বজ্রপাত থেকে নিরাপদ থাকতে করণীয়
একুশে সংবাদ :বাংলাদেশ একটি দুর্যোগপ্রবণ দেশ। বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, ভূমিকম্প, নদীভাঙন, টর্নেডো, অগ্নিকা-, খরা ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে সম্প্রতিককালে নতুন করে যোগ হয়েছে ‘বজ্রপাত’। ২০১৬ সালে দেশে মাত্র ৪ দিনের বজ্রপাতে ৮১ জনের প্রাণহানি হয়েছে। এ বিবেচনায় ইতোমধ্যেই বজ্রপাতকে দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
দেশের জনগণকে বজ্রপাতের ঝুঁকি থেকে রক্ষা করতে বহুল প্রচার প্রয়োজন। এ বিবেচনায় দেশের সকল ইলেক্ট্রনিক, অনলাইন ও প্রিন্ট মিডিয়ার মাধ্যমে জনগণকে সচেতন করে তুললে দেশের জনগণের বজ্রপাতে মৃত্যু ঝুঁকি হ্রাসসহ সম্পদের ক্ষয়-ক্ষতি রোধ করা সম্ভব হবে।
এমতাবস্থায় বজ্রপাত থেকে নিরাপদ থাকতে নিম্নবর্ণিত করণীয়সমূহ জনস্বার্থে বহুল প্রচারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে অনুরোধ করা হয়েছে :
*বজ্রঝড় সাধারণত ৩০-৪৫ মিনিট স্থায়ী হয়। এ সময়টুকু ঘরে অবস্থান করুন।
*গভীর ও উলম্ব মেঘ দেখা দিলে ঘরের বাইরে বের না হওয়াই উত্তম; অতি জরুরি প্রয়োজনে রাবারের জুতা পরে বাইরে যান।
*উঁচু গাছপালা, বৈদ্যুতিক খুঁটি ও তার, ধাতব খুঁটি, মোবাইল টাওয়ার ইত্যাদি থেকে দুরে থাকুন।
*এ সময় নদী, পুকুর, ডোবা বা জলাশয় থেকে দূরে থাকুন।
*বজ্রপাতের সময় খোলা জায়গা বা মাঠ অথবা উঁচু স্থানে থাকবেন না।
*ধানক্ষেতে বা খোলা মাঠে থাকলে তাড়াতাড়ি পায়ের আঙ্গুলের ওপর ভর দিয়ে এবং কানে আঙ্গুল দিয়ে মাথা নিচু করে বসে পড়–ন।
*বজ্রপাতের আশঙ্কা হলে যত দ্রুত সম্ভব দালান বা কংক্রিটের ছাউনির নিচে আশ্রয় নিন।
*বজ্রপাতের সম্ভাবনা দেখা দিলে টিনের চালা যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন।
*বজ্রপাতের সময় গাড়ির ভেতর অবস্থান করলে গাড়ির ধাতব অংশের সাথে শরীরের সংযোগ রাখবেন না। সম্ভব না হলে কোন কংক্রিটের ছাউনির নিচে আশ্রয় নিন।
*বজ্রপাত চলাকালে বাড়িতে থাকলে জানালার কাছাকাছি ও বারান্দায় থাকবেন না। জানালা বন্ধ রাখুন এবং ঘরের ভিতরে বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম থেকে দূরে থাকুন।
*বজ্রপাতের সময় ধাতব হাতলযুক্ত ছাতা ব্যবহার করবেন না। জরুরি প্রয়োজনে প্লাস্টিক বা কাঠের হাতলযুক্ত ছাতা ব্যবহার করুন।
*বজ্রপাতের সময় শিশুদের খোলা মাঠে খেলাধুলা থেকে বিরত রাখুন।
*বজ্রপাতের সময় সমুদ্র বা নদীতে থাকলে মাছ ধরা বন্ধ রেখে নৌকার ছাউনির নিচে অবস্থান করুন।
*বজ্রপাত ও ঝড়ের সময় টিউব ওয়েল, রেলিং, পাইপ ইত্যাদি স্পর্শ করবেন না।
*প্রতিটি বিল্ডিংয়ে বজ্রপাত নিরোধক দন্ড স্থাপন নিশ্চিত করুন।
*খোলাস্থানে অনেকে একত্রে থাকাকালীন বজ্রপাত শুরু হলে একত্রে না থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে অবস্থান করুন।
*কোন বাড়িতে যদি পর্যাপ্ত বজ্রপাত নিরোধক ও নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা না থাকে তাহলে সবাই এক কক্ষে না থেকে আলাদা আলাদা কক্ষে অবস্থান করুন।
*বজ্রপাতের সময় মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, টিভি, ফ্রিজসহ বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির সুইচ বন্ধ রাখুন এবং বজ্রপাতের আভাস পেলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাখুন।
*বজ্রপাতে কেউ আহত হলে বৈদ্যুতিক শকে আক্রান্তদের মতো দ্রুত চিকিৎসা করতে হবে, প্রয়োজনে দ্রুত চিকিৎসককে ডাকুন বা হাসপাতালে নিয়ে যান।
*বজ্রপাতে আহত ব্যক্তির শ্বাস-প্রশ্বাস ও হৃদস্পন্দন ফিরিয়ে আনার চেষ্টা অব্যাহতভাবে চালিয়ে যান, প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।
একুশে সংবাদ //পরীক্ষিৎ/মাহমুদ/সঞ্জীব/রেজাউল//২৮.০৩.২০১৭
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :