AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

কচিখালী সমুদ্র সৈকত


Ekushey Sangbad

০৬:৩৬ পিএম, নভেম্বর ২৫, ২০১৯
কচিখালী সমুদ্র সৈকত

একুশে সংবাদ: সুন্দরবনের কটকা নদীর পূর্ব দিকে অবস্থিত প্রাকৃতিক অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি হিসেবে পরিচিত কচিখালী সমুদ্র সৈকত একটি চমৎকার দর্শনীয় স্থান। সমুদ্র সৈকতের পাশাপাশি এখানে আছে বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য এবং পর্যটন কেন্দ্র। সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের এই সৈকতটিকে বলা হয় ভয়ংকর সুন্দর! কারণ সৈকতে পৌঁছাতে হলে বঙ্গোপসাগরের মোহনার খরস্রোতা কটকা নদী ও সুন্দরবনের ভিতরের প্রায় ৩ কিলোমিটার বুনো পথ পাড়ি দিতে হয়। এই পথে প্রায়ই হরিনের পাল, বন্য শুকর এবং বাঘের পায়ের ছাপ দেখা যায়। এডভেঞ্চারপ্রেমীদের জন্য কচিখালী অভয়ারণ্যে প্রবেশের রাস্তাটি একটি আদর্শ জায়গা। নৌকা থেকে নেমে বাঁশের সাঁকো পার হয়ে যেতে হয় বনের গভীরে। কাঙ্ক্ষিত কচিখালী সমুদ্র সৈকতের দেখা মিলে বনের একদম শেষ সীমানায়। পশুর, সুন্দরী, কেওড়া, বাইন ও আমুর গাছের মতো নানা ধরনের বৃক্ষের রঙ্গিন ফুল ও ফলে সাজানো বনের গাছে গাছে আছে নানান প্রজাতির পাখির আবাস। আর বনের উত্তর-পশ্চিম দিকে চিত্রা হরিণ, মায়া হরিণ, বানর, বন মোরগ, অজগর সাপসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণীর বিচরণ। আবার মাঝে মাঝে বিখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগারেরও দর্শন মিলে এই বনে। এছাড়া কটকা নদীর মোহনায় কুমির, শুশুক ও ডলফিনের মতো জলজ প্রাণী দেখতে পাওয়া যায়। কচিখালী সমুদ্র সৈকতের লবনাক্ত জল কটকা নদীর সাথে গিয়ে মিশেছে। ম্যানগ্রোভ বন, ফার্ন এবং ৪০ ফুট উঁচু ওয়াচ টাওয়ার, চোখজুড়ানো সবুজের সমারোহ এবং সূর্যাস্তের অপূর্ব দৃশ্য ইত্যাদি সবকিছু মিলিয়ে কচিখালী সমুদ্র সৈকতের বুনো সৌন্দর্য পর্যটকদের রোমাঞ্চিত করে। খরচ: অভয়ারণ্য এলাকায় দেশি পর্যটকদের জন্য প্রতিদিনের জনপ্রতি ভ্রমণ ফি – ১৫০ টাকা, ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য – ৩০ টাকা, বিদেশি পর্যটকদের জন্য ভ্রমণ ফি – ১৫০০ টাকা। অভয়ারণ্যের বাইরে দেশি পর্যটকদের ভ্রমণ ফি – ৭০ টাকা, ছাত্র-ছাত্রী- ২০ টাকা, বিদেশিদের জন্য ভ্রমণ ফি – ১০০০ টাকা ও গবেষকদের জন্য ভ্রমণ ফি – ৪০ টাকা। করমজলে দেশি পর্যটকদের জন্য ভ্রমণ ফি জনপ্রতি ২০ টাকা, বিদেশিদের জন্য ৩০০ টাকা। হেলিকপ্টার/সী প্লেনের জন্য এককালীন ফি লাগে ৩০ হাজার টাকা, নবায়ন করতে ফি দিতে হয় ১০ হাজার টাকা। ১০০ ফুটের ঊর্ধ্বে লঞ্চের জন্য দিতে হয় ১৫ হাজার টাকা, নবায়ন ফি দিতে হয় চার হাজার টাকা। ৫০ ফুট থেকে ১০০ ফুট লঞ্চের জন্য এককালীন ১০ হাজার টাকা দিতে হয় আর নবায়ন ফি লাগে তিন হাজার টাকা। ৫০ ফুটের নিচে নৌযানের জন্য সাড়ে সাত হাজার টাকা ও এদের জন্য নবায়ন ফি লাগে আড়াই হাজার টাকা। সাধারণ ট্রলার তিন হাজার টাকা ফি-তে সুন্দরবন অবস্থান করতে পারে, এদের নবায়ন ফি – ১৫০০ টাকা। স্পিডবোটের জন্য ফি দিতে হয় পাঁচ হাজার টাকা, নবায়ন করতে লাগে দুই হাজার টাকা। জালিবোট যেগুলো ট্যুরিস্ট বোট হিসাবে খ্যাত সেগুলোর জন্য এককালীন ফি দিতে হয় দুই হাজার টাকা ও নবায়ন ফি এক হাজার টাকা লাগে। বন বিভাগের ভ্রমণ ফি ছাড়াও অন্যান্য খরচের মধ্যে রয়েছে প্রতিদিন গাইডের জন্য ফি ৫০০ টাকা, নিরাপত্তা গার্ডদের জন্য ফি ৩০০ টাকা, লঞ্চের ক্রুর জন্য ফি ৭০ টাকা, টেলিকমিউনিকেশন ফি ২০০ টাকা। ভিডিও ক্যামেরা বাবদ দেশি পর্যটকদের ফি দিতে হয় ২০০ টাকা এবং বিদেশি পর্যটকদের ফি দিতে হয় ৩০০ টাকা। সুন্দরবনে রাস পূর্ণিমার সময় তীর্থযাত্রীদের ৩ দিনের জন্য জনপ্রতি ফি দিতে হয় ৫০ টাকা, নিবন্ধনকৃত ট্রলার ফি ২০০ টাকা, অনিবন্ধনকৃত ট্রলারের ফি ৮০০ টাকা এবং প্রতিদিন অবস্থানের জন্য ট্রলারের ফি ২০০ টাকা। কিভাবে যাবেন: সুন্দরবন ঘুরতে আসা পর্যটকদের কাছে কচিখালী সমুদ্র সৈকত নিয়ে বিশেষ আগ্রহ লক্ষ করা যায়। আর লঞ্চ হচ্ছে কচিখালী যাওয়ার প্রধান বাহন। কটকা সমুদ্র সৈকত থেকে সোজা পুর্ব দিকে কচিখালি সমুদ্র সৈকতের অবস্থান। তাই কচিখালি সমুদ্র সৈকত যাওয়ার জন্য কটকা হয়ে যাওয়া সব চেয়ে সুবিধাজনক। একা কিংবা ৫-৬ জনের ছোট্ট গ্রুপের জন্য কচিখালি সমুদ্র সৈকত ঘুরতে যেতে অনেক বেশি খরচ হয়। এক্ষেত্রে সুন্দরবনে পরিচালিত বিভিন্ন ট্যুর এজেন্সির প্যাকেজ নিতে পারেন। ট্যুর ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ভ্রমণ, এভারগ্রীণ ট্রাভেল বাংলাদেশ, ট্রাভেল ডায়রী, সুন্দরবন ট্যুর বাংলাদেশ, ট্যুর ডট কম ডট বিড়ি ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। যদি কোন ট্যুর অপারেটরের সাহায্য ছাড়াই নিজেরা সুন্দরবন ঘুরে আসতে চান তবে ঢাকার গাবতলী অথবা সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে মেঘনা পরিবহন (০১৭১৭-৩৮৮৫৫৩), পর্যটক পরিবহন (০১৭১১-১৩১০৭৮), সাকুরা পরিবহন (০১৭১১-০১০৪৫০) কিংবা সোহাগ পরিবহন (০১৭১৮-৬৭৯৩০২) এর বাসে বাগেরহাট চলে আসুন। চাইলে কমলাপুর থেকে ট্রেনের মাধ্যমে খুলনা আসতে পারেন। খুলনা থেকে রুপসা কিংবা বাগেরহাটের মংলা বন্দর হতে সুন্দরবন যাওয়ার লঞ্চ পাওয়া যায়। এছাড়া বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা থেকেও সুন্দরবন যাওয়ার বিভিন্ন নৌযান ভাড়া করতে পারবেন। কোথায় থাকবেন: অধিকাংশ পর্যটকেরা কটকা-কচিখালীতে রাত্রিযাপন করে থাকেন। অনেকে আবার রাতে থাকার জন্য টুরিস্ট ভেসেল বা নৌযানকে বেছে নেন। সুন্দরবনের অভয়ারন্যে হিরণ পয়েন্টের নীলকমলে বন বিভাগের রেস্ট হাউজ, টাইগার পয়েন্টের কচিখালী ও কটকায় বন বিভাগের রেস্ট হাউজ, মংলায় পর্যটন কর্পোরেশন হোটেলে ও পশুর বন্দরে থাকার ব্যবস্থা আছে। সেক্ষেত্রে আগে থেকেই বন বিভাগের সাথে যোগাযোগ করে বুকিং দিয়ে রাখতে হবে। এছাড়া সাতক্ষীরার শ্যামনগরে কয়েকটি সাধারন মানের আবাসিক হোটেল ও রেস্ট হাউজ আছে। কোথায় খাবেন: ট্যুর অপারেটদের প্যাকেজের মধ্যে খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা থাকে তাই এই বেপারে চিন্তিত হওয়ার কারণ নেই। তবে বন বিভাগের রেস্ট হাউজে পূর্ব যোগাযোগের ভিত্তিতে খাওয়ার ব্যবস্থা করতে পারবেন। কচিখালী সমুদ্র সৈকত ভ্রমণের সতর্কতা: ১. কচিখালীর ঢেউ সবসময়ই পরিবর্তনশীল এবং সৈকতে চোরাবালি রয়েছে। তাই সাগরে নামা থেকে বিরত থাকুন। ২. বন ঘেঁষা খালের পানিতে কুমীর থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। সুতরাং এই ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। ৩. বন বিভাগের ব্যবস্থাপনায় উপযুক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিয়ে বনের প্রবেশ করুন। ৪. বনের মধ্য দিয়ে চলার সময় সাপ কিংবা বাঘের বেপারে সতর্ক থেকে চলাফেরা করুন। ৫. টুরিস্ট গাইডের দেখানো পথ ছাড়া নিজেদের ইচ্ছামত চলাচল করবেন না। ৬. বনে ভ্রমণের ক্ষেত্রে উজ্জল রঙের পোশাক এড়িয়ে চলুন। ৭. সন্ধ্যার হবার আগে নিরাপদ স্থানে ফিরে যান। একুশে সংবাদ//ভ.গ.ন//২৫.১১.২০১৯
Link copied!