সচেতন থাকলে সারভাইকাল ক্যান্সার থেকে মুক্তি পাওয়া যায়
একুশে সংবাদ: সারভাইকাল ক্যান্সারে আক্রান্ত নারীদের সংখ্যা হুহু করে বেড়েই চলেছে।এর কারন হিসেবে নারীদের নিজেদের শরীর-স্বাস্থ্য নিয়ে একেবারেই অসচেতনতাই উঠে এসেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ক্যান্সার সংক্রান্ত সমীক্ষায় উন্নত দেশের নাগরিকরা সচেতন ও উন্নত জীবনযাপনের কারনে নিরাপদ থাকলেও সচেতনতার অভাব এখনো রয়েই গেছে।
তবে উন্নত দেশে সারভাইকাল ক্যান্সার সনাক্ত করার জন্য নারীরা ‘পেপস স্মেয়ার টেস্ট’ করালেও আমাদের দেশে সামাজিক ও পারিবারিক নানা কারণে এই পরীক্ষা করাতে কুণ্ঠাবোধ করেন অনেকেই।
চলুন জেনে নেয়া যাক সারভাইকাল ক্যান্সারের কারণ গুলো:
হিউম্যান পেপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি)-এর আক্রমণে এই অসুখ দানা বাঁধে শরীরে। তবে এই ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করা ছাড়াও সারভাইকাল ক্যান্সারের আরেকটি প্রধান কারণ অসুরক্ষিত যৌন সম্পর্ক। ২০ বছরের কম বয়সীদের এই রোগ সাধারণত হয় না। সাধারণত ৩৮ থেকে ৪২ বছর বয়সীরা এই রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন।
বয়স ৬০ পার হলেও এই রোগ হতে পারে তবে এদের সংখ্যা তুলনামূলক কম। দীর্ঘ দিন ধরে এই ধরনের সম্পর্কের ফলে জরায়ু-মুখের কোষগুলো পরিবর্তিত হতে থাকে।আর এই পরিবর্তনই ক্যান্সার ডেকে আনে।
এছাড়া এইচপিভি হানা দিলে এর কোনো বাহ্যিক চিহ্ন থাকে না। সাধারণত শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দেড় থেকে দু’বছরের মধ্যেই এই ভাইরাস থেকে শরীরকে মুক্ত করে। কিন্তু কোনোভাবে তা না করতে পারলে ক্যান্সারের শিকার হতে হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বয়স ১০ পার হলেই এই রোগ প্রতিহত করার টিকা নেওয়া যায়। এই অসুখ গোপন না করে বরং ধরা পড়ার পরই উপযুক্ত চিকিৎসা শুরু করা প্রয়োজন। নিয়ম মেনে চিকিৎসা করালে যেমন জরায়ু-মুখ ক্যান্সার সেরেও যায়, তেমনই দেরি করলে বা রোগ চেপে রাখলে তা প্রাণও যায়।
চিকিৎসকদের মতে, এ ধরনের ক্যান্সারের বেশ কিছু লক্ষণ দেখেও এ নিয়ে সচেতন হওয়া যায়।
লক্ষণ: এই ক্যান্সারের জন্য নির্দিষ্ট কোনো অঞ্চল সীমাবদ্ধ নয়। বরং জরায়ুর যে কোনো অংশেই এই ক্যান্সারের আক্রমণ লক্ষ করা যায়। সাদা বা দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব, অনিয়মিত পিরিয়ড, মেনোপজের পরেও হঠাৎ করেই রক্তপাত, তলপেটে বা কোমরে ব্যথা, ইত্যাদি সামনে এলেই সচেতন হতে হবে।
এই রোগের জন্য কিছু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।সেগুলো হলো:
১.সঙ্গীর একাধিক যৌনসঙ্গী আছে কি না বা সঙ্গী কোনো প্রকার যৌনরোগে আক্রান্ত কি না, সেটা জানতে হবে।
২.অধিক বা ঘন ঘন সন্তান প্রসবে রাশ টানতে হবে অবশ্যই।
৩.গর্ভনিরোধক ওষুধ খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।ইচ্ছা মতো ওষুধ নেবেন না।
৪.ধূমপান ছেড়ে দিতে হবে একেবারেই। এমনকি পরোক্ষ ধূমপানেও টানতে হবে রাশ।
৫.পলিসিস্টিক ওভারি থাকলে তেল-মশলা এড়িয়ে খাওয়াদাওয়া করুন, সুস্থ জীবনযাপনে অভ্যস্ত হন।
৬.পিরিয়ড চলাকালীন অতিরিক্ত রক্তপাত, অস্বাভাবিক ব্যথা হলে সচেতন হোন।
৭.কন্যা সন্তানের বিয়ে ১৮ বছরের আগে নয়।
৮.বাড়াবাড়ি রকমের পলিসিস্টিক ওভারি, বন্ধ্যাত্ব এ সব থাকলে সচেতন হোন।
৯.সুষম আহার, ভিটামিন এ, সি সমৃদ্ধ ফল, শাকসব্জি, খাওয়ার পরিমাণ বাড়াতে হবে।
১০.পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন, স্বাস্থ্যসম্মত, সুশৃঙ্খল জীবন যাপনে জোর দিতে হবে।
একুশে সংবাদ//ক.ক.ন//১৯.১০.২০১৯
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :