রথম ব্যাট করতে নামতে হয় বাংলাদেশকে। সিরিজের প্রথম দু’ম্যাচেও আগে ব্যাট করেছিলো টাইগাররা। দু’ম্যাচে ৩শর উপর রান করে সিরিজ আগেই নিশ্চিত করেছিল বাংলাদেশ।

তবে আজ সিরিজ নিয়ে চিন্তা নয়, ‘অধিনায়ক’ হিসেবে মাশরাফির বিদায়ী ম্যাচকে জয় দিয়ে স্মরনীয় করে রাখাই প্রধান লক্ষ্য ছিলো তামিম-লিটন-মাহমুদুল্লাহদের।

জয়ের ভিত গড়তে বাংলাদেশের হয়ে ইনিংস শুরু করেন দুই ওপেনার তামিম-লিটন। উইকেট ধরে রেখে খেলার দিকেই মনোযোগি ছিলেন তারা। তাই প্রথম পাওয়ার প্লেতে কোন উইকেট না হারিয়ে ৫৩ রান করে বাংলাদেশ।

১৬তম ওভারে ৫৪ বলে হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন লিটন। তবে দলের স্কোর শতরানে পৌঁছেছে ১৯তম ওভারে। সর্তকতার সাথে শুরু করে ৬০তম বলে হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান তামিম। তবে অন্যপ্রান্তে বলের সাথে পাল্লা দিয়ে রান তুলছিলেন লিটন।

ইনিংসের ৩৩তম ওভারের শেষ বলে জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক ও স্পিনার সিন উইলিয়ামসকে বাউন্ডারি মেরে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের তৃতীয় ও সিরিজে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেন লিটন। এজন্য তিনি বল মোকাবেলা করেছেন ১১৪টি। সেঞ্চুরির আগে সাবধনতার কারনে কিছু ডট বলও দেন লিটন।

লিটনের সেঞ্চুরি পাবার পরের ওভারে বৃষ্টির কারনে বন্ধ হয় খেলা। এ সময় বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ৩৩ দশমিক ২ বলে বিনা উইকেটে ১৮২ রান। লিটন ১১৬ বলে ১০২ ও তামিম ৮৪ বলে ৭৯ রানে অপরাজিত ছিলেন।

বৃষ্টির বন্ধের পর প্রায় আড়াই ঘন্টা পর শুরু হয় খেলা। বৃষ্টির কারনে ম্যাচের আয়ু আড়াই ঘন্টা শেষ হলে, ৪৩ ওভারে নির্ধারিত শেষ ওয়ানডে। অর্থাৎ ঐ অবস্থায় বাংলাদেশ আর ৫৮টি বল খেলতে পারবে।

ম্যাচের দৈর্ঘ্য কমে যাওয়ায় মন খারাপই হয়েছিলো ক্রিকেটপ্রেমিদের। কারন তামিম-লিটনের শক্তপোক্ত ভিত বাংলাদেশকে রানের পাহাড়ে উঠার পথ তৈরি করে দিয়েছিলো। বাকী ৫৮ বলে কত দূরই-বা যেতে পারবে বাংলাদেশ!!

দ্বিতীয় দফায় ব্যাট হাতে নেমে ভয়ংকর রুপ দেখিয়েছেন লিটন-তামিম। বিশেষভাগে লিটন। বৃষ্টির পর ব্যাট হাতে নেমে ২৭ বল খেলে ৭৪ রান করেছেন লিটন। তামিম করেছেন ২৫ বলে ৪৯ রান। এসময় ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১৩তম ও সিরিজের টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরির স্বাদ নেন তামিম।

বৃষ্টির পর ৭৪ রান লিটনকে বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাসে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারীর আসনে । ১৩৫তম বলে জিম্বাবুয়ের স্পিনার সিকান্দার রাজাকে ছক্কা মেরে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে দেড়শ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন লিটন। ৪০তম ওভারে দেড়শ করেছিলেন তিনি। একই ওভারের পঞ্চম বলে আবারো ছক্কা মেরে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের মালিক হয়ে যান লিটন। ১৬০ রানে পৌছে যান তিনি। ফলে পেছনে পড়ে যান তামিম। ১৫৮ রান নিয়ে এত দিন সবার উপরে ছিলেন তামিম।

যাকে টপকে রেকর্ড গড়েছেন, সেই তামিমের কাছ থেকেই সর্বপ্রথম অভিনন্দনটা পান লিটন। কারন তখন ১০৯ রানে ব্যাট করছিলেন তামিম।
তামিমকে ছাড়ানোর পরের ওভারেই আউট হন লিটন। জিম্বাবুয়ের পেসার চার্লটন মুম্বার বলে লং-অনে রাজাকে ক্যাচ দেন তিনি। বৃষ্টির পর দ্বিতীয় দফার ব্যাটিং-এ তিনবার জীবন পান লিটন। শেষ পর্যন্ত ১৬টি চার ও ৮টি ছক্কায় ১৪৩ বলে ১৭৬ রান করেন লিটন। সেই সাথে ২৯২ রানে ভাঙ্গে বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি। এতেই বাংলাদেশের পক্ষে যেকোন উইকেট জুটিতে সর্বোচ্চ রানের জুটি গড়ার মালিক হন তামিম-লিটন। ২৪৫ বল খেলেছেন তামিম-লিটন।

লিটনের পর ক্রিজে এসে ৩ রানে থামেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। এরপর ব্যাট হাতে নামেন অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা আফিফ হোসেন।

