AB Bank
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

বিশ্ব মানবতার কল্যাণ কামনায় শেষ হলো বিশ্ব ইজতেমা


Ekushey Sangbad

১২:১৯ পিএম, জানুয়ারি ১৯, ২০২০
বিশ্ব মানবতার কল্যাণ কামনায় শেষ হলো বিশ্ব ইজতেমা

টঙ্গী ইজতেমা মাঠ থেকে: আবেগপূর্ণ আখেরি মোনাজাতে গোটা দুনিয়ায় পথভ্রষ্ট মুসলমানের সঠিক পথের দিশা এবং তাবলীগের কাজে সবাইকে নিয়োজিত হওয়ার তওফিক কামনা করে মহান আল্লাহ রহমত, মাগফিরাত ও নাজাত প্রার্থনা করা হয়। ইহলৌকিক ও পারলৌকিক কল্যাণ কামনায় দেশ বিদেশের লাখো মুসলিম আল্লাহর দরবারে কান্নাকাটি করেন, চোখের পানি ঝরান। দয়াময় আল্লাহ’র সন্তুষ্টি লাভে আকুতি ব্যক্ত করেন ধনী-গরিবসহ সব পেশার বিভিন্ন বয়সের সর্বস্তরের লাখো মুসল্লি। আবেগঘন কণ্ঠে উচ্চারিত হয়েছে রাহমানুর রাহিম। বেলা ১১টা ৫০ মিনিট থেকে ১২টা ৫মিনিট পর্যন্ত মোনাজাত পরিচালনা করেন ভারতের নিজাম উদ্দিন মার্কাসের মাওলানা জামশেদ। প্রথম ও শেষ পর্বের আখেরি মোনাজাতের মধ্যে দিয়ে শেষ হলো ৫৫তম বিশ্ব ইজতেমার। দুনিয়ার সব বালা-মুসিবত, মুসলিম উম্মাহর রহমত, হেদায়েত, হেফাজত, মাগফিরাত, নাজাত, শান্তি-ঐক্য, দেশ ও বিশ্ব মানবতার কল্যাণ কামনায় আখেরি মোনাজাতে। অনেকই কেঁদে কেঁদে দুই চোঁখের পানিতে বুক ভাসান। আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে সবাই ছুটছিলেন তুরাগ তীরে। বিভেদ ভুলে সবাই যেন একই পথের পথিক। মাঠজুড়ে বিশাল সামিয়ানার নিচে ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে অবস্থান করছেন ইজতেমায় অংশগ্রহণকারী চিল্লাধারী সাথীরা। দ্বিতীয় পর্বের আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে শনিবার রাত থেকেই ঢাকা ও আশপাশের এলাকা থেকে স্রোতে মতো মুসুল্লিরা ইজতেমা ময়দানে এসেছেন। মুসুল্লিরা সবাই নিজের মতো করে শৃঙ্খলা মেনে চলেছেন। সবার মাঝেই ছিল সহযোগিতার মনোভাব। হেদায়েতি বয়ান: বিশ্ব ইজতেমার আয়োজক কমিটির মুরব্বি মাওলানা আশরাফ আলী জানান, সকাল থেকে ইজতেমায় বয়ান করছেন ভারতের মাওলানা ইকবাল হাফিজ। ঈমান, আখলাক, দিনের ওপর মেহনত, ইসলামকে শক্তিশালী করা, সকল ভেদাভেদ ভুলে নিজের দেশ ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখা, নবীওয়ালা কাজে দিন ও সময় ব্যয় করা। পৃথিবীতে শান্তির বাণী ছড়িয়ে দেয়া, ইসলামকে প্রতিষ্ঠিত করা, নামাজ-রোজা ও আল্লাহর ইবাদত পালনের ওপর বয়ান পেশ করা হয়। তিনি বলেন, যে দ্বীন ইসলামের বিধান অনুসারে চলবে এবং হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর জীবনাদর্শ অনুসরণ করবে, সে দুনিয়া ও আখিরাতে সফলতা অর্জন করবে। ঈমানকে শক্তিশালী করতে হলে মানুষকে মসজিদের পরিবেশে বসাতে হবে। মুসলমানের নামাজ ছাড়ার প্রশ্নই আসে না। নামাজ এমনভাবে আদায় করতে হবে, যেমন নবী করিম (সা.) আদায় করেছেন। জোর-জবরদস্তি করে নয়, তাজিমের সঙ্গে বুঝিয়ে কাউকে মসজিদে নিয়ে আসতে হবে। আমাদের প্রত্যেকটি কাজ আল্লাহকে রাজি ও খুশি করার জন্যই করতে হবে। যৌতুকবিহীন ৮৬ বিয়ে: শনিবার মূল বয়ান মঞ্চে যৌতুকবিহীন বিয়ে অনুষ্ঠিত না হলেও ইজতেমা ময়দানের বিশেষ কামরায় (কক্ষে) বর ও কনের অভিভাবকদের উপস্থিতিতে ৮৬টি যৌতুকবিহীন বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। বিয়েতে মোহরানা ধার্য করা হয় ‘মোহর ফাতেমি’র নিয়ম অনুযায়ী। এই নিয়ম অনুযায়ী মোহরানার পরিমাণ ধরা হয় ১৫০ তোলা রুপা বা এর সমমূল্য অর্থ ১ লাখ ৫ হাজার টাকা। নিরাপত্তা জোরদার: গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার আনোয়ার হোসেন বলেন, আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে নেয়া হয় ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পাঁচ স্তরে নিরাপত্তার ব্যবস্থার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন রাখা হয়েছে। মোনাজাতে অতিরিক্ত মাইক: গাজীপুর জেলা তথ্য অফিস সূত্রে জানা যায়, বিশেষ ব্যবস্থাপনায় আখেরি মোনাজাত প্রচারের জন্য গণযোগাযোগ অধিদফতর ইজতেমা ময়দান থেকে আবদুল্লাহপুর-বিমানবন্দর রোড পর্যন্ত এবং জেলা তথ্য অফিস ইজতেমা ময়দান থেকে চেরাগাআলী, টঙ্গী রেলস্টেশন, স্টেশন রোড ও আশপাশের অলিগলিতে পর্যাপ্ত মাইক সংযোগের ব্যবস্থা করেছে। মোনাজাতে বিশেষ ট্রেন ও বাস: আখেরি মোনাজাতের দিন ইজতেমায় অংশগ্রহণকারীদের সুবিধার্থে ১৬টি বিশেষ ট্রেন চলাচল করবে। এছাড়া সব আন্তঃনগর ট্রেন টঙ্গীতে যাত্রা বিরতি করবে। এছাড়া বিআরটিসি’র শতাধিক বিশেষ বাস সার্ভিস চালু থাকবে। ইজতেমাস্থল থেকে জয়দেবপুর চৌরাস্তামুখী ৩০টি এবং মহাখালীমুখী ৩০টি বাস চলাচল করবে। মোনাজাত উপলক্ষে টঙ্গী ও আশপাশ এলাকায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। মাওলানা সাদকে নিয়ে ৫৬তম বিশ্ব ইজতেমা করতে চান তার অনুসারীরা: শনিবার (১৮ জানুয়ারি) রাতে স্থানীয় সংসদ সদস্য যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এবং গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে ইজতেমা ময়দানের শীর্ষ মুরব্বিদের বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে উভয় পক্ষের বিরোধ মিটে যাবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। মুফতি ইজাহারুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ভারতের নিজামুদ্দিন মারকাজের শীর্ষ মুরব্বি মাওলানা সাদ কান্ধলভীর কিছু বক্তব্য নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। সেসব বক্তব্যের ব্যাপারে একটি সমাধানে পৌঁছানের পর আগামীতে টঙ্গী ইজতেমায় তার যোগদানের পথ সুগম হবে বলে মনে করছেন তাবলিগের সাথীরা। প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল ও গাজীপুর সিটি মেয়র অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম প্রথম পর্বের ন্যায় ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বেও তাবলিগ জামাতের মুরব্বিদের সাথে ময়দানে সময় দিয়েছেন। রাত-দিন তারা ইজতেমা মাঠেই অবস্থান করছেন। বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নিলো জাতীয় ক্রিকেট টিম: বিশ্ব ইজতেমার মিডিয়া সমন্বয়কারী সায়েম জানান, বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমের বেশ কয়েকজন সদস্য শনিবার থেকে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে অংশগ্রহণ করেছেন। বিপিএল-এর (বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ) খেলা শেষ হওয়ার পর তারা ইজতেমায় অংশগ্রহন করেন। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, সোহরাওয়ার্দী শুভ, জুনায়েদ সিদ্দিকী, রাকিবুল হাসান ও শাহরিয়ার নাফিস। জাতীয় ক্রিকেট টিমের এসব সদস্য বিদেশিদের জন্য নির্ধারিত খিমায় অবস্থান করেন। সেখানে তারা ভারতের নিজামুদ্দিন মারকাজের শীর্ষ মুরব্বি ও আলেম-ওলামাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং দোয়া কামনা করেন। রাজধানীর বাড্ডা থেকে অনাবিল পরিবহনে এসছেন উজ্জল মিয়া। তার সাথে রয়েছেন আরো ২০জন মুসুল্লি। তিনি বলেন, আমরা প্রতিবারই দুই পর্বের ইজতেমার আখেরি মোনাজাতে অংশ নেই। অন্যান্যবার বিশ্বরোড থেকেই বাস বন্ধ থাকে কিন্তু এবার উত্তরা পর্যন্ত আসতে পেরেছি। আমরা হেঁটে আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে পারলে মনে এক ধরনের মনে শান্তি পাই। তাই হেঁটেই যাই। কোনো কষ্ট মনে হয় না। যে কারণে রাস্তা বন্ধ থাকলেও কোনো ভোগান্তি মনে হয় না। রংপুরের বদরগঞ্জ থেকে এসেছেন দেলোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে ১৫ জনের একটি দল। তাদের মধ্যে থেকে নূরে আলম জানান, আমরা গতকাল (১৮জানুয়ারী) সন্ধ্যায় দ্বিতীয় পর্বের আখেরী মোনাজাতে অংশ নেওয়ার জন্য বাড়ি থেকে রওনা দিয়েছি। ইনশাল্লাহ, সঠিক সময়ের মধ্যে মাঠে পৌছতে পেরে আলাহর কাছে লাখকোটি শুকরিয়া আদায় করছি। এ বছর বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শুরু হয় ১০ জানুয়ারি। আর ১২ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে মাওলানা জুবায়ের অনুসারিদের প্রথম পর্ব শেষ হয়। প্রথম পর্বে ৬৪টি জেলার মুসুল্লিরা অংশ নেন। দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমাতেও দিল্লির মাওলানা সা’দ কান্ধলাভির অনুসারী ৬৪ জেলার মুসল্লিরা অংশ নিয়েছেন। এস.সানি //১৯.০১.২০২০
Link copied!