ইসির সামনে পরীক্ষা
একুশে সংবাদ : দায়িত্ব নেওয়ার পর নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) নিরপেক্ষতার সঙ্গে কাজ করে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। নবগঠিত ইসির সামনে জনগণের আস্থা অর্জনই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দেবে। এ মাসেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন। কয়েকটি উপনির্বাচনও সামনে রয়েছে। এসব নির্বাচনে সততা ও নিরপেক্ষতার পরিচয় দিয়ে জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে ইসিকে। নির্বাচন কমিশন নিয়ে জনমনে কোনো নেতিবাচক ধারণা থাকলে তা পাল্টে দিতে হবে নতুন কমিশনকে। মানুষের বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে পারলে সেটা হবে অনেক বড় কাজ। তাতে নতুন করে কোনো বিতর্কের অবকাশ থাকবে না। অতীতে অনেক নির্বাচন কমিশনই বিতর্কিত হয়েছে। অনেক নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে সদিচ্ছার পরিচয় দিতে পারেনি। রাজনৈতিক চাপের কাছে নতি স্বীকার করেছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
স্বাভাবিকভাবেই যেকোনো নির্বাচন কমিশন গঠনের আগেই গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। নির্বাচন কমিশন, বিশেষ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়ে শুরুতে আপত্তি জানালেও দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি নির্বাচন কমিশনকে মেনে নিয়েছে বলেই ধরে নেওয়া যায়। দলটি এখন নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা নিয়ে জনগণের কাছে আসতে চাইছে। শুধু নির্বাচন কমিশনের সদিচ্ছা নয়, নির্বাচনকালীন সরকারের ভূমিকাও সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
নতুন নির্বাচন কমিশনকে তাদের কাজের ভেতর দিয়ে জনগণের আস্থা অর্জন করে তা ধরে রাখতে হবে। সে ক্ষেত্রে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব বিশ্বস্ততার সঙ্গে পালন করতে হবে। বর্তমান ইসির প্রধান কাজ হওয়া উচিত অতীতের কমিশনগুলোর কর্মকাণ্ড মূল্যায়ন করা। নিজেদের সীমাবদ্ধতা বিবেচনায় রেখে আগের কমিশনগুলোর ব্যর্থতা চিহ্নিত করে করণীয় ঠিক করা গেলে নির্বাচন কমিশনের সামনে কোনো সমস্যা থাকার কথা নয়। আস্থা অর্জনের জন্য অংশীজনদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে হবে। আলোচনার ভেতর দিয়ে সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করা গেলে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে কোনো সমস্যা থাকার কথা নয়। নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের পর্যালোচনায় যেসব সমস্যার কথা উল্লেখ করা হয় সেগুলো বিবেচনায় নিয়ে আন্তরিকতার সঙ্গে সমাধানের চেষ্টা করলে নির্বাচন কমিশন বিতর্কের ঊর্ধ্বে থাকবে।
নির্বাচন কমিশনের প্রতি মানুষের প্রত্যাশা অনেক। তাই পান থেকে চুন খসলেই মানুষ নির্বাচন কমিশনের সমালোচনায় সরব হয়ে ওঠে। মানুষের সব সমালোচনা ইতিবাচকভাবে নিতে হবে। সময়ে সময়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে, যোগাযোগ বাড়াতে হবে। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার নেতৃত্বাধীন নতুন নির্বাচন কমিশন সততা, নিরপেক্ষতা ও দক্ষতা প্রমাণে সচেষ্ট হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
একুশে সংবাদ // পপি // কাক // ০৪.০৩.১৭
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :