AB Bank
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

ই-পাসপোর্ট জাতির জন্য ‘মুজিব বর্ষের’ উপহার : প্রধানমন্ত্রী


Ekushey Sangbad

০৪:৪২ পিএম, জানুয়ারি ২২, ২০২০
ই-পাসপোর্ট জাতির জন্য ‘মুজিব বর্ষের’ উপহার : প্রধানমন্ত্রী

একুশে সংবাদ : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট কর্মসূচি এবং স্বয়ংক্রিয় বর্ডার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনার উদ্বোধন করে বলেছেন, এটা (ই-পাসপোর্ট) জাতির জন্য ‘মুজিব বর্ষে’ একটি উপহার। প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘আমরা মুজিব বর্ষে দেশের জনগণের হাতে ই-পাসপোর্ট তুলে দিচ্ছি। এটি একটি বিশেষ বছর এবং ঘটনাক্রমে জাতি এ বছর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উদযাপন করছে।খবর বাসস । তিনি বলেন, ‘এর মাধ্যমে যে কোন দেশে প্রবেশ এবং বহির্গমনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশী নাগরিকের ঝামেলামুক্ত চলাচল নিশ্চিত হবে এবং ই-গেটের সর্বাধিক সুবিধা গ্রহণ করা যাবে।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ‘ই-পাসপোর্ট কর্মসূচি এবং স্বয়ংক্রিয় বর্ডার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনার উদ্বোধন করেন। দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম এবং বিশ্বে ১১৯ তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি ই-পাসপোর্ট এবং স্বয়ংক্রিয় বর্ডার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা সন্দেহাতীতভাবে ডিজিটাল বিশ্বে বাংলাদেশের জনগণের মর্যাদা আরো সমুন্নত করবে এবং বাংলাদেশ আরো এক ধাপ এগিয়ে যাবে।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘ই-পাসপোর্টে এমবেডেড ইলেকট্রনিক মাইক্রো প্রসেসর চিপ থাকবে। যেখানে পাসপোর্ট গ্রহিতার সকল তথ্য, স্বাক্ষর, ছবি, চোখের কর্ণিয়া এবং ফিঙ্গার প্রিন্ট সিল্ড অবস্থায় সুরক্ষিত থাকে।’ তিনি আরো উল্লেখ করেন, ‘অতীতে একটা সমস্যা ছিল পাসপোর্ট নিয়ে। একসময় গলাকাটা পাসপোর্টও দেশে প্রচলিত ছিল, সেটা আর কখনো হবে না। মানুষ আর ধোঁকায় পড়বে না। স্বচ্ছতার সাথে চলবে’,বলেন তিনি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। ঢাকায় জার্মান রাষ্ট্রদূত পিটার ফাহরেনহোল্টস অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বহির্গমন এবং পাসপোর্ট অধিদপ্তরের (ডিআইপি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো.শহিদুজ্জামান অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। ই-পাসপোর্ট প্রকল্পের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল সাইদুর রহমান খান প্রকল্পের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে তাঁর ই-পাসপোর্টটি হস্তান্তর করেন। প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে ই-পাসপোর্ট ভবনের ফলক উন্মোচন করেন এবং এনরোলমেন্ট বুথ পরিদর্শন করেন। অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাগণ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, উর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত এবং কূটনীতিক, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধি এবং আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এই ই-পাসপোর্ট ব্যবস্থা প্রবর্তন বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্র্তি উজ্জ্বল করার পাশাপাশি আধুনিক সুরক্ষা নিশ্চিত করবে এবং ইমিগ্রেশন পদ্ধতি সহজীকরণ করবে বলে গতকাল এক সাংবাদিক সম্মেলনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানান। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন,‘মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট’কে (এমআরপি) আরও অধিকতর নিরাপত্তা সম্বলিত করার জন্য ‘বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট এবং অটোমেটেড বর্ডার কন্ট্রোল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের বাস্তবায়ন’ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের আওতাধীন ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় জার্মান কোম্পানি ভেরিডোস জিএমবিএইচ কর্তৃক ই-পাসপোর্ট ও স্বয়ংক্রিয় বর্ডার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৫শ ৬৯ কোটি টাকা। ই-পাসপোর্টের মেয়াদ হবে ৫ থেকে ১০ বছর। