রমজানকে ঘিরে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি
একুশে সংবাদ : একদিন পরই রোজা। তাই রমজানকে ঘিরে বাজার সারতে ব্যস্ত নগরবাসী। তবে রোজাকে কেন্দ্র করে প্রতিবারের মতো এবারও বাড়তে শুরু করেছে নিত্যপণ্যের দাম। শুক্রবার সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজার, নিউমার্কেট, হাতিরপুলসহ বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে এ চিত্র উঠে এসেছে।
আসন্ন রমজান মাসকে কেন্দ্র করে কয়েক সপ্তাহ ধরে অস্থির হয়ে উঠেছে নিত্যপণ্যের বাজার। তবে চোখে পড়ার মতো বেড়েছে রমজান পণ্যের দাম। রমজানের বহুল ব্যবহৃত ছোলা, চিনি, খেজুর, ভোজ্য তেলসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম হঠাৎ বাড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রেতা সাধারণ। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভিন্ন কথা। রমজান নয়, আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম বৃদ্ধিকে দায়ী করছেন তারা।
রাজধানী ঘুরে দেখা যায়, ৬৫ টাকা কেজি দরের চিনি এখন বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকায়, ৭৫ টাকার ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৮৫ থেকে ৯০ টাকায়। একইভাবে বিভিন্ন ডালের দামও বেড়েছে কেজিপ্রতি পাঁচ থেকে ১০ টাকা হারে। খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকা ও বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১০৫ টাকা। এক মাস আগে বোতলজাত সয়াবিনের সর্বোচ্চ দাম ছিল ১০০ টাকা। এছাড়া, পেঁয়াজ ও রসুনের দাম বেড়ে যথাক্রমে ২৫ থেকে ৩২ ও ১৫০ থেকে ২২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মুড়ি ৬০-৮০ টাকা থেকে বেড়ে ৭০-১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
রমজানে আরো একটি সার্বজনীন ব্যবহৃত পণ্য খেজুর। মানভেদে প্রতি কেজি খেজুর বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৫০ টাকায়। বর্তমানে যেসব খেজুর ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, মাসখানেক আগেও এগুলোর দাম ছিল ১০০ টাকার নিচে। দাপাশ, মরিময়, সাফাদি, আজুয়া প্রভৃতি প্রজাতি খেজুরের দাম সবচেয়ে বেশি বাড়তে দেখা গেছে।
একইভাবে চলতি সপ্তাহে বাজারে বিভিন্ন সবজির দাম পাঁচ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বাড়তে দেখা গেছে। এ সপ্তাহে বেগুন ৫০ থেকে ৭০ টাকা, ধুন্দল, চিচিঙ্গা, ঢেঁড়স, করলা ও ঝিঙে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ফালিপ্রতি ২০ থেকে ২৫ টাকা, কচুর লতি জাতভেদে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, শসা ৫০ টাকা, প্রতি পিস লাউ ও চালকুমড়া ৩০ থেকে ৪০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
এছাড়া, বাজারে লালশাক, পু্ঁইশাক, কলমিশাক, পালংশাক, কুমড়াশাক ও লাউশাক পাওয়া যাচ্ছে। তবে শাকের আঁটি আগের দামেই সাইজভেদে ১০ থেকে ১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আলুও আগের মতো ১৮ থেকে ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
একইভাবে আগের দামে বিক্রি হচ্ছে চাল। মিনিকেট চাল ৫৮ থেকে ৬০ টাকা, নাজিরশাইল ৫৫ থেকে ৫৬ টাকা, স্বর্ণা ৪৪ থেকে ৪৫ টাকা, ইরি আটাশ ৪৮ থেকে ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
মাংসের দামও একই রয়েছে। গরুর মাংস ৫০০ থেকে ৫২০ টাকা, খাসির মাংস ৭২০ থেকে ৭৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া, ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ থেকে ১৫৫ টাকা, লেয়ার ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, দেশি মুরগি ৩৫০ থেকে ৩৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
দাম বৃদ্ধির বিষয়ে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, এক মাসের ব্যবধানে বিভিন্ন পণ্যের দাম যথেষ্ট হারে বেড়েছে ঠিকই, তবে কোনো সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দাম বড়ানো হয়নি। আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধির কারণে স্থানীয় বাজারে এর প্রভাব পড়েছে বলে দাবি করেছেন তারা।
তবে ক্রেতাদের অভিযোগ, রাজধানীর শ্যামবাজার, কারওয়ান বাজারসহ বিভিন্ন পাইকারী বাজারের অসাধু ব্যবসায়ীরা অধিক মুনাফার আশায় বিশাল মজুদ গড়ে তুলেছেন। একই সাথে দাম বাড়ার কারণ হিসেবে বাজার মনিটরিংয়ের অভাবকেও দায়ী করছেন তারা।
সূত্রমতে, আসন্ন রমজানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ছাড়াও বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদফতর, ঢাকা (উত্তর ও দক্ষিণ) সিটি করপোরেশনের চার-পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একাধিক মনিটরিং কমিটি গঠনের কথা রয়েছে। বাজারমূল্য স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল ও ফরমালিনমুক্ত রাখতে ব্যবসায়ী এবং ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের যথাযথ দায়িত্ব পালনেরও নির্দেশনা রয়েছে।
একুশে সংবাদ // পপি // বিবা // ২৬.০৫.১৭
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :