AB Bank
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

সাগরে ইলিশ উৎপাদনে ১৮ বছরের রেকর্ড


Ekushey Sangbad

১১:০৩ এএম, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১৭
সাগরে ইলিশ উৎপাদনে ১৮ বছরের রেকর্ড

একুশে সংবাদ : বঙ্গোপসাগরে ইলিশ উৎপাদন বাড়ছে। চলতি বছর ইলিশ আহরণের লক্ষ্যমাত্রা শুধু ছাড়িয়েই যায়নি, গত ১৮ বছরের রেকর্ডও ভঙ্গ করেছে। গত বছরের তুলনায় এ খাতে প্রায় ১৫ ভাগ প্রবৃদ্ধি ঘটেছে। সমুদ্রসীমা বিজয়ের পর সমুদ্র সম্পর্কিত অর্থনীতি বা ব্লু ইকোনমি জোরদারের লক্ষ্যে সরকারের গৃহীত নানামুখী পদক্ষেপের কারণে বঙ্গোপসাগরে ইলিশ উৎপাদন বাড়ছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। সংশ্লিষ্টরা জানান, গত কয়েক বছর ধরেই দেশে ইলিশের উৎপাদন তিন থেকে চার লাখ মেট্রিকটনের মধ্যে ওঠানামা করছে। এর মধ্যে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ইলিশের উৎপাদন ছিল তিন লাখ ৮৫ হাজার মেট্রিকটন। তবে ইলিশের গড় উৎপাদন ধরা হয় সাড়ে ৩ লাখ মেট্রিকটন। কিন্তু চলতি বছর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল চার লাখ মেট্রিকটন। এই লক্ষ্যমাত্রা ইতোমধ্যে অর্জিত হয়েছে বলে জানান মৎস্য আহরণকারী ও বিপণনকারীসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের কর্তারা। তাদের ধারণা, এ বছর দেশে ইলিশের উৎপাদন সাড়ে চার লাখ মেট্রিকটন ছাড়িয়ে যাবে। চলতি মৌসুমের আগে সর্বশেষ ১৯৯৮ সালে দেশে প্রচুর পরিমাণে ইলিশ ধরা পড়েছিল বলে জানান মৎস্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞানীরা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, বিশ্বে প্রতি বছর পাঁচ লাখ মেট্রিকটন ইলিশ আহরিত হয়। এর ৬০ শতাংশই বাংলাদেশে। বিশ্লেষকদের ধারণা, চলতি বছরে ইলিশের বাণিজ্য ৩০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। বিজ্ঞানীদের মতে, ইলিশের বিচরণক্ষেত্র ব্যাপক এবং এদের সাধারণত সমুদ্র, মোহনা ও নদীতে দেখা যায়। ইলিশের বিচরণক্ষেত্র বঙ্গোপসাগর থেকে পারস্য উপসাগর, লোহিত সাগর, আরব সাগর, ভিয়েতনাম ও চীন সাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। শাতিল আরব, ইরান ও ইরাকের ইউফ্রেটিস ও টাইগ্রিস, পাকিস্তানের সিন্ধু, ভারতের পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলীয় নদীসমূহ, মিয়ানমারের ইরাবতী এবং বাংলাদেশের উপকূলীয় বিভিন্ন নদীসহ পদ্মা, যমুনা, মেঘনা ও কর্ণফুলী নদী ইলিশের আবাসস্থল। বাংলাদেশে মোট মৎস্য উৎপাদনে এককভাবে ইলিশের অবদানই প্রায় ১৩ শতাংশ। আর মোট দেশজ উৎপাদনেও (জিডিপি) এ খাতের অবদান ১ দশমিক ১৫ শতাংশ। এই খাতে আরো অনেক সম্ভাবনা দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। বর্তমানে বিশ্বে ইলিশের নতুন বাজার তৈরির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এমনকি প্রতিবেশী দেশের শহর কলকাতার বাজারেও বাংলাদেশি ইলিশের জনপ্রিয়তা এখন শীর্ষে। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, আমাদের সমুদ্র তটরেখা ৭১০ কিলোমিটার দীর্ঘ। অর্থনৈতিক এলাকা ২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত বিস্তৃত। মোট সামুদ্রিক জলসম্পদের আয়তন ১৬৬ লাখ হেক্টর, যা দেশের মোট জলসম্পদের ৭৮.৩৯ শতাংশ। কিন্তু অতীতে আমাদের এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে কম। তবে ২০১১ সালে সমুদ্রসীমা বিজয়ের পর সমুদ্র সম্পর্কিত অর্থনীতি বা ব্লু ইকোনমি জোরদারের লক্ষ্যে সরকারের গৃহীত নানামুখী পদক্ষেপের কারণে বঙ্গোপসাগরে ইলিশ উৎপাদন বাড়ছে। কক্সবাজার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও মৎস্যবিজ্ঞানী ড. মঈনউদ্দিন আহমদ বলেন, সরকারের পরিকল্পিত কর্মসূচির কারণেই এ মৌসুমে ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে। ইলিশ মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার গত কয়েক বছর ধরে প্রজনন মৌসুমে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি, জাটকা ধরার বিরুদ্ধে অভিযানসহ নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। সরকারের এসব কর্মসূচি কক্সবাজারসহ অন্যান্য উপকূলীয় জেলাগুলোতে কঠোরভাবে পালিত হয়েছে। ফলে প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ সাগর ও নদী মোহনায় নির্বিঘ্নে ডিম ছাড়ার সুযোগ পেয়েছে। মূলত এ কারণে চলতি মৌসুমে ইলিশের উৎপাদন প্রায় ১৫ শতাংশ বেড়েছে। বিজ্ঞানীরা জানান, ইলিশ একটি উচ্চ উৎপাদনশীল প্রজাতির মাছ। বড় আকারের একটি ইলিশ ২০ লাখ পর্যন্ত ডিম পাড়তে পারে। ইলিশ সারা বছর ডিম পাড়লেও সবচেয়ে কম পাড়ে ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ মাসে। সবচেয়ে বেশি পাড়ে সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবরে। ইলিশ প্রজননের উদ্দেশ্যে স্বাদু পানির স্রোতের উজানে অগভীর পানিতে উঠে আসে এবং ডিম ছাড়ে। মুক্ত ভাসমান ডিম থেকে পোনা বের হওয়ার পর ধীরে ধীরে অপ্রাপ্তবয়স্ক মাছে (জাটকা) পরিণত হয়। এরপর নদীর ভাটিতে নেমে সমুদ্রে পৌঁছে বড় হয়। প্রাপ্তবয়স্ক ও প্রজননক্ষম হয়ে জীবনচক্র পূর্ণ করার জন্য আবার নদীতে বা সাগর মোহনায় ফিরে আসে। ইলিশ মূলত প্লাংকটনভোজী। নীল-সবুজ শৈবাল, ডায়াটম, ডেসমিড, কোপিপোড, রটিফার ইত্যাদিও খেয়ে থাকে। তবে এদের খাদ্যাভ্যাস বয়স ও ঋতুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীদের মতে, মূলত ইলিশের বংশবৃদ্ধি নির্বিঘ্ন করার চেষ্টা বা মাছের অভয়ারণ্য বাস্তবায়নের কারণেই এটি সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে বঙ্গোপসাগরে মা ইলিশ ও ডিম বাড়ছে এবং মাছও বাড়ছে। মৎস্য অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ২০০৯ সালে সাগর-নদী উপকূলীয় এলাকা চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, ভোলা ও পটুয়াখালীর ২১ উপজেলায় জাটকা নিধন বন্ধ, মা ইলিশ রক্ষা ও ইলিশের বংশবিস্তারের জন্য ব্যাপক প্রচারণা চালানো হয়। পরবর্তী সময়ে এ কর্মসূচি ছড়িয়ে দেয়া হয় দেশের ২৫ জেলায়। এর সুফলই এখন পাওয়া যাচ্ছে। বর্তমানে সারা দেশে ইলিশ মিলছে। আমাদের সামুদ্রিক এলাকায় রয়েছে ৪৭৫ প্রজাতির মাছ। এর মধ্যে কেবল ৬৫ প্রজাতির মাছ আহরণযোগ্য। তাছাড়া আছে ৩৬ প্রজাতির সামুদ্রিক চিংড়ি, ৩ প্রজাতির লবস্টার, ২৫ প্রজাতির কাছিম ও ১১ প্রজাতির কাঁকড়া। এর মধ্যে ইলিশ বাংলাদেশের উন্মুক্ত জলাশয়ের অতি গুরুত্বপূর্ণ ও এককভাবে সর্বাধিক সংগৃহীত মাছ। একুশে সংবাদ // পপি // বিবা // ০৭-০২-১৭
Link copied!