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রাথমিকভাবে ডিআইপি তাদের আগারগাঁও, যাত্রাবাড়ি এবং উত্তরা কার্যালয় থেকে এই পাসপোর্ট ইস্যু করবে। পর্যায়ক্রমে এ বছর থেকেই দেশের সবখান থেকে এই পাসপোর্ট ইস্যু করা সম্ভব হবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বপ্রথম এই পাসপোর্ট লাভ করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতিদিন প্রয়োজনে ২৫ হাজার পাসপোর্ট ইস্যু করা সম্ভব হবে। সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া তথ্য মতে, ৪৮ পৃষ্ঠার ৫ বছর মেয়াদি পাসপোর্টের সাধারণ ফি ৩,৫০০ টাকা, জরুরি ফি ৫,৫০০ টাকা ও অতীব জরুরি ফি ৭,৫০০ টাকা এবং ১০ বছর মেয়াদি পাসপোর্টের সাধারণ ফি ৫,০০০ টাকা, জরুরি ফি ৭,০০০ টাকা ও অতীব জরুরি ফি ৯,০০০ টাকা। নতুন পাসপোর্টের ক্ষেত্রে অতীব জরুরিতে ৩ দিনে, জরুরিতে ৭ দিনে ও সাধারণ পাসপোর্ট আবেদনের ক্ষেত্রে ২১ দিনে পাসপোর্ট পাওয়া যাবে। তবে পুরনো অথবা মেয়দোত্তীর্ণ পাসপোর্ট রি-ইস্যু করার ক্ষেত্রে অতীব জরুরি পাসপোর্ট ২ দিনে, জরুরি পাসপোর্ট ৩ দিনে ও সাধারণ পাসপোর্ট ৭ দিনের মধ্যে দেওয়া হবে। আলাদা আলাদা ই-পাসপোর্ট ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসে সাধারণ আবেদনকারীদের জন্য ৪৮ পৃষ্ঠার ৫ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ১০০ মার্কিন ডলার ও জরুরি ফি ১৫০ মার্কিন ডলার। ১০ বছর মেয়াদি পাসপোর্টের সাধারণ ফি ১২৫ মার্কিন ডলার ও জরুরি ফি ১৭৫ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। ই-পাসপোর্টের আবেদনপত্র জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বা জন্মনিবন্ধন সনদ (বিআরসি) অনুযায়ী পূরণ করতে হবে। অপ্রাপ্ত বয়স্ক (১৮ বছরের কম) আবেদনকারী, যার জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নেই, তার পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নম্বর অবশ্যই সংশ্লিষ্ট তথ্য হিসেবে উল্লেখ করতে হবে। উল্লেখ্য, ই-পাসপোর্ট চালু হলে সমগ্র ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়াটি অন-লাইনে সম্পন্ন করা সম্ভব হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পরই তিনি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত ‘সোনার বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি দেশকে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ হিসেবে গড়ে তোলার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। তিনি বলেন, ‘সেই নির্বাচনী ইশতেহারেই আমরা ঘোষণা দিয়েছিলাম বাংলাদেশ হবে ডিজিটাল বাংলাদেশ। কারণ কম্পিউটার শিক্ষা বা ডিজিটাল ডিভাইস যেন বাংলাদেশের মানুষ ব্যবহার করতে পারে। ’৯৬ সালে কিছু উদ্যোগ নিলেও তা সম্পূর্ণ করে যেতে পারিনি তাই ২০০৮ সালে ক্ষমতায় এসেই সেই উদ্যোগটা নেই। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের জণগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই যে, তাঁরা আমাদের ওপর আস্থা রেখেছেন, বিশ্বাস রেখেছেন, ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে তাঁদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন। তিনি বলেন, জাতির পিতা যুদ্ধবিধ্বস্ত সদ্য স্বাধীন দেশকে পুনর্গঠনে বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণকালে ১৯৭৩ সালে তিনি পূর্নাঙ্গ ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা করেন। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পর জাতির ভাগ্যাকাশে ঘোর অন্ধকার নেমে আসে এবং দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি থেমে গিয়ে হত্যা ক্যু আর ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু হয়, বলেন তিনি। তাঁর সরকার প্রতিশ্রুতি ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে পারায় বর্তমানে জনগণের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটেছে,’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ১৫ ভাগে উন্নীত হয়েছে এবং মাথাপিছু আয় বেড়েছে। দারিদ্রের হার ২০ দশমিক ৫ ভাগে নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে এবং একে আরো কমিয়ে এনে দেশকে দারিদ্রমুক্ত করার লক্ষ্য বাস্তবায়নেই তাঁর সরকারের সকল কর্মসূচি আবর্তিত হচ্ছে বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। শেখ হাসিনা বলেন, সকল উন্নয়ন কাজের সময় আমরা একটা বিষয় মাথায় রাখি, এর সুফল যেন একেবারে গ্রামের তৃণমূল পর্যন্ত পৌঁছায়। তিনি সরকারের এসডিজি বাস্তবায়নের পদক্ষেপ তুলে ধরে বলেন, ‘জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের জন্য আমাদের সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় ইতোমধ্যে বাংলাদেশের জন্য যা যা প্রযোজ্য সেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করে আমরা বাস্তবায়নেও উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। সেইসাথে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে কিভাবে এগিয়ে যাবে সে পদক্ষেপও তাঁর সরকার নিয়েছে উল্লেখ করে ২০১০ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত এবং ২০২১ সাল থেকে ২০৪১ সাল পর্যন্ত গৃহীত প্রেক্ষিত পরিকল্পনার পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় শতবর্ষ মেয়াদি ডেল্টা পরিকল্পনা গ্রহণ এবং বাস্তবায়নের উদ্যোগ ও তুলে ধরেন তিনি। ‘যুগের সাথে তাল মিলিয়ে এইসব পরিকল্পনা যুগোপযোগীকরণ করতে হবে’ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটি লক্ষ্য স্থির করে দেশকে এগিয়ে নেয়ার জন্যই পরিকল্পনা মাফিক তাঁর সরকার এগিয়ে যাচ্ছে।’ এস.ব,স //২২.০১.২০২০
Link copied!