ইনিংসের শেষ বলে আউট হওয়ার আগে ৪ বলে ৭ রান করেন আফিফ। ৭টি চার ও ৬টি ছক্কায় ১০৯ বলে ১২৮ রানে অপরাজিত থাকেন তামিম। ৪৩ ওভারে ৩ উইকেটে ৩২২ রান করে বাংলাদেশ। শেষ ৫৮ বলে ১৪০ রান করে টাইগাররা। জিম্বাবুয়ের পেসার মুম্বা ৬৯ রানে ৩ উইকেট নেন।

বাংলাদেশ ৩২২ রান করায় বৃষ্টি আইনে ৪৩ ওভারে ৩৪২ রানের বড় টার্গেট পায় জিম্বাবুয়ে। সেই লক্ষ্যে জিম্বাবুয়ের ইনিংস শুরু করেন তিনাসি কামুনহুকামবে ও রেগিস চাকাবা। বল হাতে আক্রমনে ছিলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক মাশরাফি। প্রথম বলটি ওয়াইড করেন তিনি। ম্যাশের পরের বলটি আউট সুইং ছিলো। সেটি ভালোভাবে সামলাতে পারেননি কামুনহুকামবে। তার ব্যাটের কোনায় লেগে থার্ড ম্যাচ দিয়ে চার হয়।

মাশরাফির আউট সুইং সামলাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন কামুনহুকামবে। তাই এমন ডেলিভারি অব্যাহত রেখেছিলেন ম্যাশ। তাই দ্রুত সাফল্য পেয়ে যান মাশরাফি। চতুর্থ বলেই উইকেটে পেছনে ৪ রান করা কামুনহুকামবকে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন ক্যাপ্টেন ফ্যান্টাসিক। ২২০ ম্যাচে মাশরাফির এটি ২৭০তম উইকেট ছিলো।

পুরো সিরিজেই ব্যর্থ ছিলেন অভিজ্ঞ ব্রেন্ডন টেইলর। এবারও ব্যর্থতা থেকে বের হতে পারলেন না তিনি। অবশ্য ৩টি চারে ভালো কিছুর ইঙ্গিতই দিচ্ছিলেন টেইলর। তবে ১৪ রান করে বাংলাদেশের পেসার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের শিকার হন টেইলর।

২৮ রানে ২ উইকেট পতনের পর দলের হাল শক্ত হাতে ধরার চেষ্টা করেছিলেন আরেক ওপেনার চাকাবা ও অধিনায়ক উইলিয়ামস।

দেখেশুনে খেলে বড় জুটি গড়ার চেষ্টায় ছিলেন তারা। সাফল্যের দিকেই এগোচ্ছিলেন চাকাবা ও উইলিয়ামস। তবে এই জুটিকে বিচ্ছিন্ন করে দেন পঞ্চম বোলার হিসেবে আক্রমনে আসা আফিফ। নিজের প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলেই উইকেট শিকারের আনন্দে মাতেন আফিফ। উইলিয়ামসকে ৩০ রানে আউট করেন তিনি। তার ৩৬ বলের ইনিংসে ৫টি চার ছিলো। তৃতীয় উইকেটে চাকাবা ও উইলিয়ামস ৪৬ রান যোগ করেন।

অধিনায়ক ফিরে যাবার ওয়েসলি মাধভেরেকে নিয়ে দলের স্কোর শতরান অতিক্রম করান চাকাবা। আগেরটি মত এই জুটিও বড় হতে থাকে। কিন্তু এখানে বাঁধ সাধেন বাংলাদেশের স্পিনার তাইজুল। ৪৫ বলে ১টি চারে ৩৪ রান করা চাকাবাকে বোল্ড করেন তাইজুল।

চাকাবার বিদায়ে উইকেটে আসেন শততম ম্যাচ খেলতে নামা রাজা। মারমুখী মেজাজে খেলতে থাকেন মাধভেরে-রাজা। কিন্তু এই জুটিও ভালো কিছুই ইঙ্গিত দিয়ে ৩৭ রানে আটকে যায়। ৪২ বলে ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪২ রান করা মাধভেরেকে শিকার করে জুটি ভাঙ্গেন সাইফউদ্দিন। জুটিতে ৩৭ রান এসেছিলো।

সাত নম্বরে নামা রিচমন্ড মুতুম্বামি দুভার্গ্যের শিকার হন। রানের খাতা খোলার আগেই শুন্য হাতে ফিরেন তিনি। ব্যাট হাতে এবার আর সুবিধা করতে পারেননি তিনোতেন্ডা মুতোমবদজি। ৭ রান করে পেসার মুস্তাফিজুর রহমানের প্রথম শিকার হন মুতোমবদজি। এতে ১৭৩ রানে সপ্তম উইকেট হারিয়ে ম্যাচ হারের পথ দেখে ফেলে জিম্বাবুয়ে।

এরপর রাজার লড়াকু ইনিংসে জিম্বাবুয়ের স্কোর দুশ পেরোয়। শেষ পর্যন্ত রাজার হাফ সেঞ্চুরিতে ৩৩ বল বাকি থাকতেই ২১৮ রান পর্যন্ত করতে সক্ষম হয় জিম্বাবুয়ে। ৫০ বলে ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় ৬১ রান করেন রাজা। বাংলাদেশের সাইফউদ্দিন ৪১ রানে ৪টি উইকেট নেন। এছাড়া তাইজুল ২টি, মাশরাফি-মুস্তাফিজ-আফিফ ১টি করে উইকেট নেন।

এস/ব,স// ০৭.০৩.২০২০

Link copied!