AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

নড়াইলে মাসে ২ কোটি ৫০ লক্ষ টাকার ডাব কেনাবেচা


Ekushey Sangbad

১২:২২ পিএম, এপ্রিল ২১, ২০১৮
নড়াইলে মাসে ২ কোটি ৫০ লক্ষ টাকার ডাব কেনাবেচা

নড়াইল জেলা প্রতিনিধি : নড়াইলে প্রতিমাসে ২ কোটি ৫০ লক্ষ টাকার ডাব কেনাবেচা হচ্ছে। এর মধ্যে জেলা থেকে প্রতিমাসে অন্তত ২ কোটি টাকার ডাব যাচ্ছে রাজধানি ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায়। আর ৫০ লক্ষ টাকার ডাব বিক্রি হচ্ছে স্থানীয়দের কাছে। জেলায় ছোট-বড় প্রায় ৫শ ডাব ব্যবসায়ী এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। বসত ভিটাসহ বিভিন্ন উচু জমিতে লাগানো এসব নারিকেল গাছ থেকে ডাব বিক্রি করে অনেক কৃষকের সংসারে এসেছে সচ্ছলতা।   আর অন্তত ৫শ মৌশুম ব্যাবসায়ীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। জানা গেছে, জেলায় কোথাও বানিজ্যিক ভিত্তিতে এই চাষ হয়না। বসত বাড়িতে, পতিত জমিতে, উচু জমিতে, ঘেরের পাড়সহ বিভিন্ন জমিতে লাগানো গাছ থেকে উৎপাদিত ডাবই স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এখন যাচ্ছে বিভিন্ন জেলায়।   জেলার কালিয়া উপজেলার জাহাঙ্গির এই ব্যাবসা করেন ২১ বছর যাবৎ। সম্প্রতি কথা হয় তার সাথে। তিনি জানান, সামান্য পুজি নিয়ে এই ব্যবসা শুরু করেছিলেন তিনি। তখন এলাকা থেকে তিনি নিজে ডাব কিনে মধুমতী নদী পথে ট্রলারে করে খুলনা সহ আশেপাশের জেলাতে বিক্রি করতেন। দিনে দিনে ব্যাবসায়ের পরিধি বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন তিনি প্রতিদিন অন্তত এক ট্রাক করে ডাব ঢাকা, চিটাগাংসহ বিভিন্ন বড় বড় জেলায় পাঠান। এই ব্যাবসায়ীর ম্যানেজার মোঃ আসলাম জানান, উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে তাদের ৫৬ জন ক্ষুদ্র ব্যাবসায়ী আছে। প্রতিটা ক্ষুদ্র ব্যাবসায়ীর কাছে ৫ থেকে ২০ হাজার করে টাকা দেওয়া রয়েছে। এই ছোট ব্যাবসায়ীরা প্রতিদিন এলাকাতে ঘুরে ঘুরে গৃহস্থের বাড়ির গাছ থেকে ডাব কিনে তারা নিজেরা সেই ডাব গাছ থেকে সংগ্রহ করে নিয়ে আসে।   ব্যাবসায়ীরা জানান, গাছ থেকে সংগ্রহ করা ডাব তিনটি গ্রেডে ভাগ করা হয়। ক্ষুদ্র ব্যাবসায়ীরা স্থানীয়দের কাছ থেকে আকার ভেদে এই ডাব ক্রয় করে ১০টাকা ১১টাকা ও ১২ টাকা করে। স্থানীয় বড় ব্যাবসায়ীদের কাছে সেই ডাব তারা বিক্রি করে ১৭ থেকে ১৯ টাকা করে। বড় ব্যাবসায়ীরা এই ডাব ঢাকাসহ বড় শহরে নিয়ে পাইকারী বিক্রি করে ২৩ থেকে ২৫ টাকা পিস।   কালিয়া উপজেলার ছোট কালিয়া গ্রামের কৃষক মোঃ তমিজ মিয়া জানান, তার বসত বাড়িতে ৩২ টি নারিকেল গাছ আছে। প্রতিটা গাছ থেকে বছরে ৫০ থেকে ২শ টি ডাব বিক্রি করেন তিনি। আক্ষেপের সাথে তিনি বলেন কৃষকের কাছ থেকে যে দামে ডাব ক্রয় করেন তার থেকে তিন গুন দামে ব্যাবসায়ীরা ডাব বিক্রি করেন।   লোহাগড়া উপজেলার লাহুড়িয়া গ্রামের মোঃ তালেব মোল্লা জানান, তার ঘেরের পাড়ে শতাধিক নারিকেল গাছ রয়েছে। এই গাছ থেকে তিনি প্রতি বছর লক্ষাধিক টাকার ডাব বাড়ি থেকেই নগদ টাকায় বিক্রি করেন। বাড়ির পাশে উচু পতিত জমিতে তিনি আরও নারিকেল গাছ লাগাবেন বলে ভাবছেন তিনি।   ক্ষুদ্র ব্যাবসায়ী মিঠুন কুমার বলেন, বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ঘুরে কৃষকদের বাড়ি থেকে প্রতিদিন তিনি ১শ থেকে ২৫০টি পর্যন্ত ডাব ক্রয় করে সেই ডাব গাছ থেকে সংগ্রহ করে প্রতিদিনই বড় ব্যাবসায়ীদের কাছে বিক্রয় করেন। দিনে তার ৫শ থেকে ১৫শ টাকা পর্যন্ত লাভ হয়। খুলনা জেলার তেরখাদা উপজেলার ফিলপা নগর গ্রামের ধলু মোল্লা ৬-৭ বছর যাবৎ ডাবের ব্যাবসা করেন।   নড়াইল জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ডাব ক্রয় করে তিনি বিভিন্ন জেলাতে পাইকারী বিক্রয় করেন। প্রতি সপ্তাহে তিনি ২ থেকে ৩ ট্রাক ডাব বিভিন্ন জেলায় পাঠায়। তিনি বলেন একটি ট্রাকে ৫-৯ হাজার ডাব পরিবহন করা যায়।   নড়াইল থেকে এক ট্রাক ডাব ঢাকায় নিতে পরিবহন খরচ দিতে হয় ১৪-১৭ হাজার টাকা। পথে অন্তত ২০-২৫টি স্থানে ১০-১শ টাকা পর্যন্ত চাঁদা দিতে হয়। আর এক ব্যাবসায়ী বুলবুল জানান, প্রতিদিন জেলার তিনটি উপজেলা থেকে ৫-৬ ট্রাক ডাব বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়। একটি ট্রাকে ১লক্ষ ২০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকার ডাব থাকে। দিনে ৭-৮ লক্ষ টাকার ডাব বিভিন্ন জেলায় রপ্তানী করা হয়। আর মাসে অন্তত ২ কোটি টাকার ডাব রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হচ্ছে বলে তিনি জানান। লোহাগড়া উপজেলার ডাব ব্যাবসায়ী আকিদুল জানান, বছরের প্রায় ১২ মাসই তারা বিভিন্ন জেলায় ডাব পাঠায়। তবে শীতের তিন মাস এই ডাবের চাহিদা কম থাকে। বছরের ৯ মাস ডাবের প্রচুর হাহিদা থাকে বলে জানান ব্যাবসায়ীরা। এদিকে নড়াইল শহরে বিভিন্ন স্থানে অন্তত ৩০ জন ক্ষুদ্র ব্যাবসায়ী ভ্যানে করে স্থানীয়দের কাছে ডাব বিক্রি করেন। বিভিন্ন সুত্রে জানাগেছে, জেলায় বিভিন্ন হাটে-বাজারে এরকম অন্তত শতাধিক ক্ষুদ্র ডাব ব্যাবসায়ী রয়েছে। যারা প্রতিদিন এই ব্যাবসা করেই সংসার চালায়। ক্ষুদ্র ব্যাবসায়ী নজরুল ইসলাম জানান, তার মত প্রতিটি ব্যাবসায়ী দিনে ৮০ থেকে ১৫০টি পর্যন্ত ডাব বিক্রয় করেন। আকার ভেদে প্রতিটি ডাব ২০-৩০টাকা দরে বিক্রি করেন তারা। ব্যাবসায়ীরা জানান শতাধিক ভ্রাম্যমান ডাব ব্যাবসায়ী দিনে অন্তত ১০ হাজার ডাব বিক্রি করেন স্থানীয়দের কাছে। যার বাজার মূল্য অন্তত ২ লক্ষ টাকা । আর মাসে অন্তত ৬০ লক্ষ টাকারও বেশি। জেলার সিভিল সার্জন মুন্সি আসাদুজ্জামান দীপু নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া ক্লাবের সভাপতি উজ্জ্বল রায়কে জানান, ডাবে প্রচুর পটাসিয়াম থাকে এছাড়া ডাবের পানির অসংখ্য গুনাগুন রয়েছে যা মানুষের শরীরের জন্য খুবই উপকারী।   শিশুসহ সকল মানুষের পরিমানমত ডাবের পানি পান করা উচিত। তবে খালি পেটে ডাবের পানি পান না করে কিছু খাওয়ার পর এই পানি পান করার পরামর্শ দেন জেলার সাস্থ্যবিভাগের এই সর্বোচ্চ কর্মকর্তা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নড়াইলের উপ-পরিচালক চিন্ময় রায় নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া ক্লাবের সভাপতি উজ্জ্বল রায় ও মোঃ ইমরান হোসেনকে জানান, পূর্ব থেকে জেলায় প্রচুর নারিকেল গাছ রয়েছে।   এই জেলায় নারিকেলের ফলন খুব ভাল। আমরা কৃষিবিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদেরকে পরামর্শ প্রদানসহ বিভিন্ন সহযোগিতা করে আসছি । নারিকেল গাছের উপর আমাদের আলাদা প্রোগ্রাম রয়েছে। প্রতিবছরই কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে ও স্বল্পমূল্যে উন্নত জাতের নারিকেল চারা বিতরন করা হয়।এবছরও বর্ষা মৌসুমে কৃষকদের মাঝে এই চারা বিতরন করা হবে।     একুশে সংবাদ // এস .উজ্জল // ২১.০৪.২০১৮
Link copied!